করোনার কারণে আয় বন্ধ, রাতের আঁধারে গ্রামে ছুটছেন অনেকেই

করোনার কারণে আয় বন্ধ, রাতের আঁধারে গ্রামে ছুটছেন অনেকেই

দিনের রাজধানীতে বাড়ছে ব্যস্ততা। গাড়ি ছুটছে, অফিস খুলছে। করোনার ভয় পাশ কাটিয়ে আপাতদৃষ্টিতে সব স্বাভাবিক মনে হলেও রাতের চিত্র তার উল্টো। স্বপ্ন ভাঙার কষ্ট বুকে চেপে রাজধানী ছাড়ছেন অসংখ্য মানুষ। এতদিনের চেনা শহর ছেড়ে আবারো ফেলে আসা গ্রামের পানে যাত্রা। পেছনে যে, ভয়, হতাশা আর অনিশ্চয়তা।

প্রতিটা রাতের আঁধার শেষ হয় একটা সুন্দর ভোরের প্রত্যাশায়। মহামারি করোনাভাইরাসের এই কঠিন সময় হয়তো একদিন চলে যাবে, কিন্তু দীর্ঘ বছরের যাপিত জীবন বা যাপিত অভ্যাস ছেড়ে আবার সবকিছু নতুন করে শুরুর করার গল্পের পেছনে যে দীর্ঘশ্বাস আর হতাশা লুকিয়ে আছে, তার খোঁজ পায় ক'জনা।

তখন মধ্যরাত, রাজধানীর হাতিরঝিল, পাগলা মাজার গলি। দীর্ঘ ৫০ বছরের সংসার তখন পিক-আপে তোলা প্রায় শেষ। মোহাম্মদ আলাল শরীফ শেষবারের মতো দেখে নিচ্ছেন সবকিছু। যে শহরে কেটেছে জীবনের এতগুলো বছর, ছেড়ে যাবার মুহূর্ত তাই ভীষণ বিষণ্ণতায় ঘেরা।

মহামারি করোনাভাইরাস জীবনে যার প্রভাব ভয়ংকরতম, কিন্তু জীবিকায় তার প্রভাব কম কীসে। করোনার ভয়াল থাবায় বিপর্যস্ত তাই মধ্যবিত্ত, নিম্ন মধ্যবিত্তরাও। প্রতিদিন, রাজধানী ছাড়ছেন অসংখ্য মানুষ। কেউ চাকরি হারিয়েছেন, কেউ বা বেতন পাচ্ছেন অর্ধেকেরও কম। তাই বাধ্য হয়েই অনিশ্চিত ভবিষ্যৎ জেনেও গ্রামে ছুটছেন অনেকেই।

প্রভাব পড়েছে, ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীদের জীবিকায়ও। দীর্ঘদিনেও পরিস্থিতি স্বাভাবিক না হওয়ায় গ্রামের পানে মানুষ।

ভাড়া দিতে না পারায় বাসা ছাড়ছেন ভাড়াটিয়ারা। তার প্রভাবও কী কম পড়ছে, যাদের ভাড়ার টাকায় সংসার চলে? মাসের পর মাস ঝুলছে বাসা ভাড়ার বিজ্ঞাপন। শুধু নেই ভাড়াটিয়া।

করোনা উত্তর পৃথিবী হয়তো আবারো সুন্দর হবে, হয়তো পুনরায় নতুন করে বাঁচবে মানুষ, জীবনের এই বেলায় হঠাৎ পাওয়া ধাক্কা সামলে একদিন ঠিকই ঘুরে দাঁড়াবেন সবাই। আশা করাই যায়, কারণ আশায় বাঁচে মানুষ।