দুই শিশুকে বাঁচাতে গিয়ে প্রাণ গেল বাবা-ছেলের

দুই শিশুকে বাঁচাতে গিয়ে প্রাণ গেল বাবা-ছেলের

বগুড়ার নন্দীগ্রামে মাছ চুরি ঠেকাতে পুকুরে দেয়া বিদ্যুতের তারে জড়িয়ে বাবা ও ছেলের মর্মান্তিক মৃত্যু হয়েছে।

শুক্রবার সকালে উপজেলার বুড়ইল ইউনিয়নের তুলাশন গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।

ঘটনার পর মাছচাষি শাহীন আলম বাড়িতে তালা দিয়ে পরিবার নিয়ে পালিয়ে গেছেন। ইউপি চেয়ারম্যান নূর মোহাম্মদ এর সত্যতা নিশ্চিত করেছেন।

মৃতরা হলেন– ওই গ্রামের মৃত জহির উদ্দিনের ছেলে দিনমজুর মোফাজ্জল হোসেন (৫৫) ও তার ছেলে দিনমজুর শরিফুল ইসলাম (২৬)।

পুলিশ ও এলাকাবাসী জানান, শাহীন আলম নামে এক মাছ ব্যবসায়ী তুলাশন গ্রামে সোয়া দুই একর আয়তনের বিরোধপূর্ণ পুকুরে মাছ চাষ করেন। মাঝে মাঝে পুকুর থেকে মাছ চুরি হয়। চুরি ঠেকাতে শাহীন আলম কাঁটাতারের মাধ্যমে রাতে পুকুরে বিদ্যুৎ সংযোগ দিয়ে রাখেন।

শুক্রবার সকাল ৯টার দিকে একই গ্রামের শিশু ওমর ফারুক (১০) ও সিনহা খাতুন (৮) পুকুরে রাখা নৌকায় উঠতে যায়। তখন তারা বিদ্যুতায়িত হয়ে পুকুর পাড়ে পড়ে যায়।

এ দৃশ্য দেখে মোফাজ্জল হোসেন ওই দুই শিশুকে বাঁচাতে এবং এর কারণ উদ্ঘাটনে পুকুরের পানিতে নেমে বিদ্যুতায়িত হন। এ সময় তার ছেলে শরিফুল ইসলাম ছুটে এসে পুকুরে নেমে বাবাকে উদ্ধারের চেষ্টা করলে তিনিও বিদ্যুতায়িত হন। পরে ঘটনাস্থলেই বাবা-ছেলের মর্মান্তিক মৃত্যু হয়। তবে ওই দুই শিশু সুস্থ রয়েছে।

গ্রামবাসী বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করার পর বাবা মোফাজ্জল হোসেন ও ছেলে শরিফুল ইসলামের মৃতদেহ উদ্ধার করেন।

ঘটনার পর পরই পুকুরের মালিক শাহীন আলম বাড়িতে তালা দিয়ে পরিবারের সদস্যদের নিয়ে পালিয়ে যান। বাবা-ছেলের মৃত্যুতে গ্রামবাসীদের মাঝে শোকের ছায়া নেমে এসেছে।

এ ঘটনার জন্য মাছ ব্যবসায়ী শাহীন আলমকে দায়ী করে তার শাস্তি দাবি করেছেন স্থানীয়রা।

নন্দীগ্রাম থানার ওসি শওকত কবির জানান, পুকুরে বিদ্যুতায়িত হয়ে মৃত বাবা ও ছেলের লাশ উদ্ধার করে বগুড়া শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে। মাছচাষি শাহীন আলম পালিয়ে গেছে। এ ব্যাপারে নিহতদের স্বজনরা থানায় মামলার প্রস্তুতি নিচ্ছেন।