মেদিনীপুর জনসভায় মোদি

দিদির দল নির্মমতার পাঠশালা

দিদির দল নির্মমতার পাঠশালা

মাত্র একদিনের ব্যবধানে পশ্চিমবঙ্গে ফের নির্বাচনি প্রচারে এসে পশ্চিম মেদিনীপুর ও ঝাড়গ্রামের জনসভায় মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি ও তার ভাইপো অভিষেককে কড়া ভাষায় আক্রমণ করলেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি।

শনিবার রেল শহর খড়গপুরের জনসভায় তিনি বলেন, ‘দিদির দল নির্মমতার পাঠশালা। সেই পাঠশালার সিলেবাস হচ্ছে তোলাবাজি, দিদির পাঠশালায় সিলেবাস কাটমানি, দিদির পাঠশালায় সিলেবাস সিন্ডিকেট। দিদির পাঠশালায় উৎপীড়ন এবং অরাজকতার প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়।’

মমতার ‘খেলা হবে’র পালটা স্লোগান তুলে ফের বাংলা উচ্চারণে মোদি বলেন, ‘খেলা শেষ হবে, উন্নয়ন শুরু হবে’। মোদির অভিযোগ, স্বাধীনতার পর ৭০ বছর পিছিয়ে গেছে বাংলা। আমাদের পাঁচ বছর দিন, ক্ষমতায় এলে ৭০ বছরের ক্ষতি পূরণ করে দেব। প্রতিশ্রুতি প্রধানমন্ত্রীর।

বাংলায় এবার পঞ্চায়েত ভোট অবাধ করার ডাক দেওয়ার পাশাপাশি বাংলার পুলিশ প্রশাসনকে গণতন্ত্র বাঁচানোর প্রতিজ্ঞা নেওয়ার আহ্বান জানালেন মোদি।

হলদিয়া শিল্পনগরী থেকে পালটা আক্রমণ করেন মমতা ব্যানার্জি। বলেন, ‘বিজেপিকে আর একটিও ভোট নয়। দাঙ্গাকারী, কৃষক হত্যাকারীদের চাই না। ধমকাতে এলে হাতা-খুন্তি নিয়ে রুখে দাঁড়াবেন।’

নিজের পায়ের প্লাস্টারের কথা উল্লেখ করে বলেন, ‘ভাঙা পায়ে কী করে খেলবেন। ভাঙা পায়ে এমন শট মারব না, দেখবেন কতটা ক্ষমতা আছে। একটা পায়ে যা করব, তোমরা কোটি পায়ে তা করতে পারবে না।’

ভোটের দিনের করণীয় সম্পর্কে মমতা বলেন, মা-বোনেরা মেশিনে যখন ভোট দিতে যাবেন, দুবার করে মেশিন অন-অফ করুন। মেশিন ইচ্ছা করে খারাপ করে দিলে, মেশিন ঠিক আছে কি না, সেটা দেখে নিয়ে তারপর ভোট দেবেন। ভিভিপ্যাট দেখে নিন। ভোট হয়ে যাওয়ার পর একমাস পাহারা দিতে হবে।

বিজেপির দেওয়া কিছু খাবেন না। বিরিয়ানির নামে, দুধের নামে কিছু খাবার খাইয়ে দিতে পারে বিজেপি। সেখানে মিশিয়ে দিতে পারে কিছু। বাইরের খাবার খাবেন না এজেন্টরা। টাকা দিয়ে কোনো খেলা খেলতে দেব না। খেলা হবে ভোট দিয়ে, কোনো টাকা দিয়ে নয়।’

পশ্চিমবঙ্গে গত পঞ্চায়েত নির্বাচন অবাধে হয়নি বলে বিরোধীরা অভিযোগ করে আসছে দীর্ঘদিন ধরেই। বিধানসভা নির্বাচনের প্রচারেও সেই ইস্যুকে অস্ত্র বানিয়ে প্রচারে নেমেছেন স্বয়ং মোদি। মমতার তৃণমূলকে আক্রমণ করে তিনি বলেন, ‘বাংলায় ভোট দেওয়ার অধিকারও কেড়ে নিয়েছেন দিদি।

২০১৮ সালে পঞ্চায়েত নির্বাচনে যেভাবে আপনাদের ভোটাধিকারকে পিষে দিয়েছিলেন, তা গোটা দুনিয়া দেখেছে। আমি কথা দিচ্ছি, দিদিকে আর গণতন্ত্রকে পদদলিত করতে দেব না। পুলিশ প্রশাসনকেও গণতন্ত্রকে বাঁচানোর প্রতিজ্ঞা নিতে হবে। সাংবিধানিক দায়িত্ব পালন করতে হবে।’

মোদি আরও বলেন, ‘বাংলায় উন্নয়নের পথে দেওয়াল হয়ে দাঁড়িয়ে রয়েছেন দিদি। আপনারা বিশ্বাস করেছিলেন দিদিকে। কিন্তু উনি বিশ্বাসঘাতকতা করেছেন। আপনাদের স্বপ্ন চুরচুর করে দিয়েছেন। ১০ বছরে বাংলাকে ধ্বংস করে দিয়েছেন। আজ ১০ অঙ্গীকারের কথা বলছেন দিদি। বাংলার মানুষ আপনাকে ১০ বছর সময় দিয়েছিলেন। কিন্তু আপনি লুটতরাজের সরকার চালিয়ে গেছেন। ১০ বছরে শুধু দুর্নীতি দিয়েছেন। কুশাসন দিয়েছেন।’

বিজেপির অভিযোগ, আসলে ভোট কারচুপি করতেই রাজ্য পুলিশ দিয়ে ভোট করানোর কথা বলছে তৃণমূল। বিজেপির রাজ্য নেতাদের সেই অভিযোগকেই যেন সিলমোহর দিয়ে গেলেন মোদি।