পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়

অনিয়ম ও স্বজনপ্রীতির জালে শিক্ষক নিয়োগ

অনিয়ম ও স্বজনপ্রীতির জালে শিক্ষক নিয়োগ

পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষক নিয়োগে প্রায়ই স্বজনপ্রীতি ও দুর্নীতির অভিযোগ উঠছে। সেরা মেধাবী ছাড়া এক সময়ে কেউ প্রভাষক পদে নিয়োগের চিন্তাই করতেন না। সহকারী অধ্যাপক থেকে পরবর্তী পদগুলো নিয়োগ ও পদোন্নতিতেও অগ্রাধিকার পেত গবেষণা। কিন্তু বিগত বছরগুলোতে এসব নিয়ে নানান অভিযোগ উঠছে। বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই রাজনৈতিক পরিচয় প্রাধান্য পাওয়ার খবর আসছে। এছাড়া আছে নিয়োগ-শর্ত পরিবর্তন করে উপাচার্যের সন্তানসহ স্বজন নিয়োগের ঘটনা। লোক দেখানো পরীক্ষায় টাকার বিনিময়ে, অনুগত বা বিশেষ সম্পর্কের জোরেও শিক্ষক নিয়োগ বা পদোন্নতির অভিযোগ বিস্তর।

বঞ্চিত অনেকেরই অভিযোগ, প্রভাষক পদে নিয়োগ দিতে প্রথম সেমিস্টারের ফল দেখেই একশ্রেণির শিক্ষক নীলনকশা শুরু করেন। তাদের পছন্দের ব্যক্তি যাতে প্রথম হতে পারেন, সেই ধরনের পদক্ষেপ নেন শুরু থেকেই। ফলে প্রকৃত মেধাবীরা কোপানলে পড়ে ছিটকে যান মেধাক্রম থেকে। আবার প্রকৃত মেধাবীদের কেউ যদি প্রথম বা দ্বিতীয় স্থান অধিকার করেনও, তার কপালেও নিয়োগ জোটে না। গত ১৭ সেপ্টেম্বর শিক্ষা দিবসের আলোচনায় বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষক নিয়োগ সংক্রান্ত বিষয়ে মন্তব্য করেছেন সড়ক পরিবহণ ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। তিনি বলেন, প্রভাবশালীদের তদবিরে শিক্ষক নিয়োগ হয়। যোগ্যতা এখানে মূল ব্যাপার নয়। মেধা, যোগ্যতাকে পাশ কাটিয়ে নিয়োগ হচ্ছে। এরপরই বিষয়টি ফের প্রদীপের আলোয় এসেছে। সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন, শিক্ষকসহ বিভিন্ন নিয়োগে সম্প্রতি নতুন মাত্রা যুক্ত হয়েছে। এর অন্যতম হচ্ছে, দায়িত্বপ্রাপ্তদের ছেলে-মেয়ে, জামাতা, পরিবারের সদস্য ও নিকটাত্মীয়কে নিয়োগ। বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের বর্তমান ও সাবেক উপাচার্যরাই এই অভিযোগে বেশি অভিযুক্ত। এমন বেশ কয়েকটি ঘটনা আছে। যার একটি ঘটিয়েছেন বাংলাদেশ উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের (বাউবি) বিদায়ী উপাচার্য। রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) বিদায়ী উপাচার্যের বিরুদ্ধেও একই অভিযোগ তদন্ত করেছে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন (ইউজিসি)। এই দুজনই তাদের সন্তান ও নিকটাত্মীয়কে নিয়োগ দিতে শর্ত শিথিল করে আইন সংশোধন করেছেন। নিয়োগ শেষে আবার আগের আইনে ফেরার নজিরও আছে। আবার বিদ্যমান আইনের মধ্যে থেকে কারসাজির মাধ্যমে আত্মীয় নিয়োগের ঘটনা আছে শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে (শেকৃবি)। এছাড়া কোনো কোনো বিশ্ববিদ্যালয়ে অর্থ লেনদেনের মাধ্যমেও নিয়োগের অভিযোগ উঠেছে। এমন অভিযোগের শীর্ষে আছে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় (ইবি)। নিয়োগসহ বিভিন্ন বিষয়ে উত্থাপিত অভিযোগ তদন্ত করে ইউজিসি গত কয়েক মাসে অন্তত ৯টি প্রতিবেদন শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে দাখিল করেছে। এছাড়া বর্তমানে আরও ৮টি বিশ্ববিদ্যালয়ে সংস্থাটির তদন্ত কার্যক্রম চলছে। এর মধ্যে চারটিই উপাচার্যের বিরুদ্ধেই শিক্ষক নিয়োগসহ অন্যান্য অভিযোগের তদন্ত চলছে।

এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের সচিব মো. মাহবুব হোসেন বলেন, কোনো বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্যাপারে অভিযোগ পেলে ইউজিসিকে তদন্ত করতে বলা হয়। পরবর্তী সেই প্রতিবেদনের সুপারিশের আলোকে আইনগত দিক বিশ্লেষণ শেষে ব্যবস্থাও নেওয়া হয়। কখনো কোনো উপাচার্য কোথাও দায়িত্ব পালন শেষে নিজের মূল প্রতিষ্ঠানে যখন ফিরে যান, তখন তার (মূল) প্রতিষ্ঠানকে (উপাচার্য থাকাকালে কী করে এসেছেন) তা জানিয়ে দেওয়া হয়। তবে এ ক্ষেত্রে একটি বিষয় আছে। সেটি হচ্ছে, বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষকরা সরকারি অন্য জনবলের মতো নিয়োগপ্রাপ্ত নন। সংশ্লিষ্ট বিশ্ববিদ্যালয়ের নিজস্ব আইন আছে এবং এর দ্বারা স্বাধীনতা ভোগ করে থাকে তারা। যে কারণে মন্ত্রণালয় অনেক সময়েই সুনির্দিষ্ট পদক্ষেপে যেতে পারে না। তবে শিক্ষক নিয়োগে আদর্শ মান অনুসরণের জন্য সম্প্রতি একটি ‘স্ট্যান্ডার্ড’ নীতিমালা করে দেওয়া হয়েছে।

সংশ্লিষ্টরা জানান, বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর ব্যাপারে বিভিন্ন সরকারই এক ধরনের ‘ছাড়’ দেওয়ার নীতি অনুসরণ করে আসছে। দুর্নীতির কারণে মামলা ও দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) তদন্তের মুখোমুখি হওয়ার মতো ঘটনা গত দুই দশকে আছে মাত্র দুটি। বেশির ভাগ ক্ষেত্রে দুর্নীতিবাজ উপাচার্যদের সর্বোচ্চ শাস্তি হিসেবে ‘অপসারণ’র দৃষ্টান্ত আছে। ২০০১ থেকে ২০০৬ পর্যন্ত অন্তত ২৫টি বিশ্ববিদ্যালয়ের বিরুদ্ধে অভিযোগ ওঠে। কিন্তু বিএনপি-জামায়াত সরকারের আমলে কেবল জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক আফতাব আহমাদকে অপসারণের ঘটনা আছে। অবশ্য ২০০৭ সালের পটপরিবর্তনের পর ৭টি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যকে অপসারণ করা হয়। তাদের মধ্যে মাত্র একজন (মওলানা ভাসানী বিশ্ববিদ্যালয়ের) তৎকালীন উপাচার্যের বিরুদ্ধে দুদকে মামলা হয়েছিল। গত এক দশকে অন্তত দুডজন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠেছে। এর মধ্যে গত এক বছরেই ১৭টি বিশ্ববিদ্যালয় তদন্তের অধীনে এসেছে। এই সময়ে মাত্র দুজন উপাচার্যকে অপসারণ করা হয়। তাদের একজন হলেন গোপালগঞ্জের বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের, আরেকজন ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের। রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক আবদুল জলিল মণ্ডলের বিরুদ্ধে দুদক মামলা করে। এছাড়া বাকিদের প্রায় সবাই স্বাভাবিকভাবে মেয়াদ পূর্ণ করেছেন। সর্বশেষ তদন্তের প্রমাণের পরও রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের সদ্য বিদায়ী উপাচার্য আবদুস সোবহানকে মেয়াদ পূর্ণ করতে দেওয়া হয়েছিল। আর শেষ কর্মদিবসে তিনি ইতিহাস সৃষ্টি করে যান।

সংশ্লিষ্টরা মনে করেন, বিচারের মুখোমুখি হতে হয় না বলেই বেশির ভাগ ক্ষেত্রে দায়িত্বপ্রাপ্তরা বেপরোয়া আচরণ করছেন। পাশাপাশি রাজনৈতিক চাপও উপাচার্যদের অনিয়মে বাধ্য করে বলে মনে করেন তারা।

ইউজিসির সাবেক চেয়ারম্যান অধ্যাপক আব্দুল মান্নান এ প্রসঙ্গে বলেন, ভালো ও সৎভাবে দায়িত্ব পালন করেন এমন উপাচার্যই বেশি। তবে সাম্প্রতিক সময়ে স্ত্রী-সন্তানকে চাকরি দেওয়া, শর্ত লঙ্ঘন করে নানাভাবে নিয়োগ দেওয়া বা অন্য দুর্নীতিতে জড়ানো উপাচার্যের নামও আসছে। এতে শীর্ষ মেধাবীরা উপেক্ষিত ও বঞ্চিত হচ্ছে। আমি দায়িত্ব পালনকালে এমন বেশকিছু তদন্ত হয়েছে। এ প্রসঙ্গে শুধু একটি কথাই বলব, দুষ্টের দমন করতে না পারলে এর চাষ হবেই। তিনি উপাচার্য নিয়োগকালে সতর্কতা অবলম্বন ও ব্যক্তির অতীত খুঁজে দেখার পরামর্শ দেন। তিনি বলেন, বর্তমানে বিশ্ববিদ্যালয়ে বিভিন্ন নিয়োগে রাজনৈতিক চাপ থাকে, যা দিন দিন বাড়ছে। নিয়োগ না দিলে উপাচার্যের বিরুদ্ধে মিছিলও হয়। এসব দিক দেখার দায়িত্ব রাজনীতিবিদদের। রাজনৈতিক হস্তক্ষেপ না থাকলে বিশ্ববিদ্যালয় ভালো চলে।

উল্লেখ্য, ব্যতিক্রম ছাড়া বিশ্ববিদ্যালয়ে নিয়োগ বিজ্ঞপ্তিতে আবেদনকারীর ন্যূনতম যোগ্যতা স্নাতক ও স্নাতকোত্তর শ্রেণিতে সিজিপিএ-৪-এর মধ্যে ৩ দশমিক ৫০ এবং এসএসসি ও এইচএসসি পরীক্ষায় জিপিএ-৫-এর মধ্যে ৪ দশমিক ২৫ থাকার শর্ত থাকে। এছাড়া বিশ্ববিদ্যালয়ে কোনো বিভাগে প্রথম, দ্বিতীয় ও তৃতীয় স্থান অধিকারীদের শিক্ষক হিসেবে নিয়োগ দেওয়ার রেওয়াজ আছে। বর্তমান নিয়োগে ইউজিসি অভিন্ন নীতিমালা করেছে। দেশে বর্তমানে ৪৯টি পাবলিক আছে। এর মধ্যে ৪৬টি কার্যকর আছে।

অভিযোগের খণ্ডচিত্র : জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী অধ্যাপক ইব্রাহিম বিন হারুন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগে তিনি অনার্স ও মাস্টার্স উভয়টিতে প্রথম হন। দুইবার নিজের বিভাগে আবেদন করেন। প্রথমবার নিয়োগের সুপারিশ পাননি। দ্বিতীয়বার সুপারিশ পাওয়ার পরও রহস্যজনক কারণে সিন্ডিকেট উৎরাতে পারেননি। আলাপকালে তিনি জানান, তাদের নিয়োগ বোর্ড চূড়ান্ত হওয়ার সময়ে শিক্ষক সমিতির নির্বাচন চলছিল। প্রার্থীদের কাছ থেকে তিনি ভোট চাওয়া সংক্রান্ত এসএমএসও পেয়েছেন। কিন্তু শেষ পর্যন্ত তিনি যোগদান করতে পারেননি। তিনি মনে করেন, তখনকার প্রশাসনের এক ব্যক্তির সঙ্গে তার সুসম্পর্ক ছিল না। বিপরীত দিকে ওই সময়ে তার সহপ্রার্থীদের সঙ্গে ওই ব্যক্তির সুসম্পর্ক ছিল। যে কারণে তিনি শেষ পর্যন্ত যোগ দিতে পারেননি।

জানা গেছে, এই বিশ্ববিদ্যালয়ে ২০০৯ থেকে ২০১৭ সাল পর্যন্ত ৯ শতাধিক শিক্ষক নিয়োগ পেয়েছেন। এই সময়ে বিভিন্ন নিয়োগ নিয়েই অভিযোগ উঠেছে। ২০১৪ সালের ২৪ ডিসেম্বর ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগে একটি স্থায়ী সহকারী অধ্যাপক এবং একটি স্থায়ী প্রভাষক নিয়োগের বিজ্ঞপ্তি দিয়ে ছয়জনকে নিয়োগ দেওয়া হয়। ওই নিয়োগে বাদ পড়েছিলেন প্রথম শ্রেণিতে প্রথম হওয়া এক প্রার্থী। আর নিয়োগপ্রাপ্তদের মধ্যে একজন ছিলেন বিভাগের ১৯তম স্থান অধিকারী। ওই প্রার্থী রাজনৈতিক বিবেচনা পেয়েছিলেন। এর আগে ফার্মাসিউটিক্যাল কেমিস্ট্রি বিভাগে প্রথম শ্রেণিতে প্রথম হয়েছেন এমন প্রার্থীও বাদ পড়েন। তখন বিভাগের দশম স্থান অধিকারীকে নেওয়া হয়। একইভাবে অ্যাকাউন্টিং অ্যান্ড ইনফরমেশন সিস্টেমস বিভাগের ক্ষেত্রেও এমন ঘটনার অভিযোগ আছে। এই সময়ে বেশকিছু নিয়োগে শর্ত শিথিল ও বিজ্ঞপ্তির অতিরিক্ত নিয়োগ, বিজ্ঞপ্তি না দিয়েই নিয়োগের ঘটনা আছে। এমনকি শর্ত পূরণ করা সবাইকে বাদ দেওয়ার ঘটনাও আছে।

নাম প্রকাশ না করে বিশ্ববিদ্যালয়ের এক সাবেক ডিন জানান, ২০১৬ সালের ২১ জুন নতুন খোলা মুদ্রণ ও প্রকাশনা অধ্যয়ন বিভাগে চারজনকে শিক্ষক হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয়। তাদের কেউই বিজ্ঞপ্তির উল্লিখিত যোগ্যতার শর্ত পূরণ করেননি। কিন্তু আবেদনকারীদের মধ্যেই শর্ত পূরণকারী প্রার্থীরাও ছিলেন। ওই ডিন বর্তমানে একটি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য। তিনি আরও বলেন, ‘আমি বলেছিলাম, বিভাগের প্রথম নিয়োগ। মেধাবীদের নিয়োগ না করলে বিভাগটি দাঁড়াবে না। কিন্তু তৎকালীন উপাচার্য আমার কথা শোনেননি। বরং রাজনৈতিক দোহাই দিয়েছিলেন।’

আরও কিছু ঘটনা : রাবির বিদায়ী উপাচার্য এম আবদুস সোবহান। তার দায়িত্বকালে মার্কেটিং বিভাগে লেখাপড়া করা কন্যা সানজানা সোবহান ট্যুরিজম অ্যান্ড হসপিটালিটি ম্যানেজমেন্ট বিভাগে নিয়োগ পান। বিভাগে তার মেধাক্রম ছিল ২১। আর উপাচার্যের জামাতা শাহেদ পারভেজ নিয়োগ পান ব্যবসায় প্রশাসন ইনস্টিটিউটে। এমবিএ পরীক্ষায় জামাতার মেধাক্রম ছিল ৬৭। বিশ্ববিদ্যালয়টিতে এভাবে অপেক্ষাকৃত কম যোগ্য ৩৪ জনকে শিক্ষক হিসাবে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। ফলে বাদ পড়েন যোগ্য প্রার্থীরা। এই উপাচার্যের বিভিন্ন কর্মকাণ্ড তদন্ত করেছে ইউজিসি। ওই প্রতিবেদনে বলা হয়, ২০১৭ সালে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক নিয়োগ নীতিমালা পরিবর্তন করে যোগ্যতা কমানো হয়। যোগ্যতা কমানোর একটাই উদ্দেশ্য, ২০১৭ সালের আগে নিয়োগ অযোগ্যদের পথ উন্মুক্ত করা।

এ প্রসঙ্গে ওই তদন্ত কমিটির প্রধান অধ্যাপক মোহাম্মদ আলমগীর বলেন, ১৯৭৩-এর অধ্যাদেশে চলা চারটি স্বায়ত্তশাসিত বিশ্ববিদ্যালয় (ঢাকা, জাহাঙ্গীরনগর, চট্টগ্রাম ও রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়) আছে দেশে। নীতিমালা পরিবর্তনের কারণে এই বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক নিয়োগের যোগ্যতা সর্বনিম্ন পর্যায়ে নেমে যায়।

বিগত বছরগুলোতে নিয়োগে ঘুষ সংক্রান্ত অন্তত ৫টি অডিও ফাঁস হওয়ায় ব্যাপক আলোচনায় আসে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়। প্রতি শিক্ষক নিয়োগে ২০ থেকে ৩০ লাখ টাকা লেনদেনের অভিযোগ উঠেছে। শেকৃবিতে সাবেক এক উপাচার্যের বিরুদ্ধে ওঠা এ সংক্রান্ত অভিযোগের এখনো তদন্ত করছে ইউজিসি। অভিযোগে কারসাজি করে বোর্ড গঠন করে আপন ভাগ্নেকে সহকারী অধ্যাপক এবং কোষাধ্যক্ষের মেয়েকে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পাশ করা সত্ত্বেও প্রভাষক পদে নিয়োগের অভিযোগ আছে।

একইভাবে বাউবির সদ্য সাবেক উপাচার্যের বিরুদ্ধে একাধিক বিষয়ে যোগ্যতা শিথিল করে নিজের ছেলেকে সহকারী অধ্যাপক, খুলনা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের বিরুদ্ধে মেয়েকে শিক্ষক আর ছেলেকে সেকশন অফিসার নিয়োগের অভিযোগ আছে। একইভাবে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়, যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (যবিপ্রবি), সিলেট কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়য়ের (সিকৃবি) বিরুদ্ধেও বিভিন্ন সময়ে অভিযোগ উঠেছে।-যুগান্তর

এমজে/