নৌকার ভোট ওপেন হইতে হবে, বললেন যুবলীগ নেতা

নৌকার ভোট ওপেন হইতে হবে, বললেন যুবলীগ নেতা

কেন্দ্রীয় যুবলীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য হাবিবুর রহমান ওরফে পবন বলেছেন, ‘মাইন্ড ইট (মনে রাখবেন), নৌকার ভোট ওপেন (উন্মুক্ত) হইতে হবে। মেম্বারি (ইউপি সদস্য) যেই করেন, গোপনে আপনাদের কেউ ভোট দিক এটাতে আমাদের কোনো অসুবিধা নাই। কেউ কাউকে ডিস্টার্ব করবেন না। কিন্তু নৌকাকে ওপেন রাইখা করতে হবে। এর বাহিরে কোনো কথা নাই।’

লক্ষ্মীপুরের রামগঞ্জ উপজেলার ভাদুর ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) নির্বাচন উপলক্ষে এক কর্মিসভায় এই বক্তব্য দিয়েছেন তিনি। গত রোববার রাতে ভাদুর ইউনিয়নে অবস্থিত লক্ষ্মীপুর জেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি শফিকুল ইসলামের বাসভবন চত্বরে এই সভা হয়। তাঁর এই বক্তব্যের ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়েছে।

তবে যুবলীগ নেতা হাবিবুর রহমানের দাবি, ‘এমন বক্তব্য দিয়েছি বলে মনে হচ্ছে না। বক্তব্যটি এডিট করা। আরও অনেকেই বিষয়টি আমার কাছে জানতে চেয়েছেন।’

এর আগে তিন দিন ধরে হাবিবুর রহমান রামগঞ্জ উপজেলার লামচর, চণ্ডীপুর, করপাড়াসহ বিভিন্ন ইউনিয়নে চার শতাধিক মোটরসাইকেল নিয়ে মহড়া দেন। মহাড়ার কারণে আতঙ্কিত হয়ে পড়েছেন এলাকার লোকজন ও স্বতন্ত্র প্রার্থীরা। এ বিষয়ে হাবিবুর বলেন, এটি যুবলীগের মোটরসাইকেল মহড়া ছিল। এতে নির্বাচনী সংশ্লিষ্টতা নেই।

ভাদুর ইউনিয়নে নৌকা প্রতীকে নির্বাচন করছেন মোহাম্মদ জাবেদ। এই ইউনিয়নের বর্তমান চেয়ারম্যান জাহিদ হোসেন ভূঁইয়া স্বতন্ত্র থেকে নির্বাচনী মাঠে রয়েছেন। তিনি ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতির দায়িত্বে রয়েছেন। জাবেদকে দল থেকে মনোনয়ন দিলে ক্ষুব্ধ হয়ে ওঠেন ওই এলাকার একাংশের লোকজন। ওই সময় তাঁরা মনোনয়নের বিরুদ্ধে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ মিছিল করেছেন।

২৮ নভেম্বর রামগঞ্জ উপজেলার ১০টি ইউনিয়নে নির্বাচন। এ নির্বাচন ঘিরে ভোটার ও প্রার্থীদের মধ্যে রয়েছে উত্তেজনা ও শঙ্কা।

স্বতন্ত্র প্রার্থী জাহিদ হোসেন ভূঁইয়া প্রথম আলোকে বলেন, নৌকা প্রতীকের মনোনয়নের ক্ষেত্রে এলাকার মানুষ ও দলের নেতা-কর্মীদের মতের প্রতিফলন ঘটেনি। এ জন্য তিনি মানুষের অনুরোধে স্বতন্ত্র থেকে চেয়ারম্যান পদে নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। তিনি আরও বলেন, হাবিবুর রহমান আচরণবিধি লঙ্ঘন করে এলাকায় মোটরসাইকেল মহড়া দিয়ে আতঙ্ক সৃষ্টি করছেন। তিনি প্রকাশ্যে ঘোষণা করছেন নৌকার ভোট প্রকাশ্যে হবে। তাঁর এসব বক্তব্যের কারণে এলাকার মানুষের মধ্যে নির্বাচনী ব্যবস্থা প্রশ্নবিদ্ধ হচ্ছে।

ওই ইউনিয়নের ইসলামী শাসনতন্ত্র প্রার্থী মো. রাসেল বলেন, ‘যুবলীগের নেতা ইউনিয়নে সভা করে ভোট কারচুপির কৌশল শিখিয়ে দিচ্ছেন। বর্তমানে ভোটে কারচুপি আছে, এটি তাঁর বক্তব্যে প্রমাণিত। নির্বাচনের পরিবেশ নেই।’

যুবলীগ নেতার এ বক্তব্য সম্পর্কে দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা ও রিটার্নিং কর্মকর্তা মুহাম্মদ নাজিম উদ্দীন বলেন, ‘তিনি কেন এসব কথা বলেছেন, আমি জানি না। তাঁর বক্তব্য শুনিনি।’