৩ বেলা ডাল-ভাত খাওয়াও কষ্টকর হয়ে যাচ্ছে নিম্নবিত্ত-মধ্যবিত্তের

৩ বেলা ডাল-ভাত খাওয়াও কষ্টকর হয়ে যাচ্ছে নিম্নবিত্ত-মধ্যবিত্তের

নিম্নবিত্ত-মধ্যবিত্ত মানুষের জীবন সংকটে পড়েছে। নিত্যপণ্যের দাম বেড়ে কষ্ট আরও বৃদ্ধি পেয়েছে এসব মানুষের।

চাল, ডাল, তেল, চিনি, আটা-ময়দা, পেঁয়াজ ইত্যাদির দাম বেড়েই চলেছে। স্বস্তি নেই সবজির বাজারেও।

রোববার (২২ মে) নিত্যপণ্যের বেশ কয়েকটি বাজার ঘুরে দেখা গেছে এমন চিত্র।

বাজার ঘুরে দেখা যায়, নদীর মাছ, গরু বা খাসির মাংসের বদলে ডিম ও ব্রয়লার মুরগির মাংসের চাহিদা সবচেয়ে বেশি ছিল নিম্নবিত্ত পরিবারগুলোতে। দাম বেড়ে যাওয়ায় ডিম ও ব্রয়লার মুরগিও কিনতে পারছেন না অনেকে।

সম্রাট আহমেদ নামে কারওয়ান বাজারে এক ক্রেতা বলেন, দ্রব্যমূল্য আকাশছোঁয়া। এটা সত্যিই দুঃখজনক ব্যাপার। এর জন্য সম্পূর্ণরূপে দায়ী কিছু অসাধু ব্যবসায়ী আর কিছু কালোবাজারি, যাদের সিন্ডিকেটের কাছে জিম্মি হয়ে পড়েছে দেশের মধ্যবিত্ত ও নিম্নবিত্ত মানুষ। সরকারের উচিত বাজার নিয়ন্ত্রণে অধিক সংখ্যায় মনিটরিং সেল গঠন করা। পাশাপাশি অসাধু ব্যবসায়ীদের শাস্তির ব্যবস্থা করতে হবে।

সুমাইয়া ইসলাম নামে একজন বলেন, নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যসহ বাজারের সব পণ্যের কৃত্রিম সংকট তৈরি করে দিন দিন আকাশচুম্বী দাম হাঁকা শুরু হয়। ক্রেতাসাধারণ নিরুপায় হয়ে সেই চড়া দামে নিত্যপ্রয়োজনীয় সব দ্রব্য কিনতে বাধ্য হয়। সরকারের সংশ্লিষ্ট কর্তাব্যক্তিদের সরেজমিনে গিয়ে তদারকিসহ বাজার নিয়ন্ত্রণে ব্যবস্থা নিতে হবে।

রফিকুল ইসলাম নামে একজন বেসরকারি চাকরিজীবী বলেন, খরচ তো অনেক। বাড়ি ভাড়া, বিদ্যুৎ বিলসহ বাসার খরচ, প্রতি মাসে গ্রামের বাড়িতে থাকা বয়স্ক বাবা-মায়ের খরচ, দুইটা বাচ্চা আর স্ত্রীকে নিয়ে সংসারে চার জন মানুষের খাওয়ার খরচ, নিজের অফিসে আসা-যাওয়া খরচ, নিজেদের মোবাইল খরচ, চিকিৎসা, ইন্টারনেট, ডিশ কানেকশন, পোশাক, বাচ্চাদের খেলনাসহ আরও অনেক কিছুই আছে৷ এর বাইরে আত্মীয়-স্বজন কেউ বাসায় এলে শুধু খাওয়ার খরচই অনেক টাকা বেড়ে যায়৷ এর মধ্যে কী বাদ দেব? ফলে খাওয়ার খরচই কমাতে হয়৷ কিন্তু এখন জিনিসপত্রের যে দাম তাতে তিন বেলা ডাল-ভাত খাওয়াও কষ্টকর হয়ে যাচ্ছে৷

প্রসঙ্গত, নতুন বছরের শুরু থেকেই নিত্যপণ্যের দাম লাগামহীন৷ এখন যে পর্যায়ে ঠেকেছে তাতে সাধারণ মানুষের নাগালের বাইরে বললে ভুল হবে না৷ অনেকে আবার বাধ্য হয়ে লাইন ধরছেন টিসিবির পণ্যের জন্যও।

ব্যবসায়ীরা বলছেন, আন্তর্জাতিক বাজারে জিনিসপত্রের দাম বৃদ্ধি পেলে এখানে তো বাড়বেই৷ এক বছর আগে আন্তর্জাতিক বাজারে সয়াবিন তেলের দাম কত ছিল, আর এখন কত! ব্যবসায়ীরা তো আর বেশি টাকা দিয়ে পণ্য কিনে কম টাকায় বিক্রি করবে না৷ এখন আমাদের আন্তর্জাতিক বাজারে পণ্যের দাম কমার অপেক্ষা করতে হবে৷