কক্সবাজারে ব্লু ইকোনমি দেখাচ্ছে নতুন স্বপ্ন

কক্সবাজারে ব্লু ইকোনমি দেখাচ্ছে নতুন স্বপ্ন

কক্সবাজারে ব্লু ইকোনমিতে নতুন স্বপ্ন উঁকি দিচ্ছে সামুদ্রিক শৈবাল ও গ্রিন মাসেল (সবুজ ঝিনুক) চাষে। কক্সবাজারে এই দু’টি সামুদ্রিক সম্পদের চাষ শুরু হওয়ার পাশাপাশি দেখা দিচ্ছে এক নতুন সম্ভাবনাময় দিগন্ত। বিশ্বের বিভিন্ন দেশে ব্যাপক চাহিদার প্রেক্ষিতে এসব সামুদ্রিক সম্পদ এখন মূল্যবান রফতানি পণ্য।

ইতোমধ্যে নেদারল্যান্ডস সরকার বঙ্গোপসাগরে এ দু’টি সামুদ্রিক জৈব সম্পদের সাথে অন্যান্য সামুদ্রিক সম্পদ উন্নয়ন ও আহরণে সহযোগিতা করার আগ্রহ দেখিয়েছে। বাংলাদেশ সরকারের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মেরিন অ্যাফেয়ার্স ইউনিটের সার্বিক তত্ত্বাবধানে নেদারল্যান্ডস ভিত্তিক প্রতিষ্ঠান এবিএস ইন্টারন্যাশনাল বঙ্গোপসাগরে বিভিন্ন সামুদ্রিক সম্পদের অস্তিত্ব এবং এর সম্ভাব্য ব্যবহার নিয়ে কাজ শুরু করে দিয়েছে। এরই ধারাবাহিকতায় সম্প্রতি কক্সবাজার সফর করেন উচ্চপর্যায়ের একটি প্রতিনিধিদল।

এই প্রতিনিধিদলে ছিলেন নেদারল্যান্ডস সরকারের প্রতিনিধি হিসেবে সমুদ্রবিজ্ঞানী ড. টমাস ব্যানাট, এবিএস ইন্টারন্যাশনালের গবেষক ও প্রধান সমন্বয়ক রায়হানুল ইসলাম ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মেরিটাইম অ্যাফেয়ার্স ইউনিটের পরিচালক কমান্ডার এহতেশামুল হক খান প্রমুখ। কক্সবাজার সংলগ্ন বঙ্গোপসাগরে চলমান সি উইড ও গ্রিন মাসল চাষ দেখে তারা সন্তোষ প্রকাশ করেন।

সমুদ্র গবেষক রায়হানুল ইসলাম বলেন, আমাদের বঙ্গোপসাগরে বিদ্যমান বিভিন্ন জৈব সম্পদের উপস্থিতি রয়েছে। মেরিন স্পঞ্জ, সামুদ্রিক ঘাস, সল্ট মার্স, ট্রাশ ফিস, চিংড়ি, কাঁকড়া, ওয়েস্টার মাসেল, সি শেল, সি কিউকাম্বার, কোরাল রিফ, জো প্লাংকটন, ফাইটো প্লাংকটন, ইথিওফাইলিন ও বেনথোজসহ আরো নানা ধরনের সামুদ্রিক সম্পদ রয়েছে যা দেশের বিভিন্ন শিল্প সেক্টরে ব্যবহার উপযোগী।

কক্সবাজার সংলগ্ন বঙ্গোপসাগরের বিভিন্ন পয়েন্টে সি উইড ও গ্রিন মাসেল চাষ করছেন স্থানীয় উদ্যোক্তা ওমর হাসান। বেশ কয়েক বছর ধরে এসব পণ্য রফতানিও করছেন তিনি। ওমর হাসান বলেন, ওষুধ শিল্প, কসমেটিকস শিল্প, পুষ্টিসমৃদ্ধ শিশুখাদ্য প্রস্তুতকারক প্রতিষ্ঠান ও পশুখাদ্য তৈরিসহ আরো বিভিন্ন সেক্টরে এসব পণ্য ব্যবহার করা যায়।

উদ্যোক্তারা জানান, দেশীয় শিল্প কারখানাগুলোতে এর ব্যাপক চাহিদা রয়েছে। তাই সমুদ্রজাত এসব উপাদান দেশে উৎপাদন ও সরবরাহ নিশ্চিত করতে পারলে আমদানি নির্ভরতা কমিয়ে আনার পাশাপাশি বিদেশে রফতানি করে বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন করা সম্ভব। এভাবে ব্লু ইকোনমি দেশীয় অর্থনীতিতে এক শক্তিশালী সহায়ক ভূমিকা পালন করতে পারে।