অপহরণ করে মুক্তিপণ আদায়: ডিবি পুলিশের সাত সদস্যের ৭ বছরের কারাদণ্ড

অপহরণ করে মুক্তিপণ আদায়: ডিবি পুলিশের সাত সদস্যের ৭ বছরের কারাদণ্ড

টেকনাফে ব্যবসায়ীকে অপহরণ করে ১৭ লাখ টাকা মুক্তিপণ আদায়ের ঘটনায় কক্সবাজারের গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) বহিস্কৃত সাত সদস্যকে ৭ বছর করে কারাদণ্ড দিয়েছে আদালত। অনাদায়ে আরও ৩ লাখ টাকা করে জরিমানা করা হয়।

মঙ্গলবার (২০ সেপ্টেম্বর) দুপুরে কক্সবাজার জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক মোহাম্মদ ইসমাইল এই রায় দেন।

রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী অ্যাড. ফরিদুল আলম জানান, প্রত্যেক আসামিকে অপহরণ মামলায় ৫ বছর করে এবং চাঁদাবাজি মামলায় ৭ বছর করে কারাদণ্ড দেয়া হয়। তবে যেহেতু একসঙ্গে সাজা ভোগ করতে হবে তাই তাদের সবমিলিয়ে কারাভোগ করতে হবে ৭ বছর। একই সঙ্গে ৩ লাখ টাকা করে জরিমানা করা হয়।

বহিস্কৃত পুলিশ সদস্যদের নৈতিক শিক্ষার প্রশিক্ষণের অভাব ছিলো বলে মন্তব্য করে আদালত। রায়ে সন্তুষ্টি প্রকাশ করেন মামলার বাদী আবদুল গফুরের ভাই টেকনাফ পৌরসভার কাউন্সিলর মনিরুজ্জামান।

মামলার রায় শোনানোর সময় আদালতে উপস্থিত ছিলেন দণ্ডপ্রাপ্ত সকল আসামি। আসামিরা হলেন- তৎকালীন ডিবি পুলিশের উপ-পরিদর্শক (এসআই) মনিরুজ্জামান ও আবুল কালাম আজাদ, এএসআই ফিরোজ, গোলাম মোস্তফা ও আলাউদ্দিন এবং দুই কনস্টেবল আল আমিন ও মোস্তফা আজম।

২০১৭ সালের ২৪ অক্টোবর কক্সবাজার শহরের থানার পেছনের রোড থেকে ডিবি পুলিশ পরিচয়ে সাদাপোশাকধারী ব্যক্তিরা টেকনাফের ব্যবসায়ী আবদুল গফুরকে মাইক্রোবাসে তুলে নিয়ে যান। এরপর ‘ক্রসফায়ারে’ মেরে ফেলার হুমকি দিয়ে তাঁর স্বজনদের কাছে এক কোটি টাকা মুক্তিপণ দাবি করেন। দেনদরবারের পর ১৭ লাখ টাকা দিতে রাজি হয় পরিবার। টাকা পৌঁছে দেয়া হলে পরদিন ভোররাতে আবদুল গফুরকে কক্সবাজার-টেকনাফ মেরিন ড্রাইভ সড়কের শামলাপুরে ছেড়ে দেয়া হয়। বিষয়টি গফুরের স্বজনেরা সেনাবাহিনীর নিরাপত্তাচৌকির কর্মকর্তাকে জানান। রোহিঙ্গাদের নিরাপত্তা ও ত্রাণ কার্যক্রমের জন্য সেনাবাহিনীর এই নিরাপত্তাচৌকি স্থাপন করা হয়েছিল। মুক্তিপণ আদায়কারী ডিবি পুলিশের সদস্যরা মাইক্রোবাসে মেরিন ড্রাইভ সড়কে চৌকির সেনাসদস্যরা মাইক্রোবাস তল্লাশি করে তাতে ১৭ লাখ টাকা পান।

এ সময় ডিবির উপপরিদর্শক (এসআই) মনিরুজ্জামান দৌড়ে পালিয়ে গেলেও বাকি ছয়জনকে ঘটনাস্থল থেকে আটক করেন সেনা সদস্যরা। পরে ঘটনায় ব্যবসায়ী আবদুল গফুর বাদি হয়ে এ সাতজনকে আসামি করে মামলা দায়ের করা হয়।