সংকটাপন্ন অবস্থায় সংবাদপত্রশিল্প, নোয়াবের উদ্বেগ

সংকটাপন্ন অবস্থায় সংবাদপত্রশিল্প, নোয়াবের উদ্বেগ

সংবাদপত্রশিল্পের সংকটাপন্ন অবস্থা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে নিউজ পেপার ওনার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (নোয়াব)। সম্প্রতি সংবাদপত্রের মালিকদের এই সংগঠনের এক সভায় উদ্বেগের কথা জানানো হয়। বিশেষ করে বিভিন্ন প্রয়োজনীয় ও আমদানিকৃত এবং দেশি কাঁচামালের মূল্য শতভাগ বৃদ্ধি পাওয়ায় ওই সভায় সবাই সংবাদপত্রের ভবিষ্যৎ নিয়ে শঙ্কা প্রকাশ করেন।

শনিবার নোয়াবের সভাপতি এ কে আজাদ স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে এসব কথা জানানো হয়। এতে বলা হয়, দীর্ঘদিন ধরে সেবা শিল্প হিসেবে ঘোষিত সংবাদপত্রশিল্প সংকটাপন্ন অবস্থায় রয়েছে। এর মধ্যে পত্রিকার উৎপাদন ব্যয় ও বিক্রয়মূল্যের ব্যবধান একটা প্রধান কারণ। বর্তমানে পূর্ব ইউরোপে চলমান যুদ্ধের কারণে বিভিন্ন পণ্যের সঙ্গে সংবাদপত্রের জন্য প্রয়োজনীয় উপকরণের মূল্য এমনভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে যে এই সেবা শিল্প মুখ থুবড়ে পড়েছে।

কিছুদিন আগে সংবাদপত্রের দাম বাড়ানো হলেও এই অবস্থার উন্নতি হয়নি। এক কপি সংবাদপত্র তৈরিতে ব্যয় হয় গড়ে ২২ টাকা। সেখানে বিক্রয়মূল্য ১২ টাকা; কিন্তু এর শতকরা ৩৫ ভাগ পান পত্রিকা বিতরণে যুক্ত হকাররা। বাকি ঘাটতি বিজ্ঞাপন থেকে পূরণের চেষ্টা করা হয়। কিন্তু বিপুল সংখ্যাগরিষ্ঠ পত্রিকার ক্ষেত্রেই এই উৎপাদন ব্যয় ও বিক্রয়মূল্যের ব্যবধান মেটানো সম্ভব হয় না।

এই সংকটকালে তথা করোনা মহামারির সময়েও সেবা শিল্প হিসেবে সংবাদপত্রশিল্প ঘোষিত কোনো ধরনের প্রণোদনা পায়নি। বিভিন্ন ধরনের করের বোঝা এই পরিস্থিতিকে আরও ঘোরতর করেছে। উপরন্তু বিভিন্ন সরকারি সংস্থার কাছে বিজ্ঞাপন বাবদ সংবাদপত্রগুলোর পাওনা প্রায় ১০০ কোটি টাকা। দিনের পর দিন বকেয়া থেকে যাচ্ছে। বহু তাগিদ দেওয়া সত্ত্বেও এই বকেয়া পরিশোধ হয়নি।

নোয়াব দীর্ঘদিন ধরে এই সেবা শিল্পের ক্ষেত্রে বিভিন্ন ধরনের শুল্ক ও ভ্যাট কমানো বা রহিত করার দাবি জানিয়ে আসছে। সামগ্রিক পরিস্থিতি বিবেচনায় এই রুগ্‌ণ শিল্পকে রক্ষার দায়িত্ব এখন সরকারকেই নিতে হবে। তা না হলে দীর্ঘদিনের একটি ঐতিহ্যবাহী পেশার সঙ্গে যুক্ত শত–সহস্র সাংবাদিক ও কর্মী বেকারের সংখ্যায় যুক্ত হবেন। চূড়ান্তভাবে ‘দ্য ফোর্থ এস্টেট’ হিসেবে খ্যাত এই সেবা শিল্পের এ দেশে পরিসমাপ্তি ঘটবে। বিষয়টিতে নোয়াব সরকারের সদয় দৃষ্টি প্রত্যাশা করে।