ঘন কুয়াশার চাদরে মুড়ে আছে রাজশাহী

ঘন কুয়াশার চাদরে মুড়ে আছে রাজশাহী

কুয়াশার চাদরে মুড়ি দিয়েছে পদ্মাপাড়ের শহর রাজশাহী। তাই ভোরে সূর্যোদয় হলেও আড়মোড়া ভেঙে এখনও সজীব হয়ে উঠতে পারছে না সবুজ-শ্যামল প্রকৃতি। পৌষের স্নিগ্ধ সকালে দাপুটে হয়ে উঠেছে শীতের প্রকোপ।

রাজশাহীতে সোমবার (২৬ ডিসেম্বর) সূর্যোদয় হয়েছে ভোর ৬টা ৪৭ মিনিটে। তবে ঘড়ির কাঁটায় যখন সকাল পৌনে ১০টা তখনও সূর্যের মুখ দেখা যায়নি।

আর ভোরের দিকে ঘন কুয়াশার আস্তরণ যেন গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টির মতো পড়ছিল। সেই সঙ্গে উত্তরের হিমেল হাওয়া কাঁটা দিচ্ছিল শীতার্ত শরীরে। সপ্তাহ ঘুরে যতই দিন যাচ্ছে- তাপমাত্রার পারদ ততই নিচে নামছে। এই ঘন কুয়াশা কেটে গেলে বৃষ্টি ঝরবে। কামড় বসাবে শীত। বাড়বে জনদুর্ভোগ। আপাতত এমনটাই পূর্বাভাস দিচ্ছে আবহাওয়া অফিস।

এদিকে ঘন কুয়াশার চাদরে প্রকৃতি ঢাকা পড়লেও জীবিকার তাগিদে আজও কাক ডাকা বের হয়েছেন শ্রমজীবী মানুষ। তবে ঘন কুয়াশায় সড়ক-মহাসড়কে যানবাহন চলাচল বিঘ্নিত হচ্ছে। তাই মহাসড়কের দূরপাল্লার যানবাহন চলছে ধীরগতিতে।

কুয়াশার কারণে বর্তমান সড়কপথে দৃষ্টিসীমা ১০০ মিটারের নিচে নেমে এসেছে। এর কারণে সড়কের যানবাহনগুলোকে হেডলাইট জ্বালিয়ে চলাচল করতে দেখা যাচ্ছে।

ঘন কুয়াশার জন্য দুর্ঘটনা এড়াতে গতি কমেছে ট্রেনেরও। ফলে পশ্চিমাঞ্চল রেলওয়ের আন্তঃনগরসহ বিভিন্ন রুটের ট্রেনের সিডিউল ভাঙতে শুরু করেছে এরই মধ্যে।

বিলম্বে চলার কারণে সময় অপচয় হচ্ছে রেলপথ যাত্রীদের। ক’দিন থেকে রাজশাহী-ঢাকা, ঢাকা-রাজশাহী, খুলনা-রাজশাহীসহ বিভিন্ন রুটের আন্তঃনগর ট্রেনগুলোর নির্ধারিত সময় ঠিক রাখা যাচ্ছে না। বিশেষ করে বৈরি আবহাওয়ায় রাজশাহী-ঢাকা ও ঢাকা-রাজশাহী রুটের আন্তঃনগর ট্রেনগুলোর সিডিউল আবারও নড়বড়ে হয়ে পড়েছে।

উত্তরের সড়ক পথেও একই অবস্থা। দুর্ঘটনা এড়াতে ভোরে সড়ক-মহাসড়কগুলোতে ছোট-বড় যানবাহনগুলোকে চলাচল করতে হচ্ছে ধীরগতিতে। ফগলাইট ব্যবহার করেও চালকরা বাসের গতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে হিমশিম খাচ্ছেন। কুয়াশার কারণে অনেক সড়কের বাঁক চোখে পড়ছে না চালকদের। ঘন কুয়াশায় উত্তরের সংযোগস্থল যমুনা সেতুর উভয়পাড়ে দূরপাল্লার যানবাহনের সাড়ি ক্রমেই দীর্ঘ হচ্ছে।

জানতে চাইলে রাজশাহী আবহাওয়া অফিসের জ্যেষ্ঠ পর্যবেক্ষক লতিফা হেলেন বলেন, আজ সকাল ৭টায় রাজশাহীতে সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ১৫ দশমিক ৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এর আগের দিন রোববার (২৫ ডিসেম্বর) ছিল ১৩ দশমিক ০ ডিগ্রি সেলসিয়াস। আর শনিবার (২৪ ডিসেম্বর) ছিল ১০ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস।

ফলে পরিসংখ্যান বলছে, রাজশাহীর গড় তাপমাত্রা একদিন কমছে আরেক দিন বাড়ছে। মূলত প্রকৃতি থেকে এই কুয়াশার আস্তরণ কেটে গেলেই শীত বাড়ে। এবারও তার ব্যতিক্রম হবে না। এর ওপর জানুয়ারির শুরুতে স্বাভাবিক বৃষ্টির পূর্বাভাস রয়েছে।

ওই সময় রাজশাহীর সর্বনিম্ন তাপমাত্রা আবারও এক অঙ্কে নেমে আসার আশঙ্কা রয়েছে বলেও উল্লেখ করেন এ আবহাওয়া কর্মকর্তা।

এদিকে আবহাওয়া অধিদফতরের এক পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, অস্থায়ীভাবে আংশিক মেঘলাসহ সারাদেশে আজকের আবহাওয়া প্রধানত শুষ্ক থাকবে। তবে মধ্যরাত থেকে ভোর পর্যন্ত নদীতীরবর্তী এলাকায় হালকা থেকে মাঝারি কুয়াশা পড়তে পারে। এটি উত্তরপশ্চিমাঞ্চলে দুপুর পর্যন্ত অব্যাহত থাকতে পারে। এছাড়া সারাদেশে রাতের তাপমাত্রা সামান্য কমতে পারে। তবে দিনের প্রায় তাপমাত্রা প্রায় অপরিবর্তিত থাকবে।