বাংলাদেশের নির্বাচন যুক্তরাষ্ট্রের স্টেট ডিপার্টমেন্টের সঙ্গে যুক্ত জানতাম না: মারিয়া জাখারোভা

বাংলাদেশের নির্বাচন যুক্তরাষ্ট্রের স্টেট ডিপার্টমেন্টের সঙ্গে যুক্ত জানতাম না: মারিয়া জাখারোভা

বাংলাদেশে অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন অনুষ্ঠানের আহবান জানিয়ে লেখা ইউরোপ ও যুক্তরাষ্ট্রের রাজনীতিবিদদের চিঠির সমালোচনা করে রাশিয়ার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র মারিয়া জাখারোভা বলেছেন, ‘আমি আগে কখনো শুনিনি যে বাংলাদেশ ইউরোপীয় পার্লামেন্টের সদস্য। এটা শুনিনি কারণ বাংলাদেশ এর সদস্য নয়। আমি জানতাম না যে বাংলাদেশের নির্বাচন যুক্তরাষ্ট্রের স্টেট ডিপার্টমেন্টের সঙ্গে যুক্ত। পশ্চিমাদের যুক্তিটা এমন যে ইউরোপীয় ইউনিয়নের পররাষ্ট্র ও নিরাপত্তাবিষয়ক উচ্চপদস্থ প্রতিনিধি এবং মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী বাংলাদেশে প্রাক্‌-নির্বাচনকালীন সময়ের জন্য সেখানে একটি নিরপেক্ষ অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠনের প্রয়োজনীয়তার বিষয়ে কিছু সুপারিশ তুলে ধরবেন। এটা নব্য উপনিবেশবাদ ছাড়া আর কী? এটা নগর এবং উপনিবেশগুলোর প্রতি তাদের আচরণের প্রদর্শন ছাড়া আর কী?’

এগুলো একটি সার্বভৌম রাষ্ট্রের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে নির্লজ্জ হস্তক্ষেপের চেষ্টা বলে মন্তব্য করেন মারিয়া জাখারোভা। 

তিনি বলেন, ‘আমরা এটিও বুঝতে পারছি নির্বাচন কীভাবে পরিচালনা করতে হবে তা নিয়ে সেখানকার কর্তৃপক্ষ (বাংলাদেশ) তাদের (ইউরোপ ও যুক্তরাষ্ট্রের) পরামর্শ চায়নি।’

গত বৃহস্পতিবার রাশিয়ার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র মারিয়া জাখারোভা মস্কোতে নিয়মিত ব্রিফিংয়ে বাংলাদেশ প্রসঙ্গে এ মন্তব্য করেন। ওই দিনই রুশ পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এক টুইটে মুখপাত্রের বক্তব্য সংক্ষিপ্তভাবে প্রকাশ করে। গতকাল শুক্রবার রাশিয়ার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় তাদের ওয়েবসাইটে মুখপাত্রের পুরো বক্তব্য প্রকাশ করেছে।

মারিয়া জাখারোভা বলেন, বাংলাদেশে নির্বাচন কীভাবে হবে, সেটা দেশটির আইনেই স্পষ্টভাবে উল্লেখ করা আছে।

তিনি বলেন, জুনের মাঝামাঝি ইউরোপীয় পার্লামেন্টের ছয় সদস্য ইউরোপীয় ইউনিয়নের পররাষ্ট্র ও নিরাপত্তাবিষয়ক উচ্চপদস্থ প্রতিনিধি জোসেপ বোরেলকে এবং একই সঙ্গে মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেনকে পাঠানো ডেমোক্রেটিক পার্টির মার্কিন কংগ্রেস সদস্যদের পাঠানো যে চিঠিগুলো প্রকাশিত হয়েছে, তা লক্ষ করেছেন। চিঠিগুলোতে বাংলাদেশে অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন অনুষ্ঠানের জন্য সহায়তা চাওয়া হয়েছে।

রুশ পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র বলেন, যুক্তরাষ্ট্র বা ইউরোপীয় ইউনিয়ন যাদের সমালোচনা করে, তাদের সংখ্যাগরিষ্ঠরাই তাদের (যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপ) কাছে যায় না। তারা তাদের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে হস্তক্ষেপ না করার জন্য এবং নিজেরাই নিজেদের সমস্যা মোকাবিলার কথা বলে। বাংলাদেশে কীভাবে নির্বাচন পরিচালনা করা হবে, তা খুব স্পষ্টভাবেই দেশটির আইনে উল্লেখ করা আছে।

বাংলাদেশের স্বার্থকে সমুন্নত রেখে একটি স্বাধীন অভ্যন্তরীণ ও বৈদেশিক নীতি অনুসরণের যে আকাঙ্ক্ষা ঢাকার রয়েছে, তাতে রাশিয়ার সমর্থন রয়েছে বলে উল্লেখ করেন মারিয়া জাখারোভা।