যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিনিধিদলের সঙ্গে বৈঠক শেষে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী

তারা সুষ্ঠু নির্বাচন চায়, কোনো দলকে উৎসাহ দিতে আসেনি

তারা সুষ্ঠু নির্বাচন চায়, কোনো দলকে উৎসাহ দিতে আসেনি

স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান বলেছেন, সফররত যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিনিধিদল বাংলাদেশে অবাধ, সুষ্ঠু, শান্তিপূর্ণ ও সহিংসতামুক্ত নির্বাচন দেখতে চায়। তারা কোনো দলকে উৎসাহ দিতে বাংলাদেশে আসেনি।

আজ বৃহস্পতিবার সচিবালয়ে যুক্তরাষ্ট্রের বেসামরিক নিরাপত্তা, গণতন্ত্র ও মানবাধিকারবিষয়ক আন্ডার সেক্রেটারি উজরা জেয়ার নেতৃত্বে একটি প্রতিনিধিদল স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠক করেন। পরে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সাংবাদিকদের সঙ্গে বৈঠকের বিষয়বস্তু নিয়ে কথা বলেন। তবে যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিনিধিদল সাংবাদিকদের সঙ্গে কোনো কথা বলেনি।

বৈঠকে দক্ষিণ ও মধ্য এশিয়াবিষয়ক যুক্তরাষ্ট্রের সহকারী পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডোনান্ড লু ও ঢাকায় নিযুক্ত মার্কিন রাষ্ট্রদূত পিটার হাসও উপস্থিত ছিলেন।

স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিনিধিদল বলেছে, আগামী নির্বাচন যাতে অবাধ, সুষ্ঠু ও সহিংসতা মুক্ত হয়। সেটি তারা দেখতে চায়। এ বিষয়ে তিনি বলেছেন, নির্বাচনের সময় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী সংবিধান অনুযায়ী নির্বাচন কমিশনের অধীনে থাকে। তিনি (প্রধান নির্বাচন কমিশনার) যেভাবে নির্দেশনা দেবেন, সেভাবেই কাজ করবে।

আলোচনার বিষয়বস্তু নিয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, মার্কিন প্রতিনিধিদল অংশগ্রহণমূলক বলেনি; অবাধ, সুষ্ঠু, শান্তিপূর্ণ, সহিংসতামুক্ত নির্বাচন তারা চেয়েছে।

স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা বলেছি, আমাদের আইনশৃঙ্খলা বাহিনী সব সময় তৈরি আছে। তারা খুবই প্রশিক্ষিত। ইতিমধ্যে অনেকগুলো নির্বাচন হয়ে গেছে। যেগুলো অত্যন্ত শান্তিপূর্ণ হয়েছে। জাতীয় নির্বাচনও সেরকম শান্তিপূর্ণ হবে বলে আশা করি।’

সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আরও বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিনিধিদল বলেছে, তারা কোনো দলকে উৎসাহ দিতে এখানে আসেনি। তারা কোনো দলকে সমর্থনও করে না। তারা এখানে এসেছে, যেন একটি সহিংসতামুক্ত, শান্তিপূর্ণ ও সুষ্ঠু নির্বাচন হয়। এর বাইরে তারা কিছুই চায় না, কিছুই বলেনি। কোনো দল বা ব্যক্তিকে সমর্থন করার জন্য তারা এখানে আসেননি—এটি তারা বারবার বলেছে।

ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন নিয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গেও যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিনিধিদল আলোচনা করেছে। এ বিষয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, আইনমন্ত্রী আনিসুল হক ইতিমধ্যে বলে দিয়েছেন, কিছু যুগোপযোগী করার জন্য আইনটি আরেকটু সংশোধন হবে। তিনিও এই বিষয়টি পুনর্ব্যক্ত করেছেন।

স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠকের আগে যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিনিধিদলটি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও আইনমন্ত্রী আনিসুল হকের সঙ্গে দেখা করে। সে কথা জানিয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে খুব ফলপ্রসূ আলোচনা হয়েছে বলে তাঁকে জানিয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিনিধিদল। প্রধানমন্ত্রী যে তাঁর দূরদৃষ্টি নেতৃত্বে দেশকে সমৃদ্ধের পথে নিয়ে গেছেন, এগুলো নিয়ে তারা অত্যন্ত সন্তুষ্ট, তা তারা বলে গেছে। বাংলাদেশে যে অবস্থা আছে, সেই অবস্থা নিয়ে তারা খুবই খুশি। গতকাল বুধবার ঢাকায় দুই দলের (আওয়ামী লীগ ও বিএনপি) সমাবেশে শান্তিপূর্ণ পরিবেশ থাকার বিষয়টি নিয়ে তারা প্রশংসা করেছে।

রোহিঙ্গা ইস্যু নিয়েও বৈঠকে আলোচনা হয়েছে বলেন জানান স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী। রোহিঙ্গাদের নিয়ে যাতে মানবপাচারকারীরা ‘খেলা’ করতে না পারে, সেটি নিয়ে তারা উদ্বেগ প্রকাশ করেছে। রোহিঙ্গা প্রত্যাবর্তন নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিনিধিদলের কাছে সহযোগিতা চেয়েছেন বলে জানান স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী। তবে র‍্যাব ও তত্ত্বাবধায়ক সরকার নিয়ে আলোচনা হয়নি বলেন জানান আসাদুজ্জামান খান।