বিএনপির আহত নেতাকর্মীদের চিকিৎসা নিতেও বাধা দেয়া হচ্ছে: ড্যাব

বিএনপির আহত নেতাকর্মীদের চিকিৎসা নিতেও বাধা দেয়া হচ্ছে: ড্যাব

সারাদেশের বিভিন্ন এলাকায় বিএনপি ও অঙ্গসংগঠনের যেসব নেতাকর্মীরা ক্ষমতাসীন দল ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর দ্বারা আহত হয়েছেন তাদেরকে চিকিৎসা নিতেও সরকারের নির্দেশে বাধা দেওয়া হচ্ছে বলে অভিযোগ করেছে চিকিৎসকদের সংগঠন ডক্টরস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ড্যাব)।

আজ বৃহস্পতিবার বিকেলে রাজধানীর মগবাজারে সংগঠনের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে ড্যাবের চিকিৎসা সেবা সহায়তা কমিটির উদ্যোগে এক সংবাদ সম্মেলনে এই দাবি করা হয়।

সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন ড্যাবের চিকিৎসাসেবা সহায়তা কমিটির সদস্য সচিব ও ড্যাবের সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব ডা. মো. মেহেদী হাসান। আরো উপস্থিত ছিলেন কমিটির আহ্বায়ক ডা. জহিরুল ইসলাম শাকিল, অধ্যাপক ডা. এম এ সেলিম, অধ্যাপক ডা. সিরাজুল ইসলাম, ডা. সরকার মাহবুব আহমেদ শামীম, ডা. শামসুল ইসলাম, ডা. পারভেজ রেজা কাকন, ডা. কাজল, ডা. আরফান সোহেল, ডা. রিয়াজুল ইসলাম, ডা. এসএ মাহমুদ মুন্না, ডা. ইব্রাহিম রুমি বাবু, ডা. শাওন বিন রহমান, ডা. গালিব হাসান, ডা. রাফসান জানি আবির।

লিখিত বক্তব্যে ডা. মেহেদী হাসান বলেন, দেশ এক ক্রান্তিকাল অতিক্রম করছে। গণতন্ত্রের মুক্তির জন্য মুক্তিকামী মানুষ আন্দোলন সংগ্রাম করে চলেছে। এই আন্দোলন সংগ্রামে অংশগ্রহণকারী জাতীয়তাবাদী সৈনিকদের বিনা উষ্কানিতে সরকারের আইনশৃঙ্খলা ও সন্ত্রাসী বাহিনী আক্রমণ করেছে। এই পর্যন্ত আমাদের জাতীয়তাবাদী অনেক নেতাকর্মী এই আক্রমণে নিহত হয়েছে এবং অনেকে গুরুতর জখমপ্রাপ্ত হয়ে পঙ্গুত্ববরণ করেছে। আহত এসকল নেতাকর্মীর চিকিৎসা সেবা প্রাপ্তির ক্ষেত্রে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ও আওয়ামী সন্ত্রাসী বাহিনী প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করেছে। একটি পেশাজীবী সংগঠন হিসেবে ডক্টরস এসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ, ড্যাব ঘরে বসে থাকতে পারে না। এজন্য গণতন্ত্র মুক্তির আন্দোলনের পাশাপাশি সন্ত্রাসী কর্তৃক আহত এ সকল নেতাকর্মীদের চিকিৎসাসেবা নিশ্চিত করতে কেন্দ্রীয়ভাবে ১টি চিকিৎসা সেবা সহায়তা কমিটি গঠন করেছে এবং বিভাগীয় পর্যায়ে ও অনেক ক্ষেত্রে জেলা পর্যায়েও চিকিৎসা সেবা সহায়তা টিম তৈরি করা হয়েছে।তিনি বলেন, ড্যাব মুক্তিকামী মানুষের গণতন্ত্রমুক্তির এই আন্দোলনে ভূমিকা রাখার পাশাপাশি বিনা উস্কানিতে আওয়ামী সন্ত্রাসী আইন শৃঙ্খলা বাহিনী কর্তৃক আহত এই সকল জাতীয়তাবাদী সৈনিকদের যথাযথ চিকিৎসা সেবা নিশ্চিত করতে কাজ করে যাবে।

এই পরিস্থিতি মোকাবেলায় আমরা সাংবাদিক ভাইদের আন্তরিক সহযোগিতা কামনা করছি।

ডা. মো. মেহেদী হাসান বলেন, দেশের যে পরিস্থিতি সেটা চলতে দেওয়া যায় না। আজকে সারাদেশে যে পরিস্থিতি তা অসহনীয়। মানুষ স্বাভাবিকভাবে রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড ও চলাফেরা করতে পারছে না। সরকার যে জায়গায় নিয়ে গেছে সেটা কারও জন্য মঙ্গলজনক নয়। গণতান্ত্রিক পরিবেশ ফিরিয়ে আনার কোনো বিকল্প নেই। এক্ষেত্রে চিকিৎসক সমাজ হিসেবে আমরা ডক্টরস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ড্যাব) বসে থাকতে পারি না। যেভাবে বায়ান্নর ভাষা আন্দোলন, ৬২‘র শিক্ষা আন্দোলন, ৬৯‘র গণঅভ্যুত্থান থেকে সর্বোপরি মহান মুক্তিযুদ্ধ, ৯০‘র স্বৈরাচার বিরোধী আন্দোলনে চিকিৎসকরা ভূমিকা রেখেছেন। আমরা দেশ ও জনগণের স্বার্থে গণতান্ত্রিকভাবে যেকোনো কর্মকাণ্ড পরিচালনা করবো।

তিনি আরো জানান, বিভিন্ন এলাকায় বিএনপির যেসব নেতাকর্মী আহত হয়ে ঢাকা এবং অন্যান্য হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য ভর্তি হয়েছিলেন তাদেরকে বের করে দেওয়া হয়েছে। এমনকি গতরাতে লালবাগের সাবেক কমিশনার মীর আশরাফ আলী আযমকে গ্রেপ্তার করে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। সেখানে ঢামেকে কর্তব্যরত দুইজন চিকিৎসক দেখতে গেলে তাদেরকে অকথ্য ভাষায় কথা বলেছে। মোবাইল চেক করেছে। তাদের ৪৫ মিনিট আটকে রাখা হয়। এটা অত্যন্ত অমানবিক ও সংবিধানের লঙ্ঘন। আমরা বলছি- যেসব নেতাকর্মী চিকিৎসা সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে তাদেরকে ড্যাবের চিকিৎসা সেবা সহায়তা কমিটির পক্ষে প্রয়োজনীয় চিকিৎসা সেবা প্রদান করা হবে।