গ্রামীণ কল্যাণ ভবনে প্রেস ব্রিফিংয়ে ড. ইউনূস

জবরদখল কেন?

জবরদখল কেন?

নিজের অফিসে ঢুকতে পারবো কিনা- এটা এখন বাইরের লোকের এখতিয়ার হয়ে গেছে। আমি দুঃখ-কষ্টে পড়ে গেছি। ভয়ঙ্কর পরিস্থিতিতে আছি। এ ভবনটা আমরা করেছি এটা আমাদের স্বপ্নের বাস্তবায়ন। হঠাৎ ৪ দিন আগে বাইরের লোক এসে জবরদখল শুরু করে আর আমরা বাইরের লোক হয়ে গেলাম।

বৃহস্পতিবার গ্রামীণ কল্যাণ ভবনের সামনে প্রেস ব্রিফিংয়ে এমন মন্তব্য করেন নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ ড. মুহাম্মদ ইউনূস।

তিনি বলেন, পুলিশের কাছে সহযোগীতা চেয়েছি। কিন্তু তারা ঘুরে গিয়ে কোনো অসুবিধা দেখছেন না জানান! জবরদখলের পর আমরা নিজের বাড়িতে ঢুকতে গেলে তারা আমাদের পরিচয় জিজ্ঞাস করছে। নিজের অফিসে ঢুকতে পারবো কিনা এটা এখন বাইরের লোকের এখতিয়ার হয়ে গেছে। যখন দেশের মানুষের কল্যাণে কাজ হচ্ছে তখন এ অবস্থা! দেশবাসীকে বলবো, এভাবে দেশ কীভাবে চলে? আমাদের সব অফিসের প্রধান কার্যালয় এটি। দেশের মানুষের কল্যাণের জন্য এখান থেকে কাজ করা হয়। হঠাৎ কী হলো বাইরের কিছু লোক এসে তা জবরদখল করছে। আমরা কোথায় যাবো, কী করবো? পুলিশ আমাদের কথা শুনছে না।

নোবেলজয়ী এ অর্থনীতিবিদ বলেন, মামলা হোক। আদালতে আমাদের অনেক মামলা চলমান। সেভাবে আমরা মোকাবিলা করবো। কিন্তু জবরদখল কেন! দেশের মানুষের কাছে বিচারের ভার দিলাম। পুলিশের কাছে আমরা সহযোগিতা চেয়ে পাইনি।

ড. ইউনূস বলেন, আমরা জীবনে বহু দুর্যোগ দেখেছি। এমন দুর্যোগ আর কখনো দেখিনি।

তিনি দেশবাসীকে বর্তমান অবস্থার ফিরিস্তি তুলে ধরে বলেন, এভাবে একটা দেশ চলে কি করে? যেখানে নিজের কথা ব্যাখ্যা করার কোনো সুযোগ নেই। শুনেছি, এখানে মিছিল হচ্ছে, ঝাড়ু নিয়ে মিছিল হচ্ছে, কেন হচ্ছে তাও তো বুঝছি না। কবে থেকে ঝাড়ুর যোগ্য হয়ে গেলাম তাও তো বুঝছি না। আমরা তো নিজের ঘরেই আছি, নিজেদের কাজই তো করছি। আমরা যতগুলো প্রতিষ্ঠান গড়ে তুলেছি, সবগুলোর অফিস এখানে। এখানে সবগুলো প্রতিষ্ঠানই দেশের জন্য মানুষের জন্য কাজ করে যাচ্ছে। স্বাস্থ্যসেবা দিয়ে যাচ্ছি সারাদেশে, নার্সিং কলেজ হচ্ছে, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান হচ্ছে। প্রতিষ্ঠানগুলো যখন সফলতার মুখ দেখছে, তখন এমন কি হলো যে, বাইরের কিছু লোক এসে বলবে যে, আপনারা এখান থেকে যান, এটা আমাদের অফিস। এটা আমি বুঝতে পারছি না।

ড. ইউনূস বলেন, দেশবাসীর কাছে আমার ফরিয়াদ, আমরা কোথায় যাব, কী করব? কাকে দুঃখের কথা বলব? পুলিশ তো আমাদের কোনো কথা শুনছে না। তাহলে আমরা কার কাছে যাব তাহলে?

তিনি বলেন, আমরা ভয়ংকর পরিস্থিতিতে আছি। কারণ, আমাদের আটটি প্রতিষ্ঠান জবরদখল হয়ে গেছে। গ্রামীণ ব্যাংক এখন নিজেদের মতো করে এসব প্রতিষ্ঠান চালাচ্ছে। ১২ ফেব্রুয়ারি থেকে গ্রামীণ ব্যাংক ভবনে তালা মেরে রেখেছে। নিজের বাড়িতে অন্য কেউ যদি তালা মারে, তখন কেমন লাগার কথা আপনারাই বলেন। তাহলে দেশে আইন–আদালত আছে কিসের জন্য?