সিলেটের সমাবেশে মির্জা আলমগীর

খালেদা জিয়ার মুক্তি এবং গনতন্ত্র পুনরুদ্ধারের জন্য প্রস্তুত হোন

খালেদা জিয়ার মুক্তি এবং গনতন্ত্র পুনরুদ্ধারের জন্য প্রস্তুত হোন

বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, ‘বাংলাদেশের সবচেয়ে জনপ্রিয় নেত্রী হলেন বেগম খালেদা জিয়া। এই নেত্রী যখন সমাবেশের মঞ্চে দাঁড়ান, তখন চারদিকে একটা নূর ছড়িয়ে পড়ে। এই নূর হচ্ছে স্বাধীনতা ও স্বার্বভৌমত্বের নূর, গণতন্ত্রের নূর, ধর্মের নূর। তিনি বলেন, বেগম খালেদা জিয়া মানেই গণতন্ত্র-গণতন্ত্র মানেই খালেদা জিয়া। এসময় তিনি খালেদা জিয়ার মুক্তি ও গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের আন্দোলনের জন্য নেতা-কর্মীদের প্রস্তুত হওয়ার আহবান জানান।

মঙ্গলবার বিকালে সিলেটে বিএনপির বিভাগীয় সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তির দাবি, বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের বিরুদ্ধে সাজা বাতিল ও অবিলম্বে নতুন জাতীয় নির্বাচনের দাবিতে নগরীর রেজিস্ট্রারি মাঠে এই সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়।

মির্জা আলমগীর বলেন, ‘১২ বছর ধরে জুয়া, ক্যাসিনো চলছে। সরকার ধরতে পারেনি। এখন যখন ধরা পড়ে গেছে, তখন বলছে বিএনপি সরকারের আমল থেকে এটা চলে আসছে। তাহলে ১২ বছর কি করছিল? আঙ্গুল চুষছিল। এখন ঘরে ঘরে ক্যাসিনো। জুয়ায় ভাসছে সারা দেশে।’

সিলেট জেলা বিএনপির সভাপতি আবুল কাহের শামীমের সভাপতিত্বে এবং জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক আলী আহমদ ও মহানগর বিএনপির ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক শামীম সিদ্দিকীর পরিচালনায় সমাবেশে বিপুল সংখ্যক দলীয় নেতাকর্মী উপস্থিত ছিলেন।

সমাবেশে মির্জা আলমগীর বলেন, ‘আওয়ামী লীগের এই সরকার কোনো সরকার নয়। এরা জনগণের ভোটে নির্বাচিত হয়নি। তারা নির্বাচনের আগের দিন রাতে ভোট ডাকাতি করেছে। পুলিশ, বিজিবিসহ রাষ্ট্রীয় যন্ত্রকে কাজে লাগিয়ে ভোট ডাকাতি করেছে আওয়ামী লীগ। বন্দুকের নলের ভয় দেখিয়ে ক্ষমতায় বসে আছে এই সরকার।’

তিনি বলেন, ‘আওয়ামী লীগ সুপরিকল্পিতভাবে, সুচিন্তিতভাবে এই দেশকে একটি ব্যর্থ রাষ্ট্রে পরিণত করছে। তারা একটি একটি করে রাষ্ট্রের সমস্ত প্রতিষ্ঠানগুলো ধ্বংস করে দিচ্ছে। সংসদ নাই, একটি গৃহপালিত বিরোধীদল সেখানে বসে আছে।’

বিচার ব্যবস্থায় ভয়াবহ নৈরাজ্য চলছে উল্লেখ করে বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘সরকার বিচার ব্যবস্থাকে দলীয়করণ করে তাদের প্রয়োজনে, রাজনৈতিক কাজে ব্যবহার করছে। প্রশাসন, পুলিশ প্রশাসন সম্পূর্ণভাবে দলীয়করণ করেছে সরকার।’

তিনি আরো বলেন, ফখরুল বলেন, ‘সরকার গ্যাস, বিদ্যুতের মূল্য বাড়িয়ে জনগণের উপর বোঝা বাড়াচ্ছে। নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের দাম নিয়ন্ত্রণ করতে পারছে না। দেশে মেগা প্রকল্পের নামে মেগা লুটপাট চলছে।’

সিলেটে বিএনপির সমাবেশে প্রশাসনের বাধা প্রদানের অভিযোগ করে তিনি বলেন, ‘গতকাল (সোমবার) তারা হঠাৎ করে সমাবেশ বন্ধ করে দিতে চেয়েছিল কেন? এর কারণ, কয়েকদিন আগে সিলেটে ছাত্রদল মিছিল করেছিল, তাতে হাজার হাজার নেতাকর্মী অংশগ্রহণ করেছিল। এতে তারা ভয় পেয়েছিল।’

সমাবেশে বিএনপি নেতারা অবিলম্বে খালেদা জিয়ার মুক্তি, তারেক রহমানের বিরুদ্ধে দায়েরকৃত সকল মামলা প্রত্যাহার, নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে দ্রুত জাতীয় নির্বাচন এবং ইলিয়াস আলীসহ সকল ‘গুমকৃত’ নেতাকর্মীর সন্ধান দাবি করেন।

সমাবেশে বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ, খন্দকার মোশাররফ হোসেন, গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, ভাইস চেয়ারম্যান ডা. এজেডএম জাহিদ হোসেন, মোহাম্মদ শাহজাহান, বিএনপি চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা ড. এনামুল হক চৌধুরী, এমএ হক, খন্দকার আব্দুল মুক্তাদির, তাহসিনা রুশদীর লুনা, বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক ডা. শাখাওয়াত হাসান জীবন, সহসাংগঠনিক সম্পাদক কলিম উদ্দিন মিলন, প্রচার সম্পাদক শহীদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানি, কেন্দ্রীয় নির্বাহী সদস্য ব্যারিস্টার মীর মোহাম্মদ হেলাল উদ্দিন, মুজিবুর রহমান, শফিউদ্দিন চৌধুরী, মিজানুর রহমান চৌধুরী, সিলেট মহানগর বিএনপির সভাপতি নাসিম হোসাইন প্রমুখ।