শ্বাসরুদ্ধকর পরিস্থিতির মধ্যে বসবাস করছি আমরা: রিজভী

শ্বাসরুদ্ধকর পরিস্থিতির মধ্যে বসবাস করছি আমরা: রিজভী

একটি শ্বাসরুদ্ধকর পরিস্থিতির মধ্যে আমরা বসবাস করছি বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী।

শনিবার ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে এক স্মরণসভায় তিনি এ মন্তব্য করেন। স্মরণসভা চলাকালীন সময়ে পোশাক পরে এক পুলিশ কর্মকর্তা ডায়াসের ছবি উঠান।

এ ঘটনার কঠোর সমালোচনা করে তিনি বলেন, এই মঞ্চে যারা বসে আছেন একজন মন্ত্রী ছিলেন, আরেকজন রাষ্ট্রদূত ছিলেন পোশাক পরা পুলিশ এসে ছবি তুলে নিয়ে যাচ্ছে। একটা ভয়ঙ্কর দুঃশাসন না থাকলে পুলিশ এখানে এসে ছবি তুলে নিয়ে যায়? আমরা এখানে একটি স্মরণসভা করছি, দেশের বরেণ্য নেতৃবৃন্দ এখানে উপস্থিত আছেন অথচ পোশাক পরা পুলিশ এসে ছবি তুলে নিয়ে যায়। একটি শ্বাসরুদ্ধকর পরিস্থিতির মধ্যে আমরা বসবাস করছি বলেই এই ধরনের অসদাচরণ।

শহীদ শাহ মাঈনুল আহসান চৌধুরী পিংকুর ৪৩তম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে এ স্মরণ সভা অনুষ্ঠিত হয়। স্মরণ সভাটির আয়োজন করে শহীদ পিংকু স্মৃতি সংসদ, রাজশাহী।

পুলিশ কর্মকর্তার ঐ ছবি তোলা প্রসঙ্গে রিজভী আরও বলেন, 'আমাদের আয়োজন আমাদের সবকিছু একটা হত্যাকাণ্ডের স্মরণসভা অথচ এখানে পোশাক পরা পুলিশ এসে ছবি তুলে নিয়ে যায়। কারণ এই দুঃশাসনে শেখ হাসিনা নিজে মনে করে বাংলাদেশ তার পৌতৃক জমিদারি, এখানে অন্য কেউ কথা বলবে কেন? এখানে অন্য কেউ রাজনীতি করবে কেন? তাদের সেই অধিকার নেই। ঠিক এই সর্বগ্রাসী মনবৃত্তি না থাকলে একটি স্মরণসভায় পোশাক পরা পুলিশ এসে ছবি তোলার সাহস পেত না।

বিএনপির এই মুখপাত্র বলেন, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা এখন আইনের কাছে দায়বদ্ধ নয়, জনগণের কাছে নয় তারা দায়বদ্ধ শেখ হাসিনার কাছে। শেখ হাসিনা এখন পুলিশকে ব্যক্তিগত প্রাইভেট বাহিনীতে পরিণত করেছে।

রিজভী বলেন, গণতন্ত্রের শক্ত খুঁটি হল তার প্রতিষ্ঠান। প্রতিষ্ঠান গুলো হচ্ছে আদালত, প্রশাসন, নির্বাচন কমিশন, প্রতিষ্ঠান হচ্ছে মিডিয়া। গণমাধ্যমের স্বাধীনতা যে দেশে নিশ্চিত হয় না সেটা গণতান্ত্রিক দেশ না, সেটা নাৎসিবাদী দেশ।

যে দেশে আদালত স্বাধীনভাবে বিচার করতে পারে না সেটা কোনভাবেই গণতান্ত্রিক দেশ না।

তিনি আরও বলেন, নির্বাচন কমিশনের ভাষা যখন হয় সরকারি দলের ভাষা, নির্বাচন কমিশনের বিবৃতি যদি হয় ভোট চোরদের মতো বুঝতে হবে সে দেশের সকল নাগরিক স্বাধীনতাহীনতায় ভুগছে। বরিশালের নির্বাচন নিয়ে প্রধান নির্বাচন কমিশনের বক্তব্যে আমি অবাক হয়েছি। তিনি বললেন, সেখানে সুষ্ঠু, অবাধ নির্বাচন হয়েছে। কিন্তু সেখানে দেখলাম একজন মাওলানা, সে মেয়র প্রার্থী তার দাঁত ভেঙে দেওয়া হয়েছে। মওলানা সাহেব নিহত হলে তারা হয়তো বলতো নির্বাচন কিছুটা সংঘাতপূর্ণ হয়েছে, সহিংসতা হয়েছে। প্রধান নির্বাচন কমিশনারের কথায় তাই মনে হয়। এটাকে বলা হয় ফ্যাসিবাদি শাসন, এটাকেই বলা হয় গণবিরোধী শাসন। স্মরণসভায় বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান, ভাইস চেয়ারম্যান বরকত উল্লাহ বুলু বক্তব্য রাখেন।