একতরফা নির্বাচন বয়কট করেছেন জাতীয় পার্টির আরও ৫ প্রার্থী

একতরফা নির্বাচন বয়কট করেছেন জাতীয় পার্টির আরও ৫ প্রার্থী

একতরফা জাতীয় সংসদ নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ানোর ঘোষণা দিয়েছেন জাতীয় পার্টির (জাপা) আরও ৫ জন প্রার্থী। তারা হলেন সুনামগঞ্জ-১ আসনের (তাহিরপুর, জামালগঞ্জ, ধর্মপাশা, মধ্যনগর) আবদুল মান্নান তালুকদার, হবিগঞ্জ-২ (বানিয়াচং-আজমিরীগঞ্জ) আসনের শংকর পাল, দিনাজপুর-২ (বিরল-বোচাগঞ্জ) আসনের মাহবুব আলম, টাঙ্গাইল-৭ (মির্জাপুর) আসনের জহিরুল ইসলাম ও গাজীপুর-৪ (কাপাসিয়া) সামসুদ্দিন খান।

নির্বাচনী প্রচার শুরু হওয়ার পর ভোট থেকে এখন পর্যন্ত জাপার ১১ জন প্রার্থী সরে দাঁড়ানোর ঘোষণা দিলেন। তাদের কেউ কেউ দলের কেন্দ্রীয় নেতাদের অসহযোগিতা, নিরপেক্ষ নির্বাচন নিয়ে সন্দেহ এবং চাপ ও হুমকির কথা জানিয়েছেন।

তাদের মধ্যে সুনামগঞ্জ-১ আসনের প্রার্থী আবদুল মান্নান তালুকদার মঙ্গলবার সুনামগঞ্জের জামালগঞ্জ উপজেলা প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলন করে ভোট থেকে সরে দাঁড়ানোর ঘোষণা দেন। কেন্দ্রীয় নেতাদের কাছ থেকে সহযোগিতা না পাওয়ার অভিযোগ করে আবদুল মান্নান তালুকদার বলেন, ‘আমি স্পষ্ট বুঝতে পারছি, এটা আসন ভাগাভাগি ও প্রহসনের নির্বাচন।’

একই রকম অভিযোগ করে গতকাল হবিগঞ্জ-২ আসনের জাপার প্রার্থী শংকর পাল এক ভিডিও বার্তার মাধ্যমে ভোট থেকে সরে দাঁড়ানোর ঘোষণা দেন।

নির্বাচন কতটা নিরপেক্ষ হবে, এ নিয়ে সন্দেহের কথা জানিয়ে ভোট থেকে সরে দাঁড়ানোর ঘোষণা দেন দিনাজপুর-২ আসনের জাপার প্রার্থী মাহবুব আলম। তিনি বলেন, ‘বিশেষ করে ভোট গ্রহণ, গণনা এবং ফলাফল ঘোষণা কতখানি নিরপেক্ষ হবে, এই বিষয়ে আমি সন্দিহান।’

মাহবুব আলম দুপুরে বিরল উপজেলা জাতীয় পার্টির কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলন করে এসব কথা বলেন।
চাপ ও হুমকির কথা জানিয়ে নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ানোর কথা জানিয়েছেন গাজীপুর-৪ আসনের জাপার প্রার্থী সামসুদ্দিন খান। তিনি আজ কাপাসিয়া প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলন করে বলেন, ‘বাংলাদেশের বর্তমান রাজনৈতিক অবস্থা ঘোলাটে। বিভিন্ন চাপ ও হুমকি আছে আমার ওপর।’

টাঙ্গাইল-৭ মির্জাপুর আসনে প্রার্থী জহিরুল ইসলাম সরে দাঁড়িয়ে স্বতন্ত্র প্রার্থী মীর এনায়েত হোসেনকে তিনি সমর্থন দিয়েছেন। বিকেলে এক পথসভায় তিনি বলেন, উপজেলা জাতীয় পার্টির সিদ্ধান্ত অনুযায়ী তারা ট্রাক প্রতীকের স্বতন্ত্র প্রার্থীর পক্ষে নির্বাচনী প্রচারণায় অংশ নেবেন।

এর আগে গত রবিবার নির্বাচন নিয়ে প্রহসন, আসন ভাগাভাগির ও একতরফা অভিযোগ তুলে দলটির আরও তিনজন প্রার্থী নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়িয়েছেন। তারা হলেন বরিশাল-২ ও ৫ আসনের ইকবাল হোসেন, বরগুনা-১ আসনের খলিলুর রহমান এবং গাজীপুর-১ ও ৫ আসনের এম এম নিয়াজ উদ্দিন।

তারও আগে নির্বাচন না করার সিদ্ধান্তের কথা জানান নাটোর-৪ (বড়াইগ্রাম-গুরুদাসপুর) আসনের প্রার্থী আলাউদ্দিন মৃধা, সিরাজগঞ্জ-৩ (তাড়াশ-রায়গঞ্জ) আসনের জাকির হোসেন ও নারায়ণগঞ্জ-৪ আসনের ছালাউদ্দিন খোকা মোল্লা।

এ নির্বাচনে জাপার প্রার্থী ছিল ২৬৫ আসনে। এর মধ্যে ২৬টি আসনে আওয়ামী লীগের সঙ্গে দলটির সমঝোতা হয়। এসব আসন থেকে আওয়ামী লীগ প্রার্থী তুলে নিয়েছে। বাকি আসনগুলোয় জাপার প্রার্থীর তেমন প্রচার বা তৎপরতা নেই। এর মধ্যে ১৩টি আসনের ১১ জন প্রার্থী (দুজন প্রার্থী দুটি করে আসনে ছিলেন) ভোট থেকে সরে দাঁড়িয়েছেন।