ভাইয়ের মৃত্যুর কথা লুকিয়ে রেখেই বিশ্বকাপ জয় করলেন আর্চার

ভাইয়ের মৃত্যুর কথা লুকিয়ে রেখেই বিশ্বকাপ জয় করলেন আর্চার

ইংল্যান্ডের ওয়ান্ডার কিড! হ্যাঁ, এখন এই নামেই ডাকা হচ্ছে তাকে। কেরিয়ারের প্রথম বিশ্বকাপ খেলতে নেমে ইংল্যান্ডকে বিশ্বচ্যাম্পিয়ন করেছেন। সেটাও বিশ্বকাপের সুপার ওভারে বল হাতে নিউজিল্যান্ডকে ১৫ রানে আটকে রেখে!

এমন উজ্জ্বল বিশ্বকাপ অভিষেকের মাঝেও ব্যক্তিগত জীবন তোলপাড়, মৃত্যু শোক লুকিয়ে রেখেই বিশ্বকাপে বাজিমাত করেছেন ইংল্যান্ডের পেসার জফরা আর্চার।

ব্যক্তিগত শোকের কথা কাউকে জানাননি জফরা আর্চার। ঘটনাটা ঘটে,৩১ মে সন্ধ্যায়। দক্ষিণ আফ্রিকা বনাম ইংল্যান্ড ম্যাচের পরের দিন। বার্বাডোজের সেন্ট ফিলিপে নিজের বাড়ির সামনে দুই আততায়ীর গুলিতে মৃত্যু হয় আশানসিয়ো ব্ল্যাকম্যানের। যিনি সম্পর্কে আর্চারের চাচাতো ভাই।

টুর্নামেন্ট শেষ হওয়ার পরে বিষয়টা প্রকাশ্যে আনলেন আর্চারের বাবা ফ্রাঙ্ক। বললেন, জফরা আর আশানসিয়ো সমবয়সি। ঘনিষ্ঠও ছিল। মৃত্যুর আগে কয়েক দিন ধরে ওরা মেসেজে কথা বলেছে। জানি এই খবরে কতটা ভেঙে পড়ে ছেলে। কিন্তু তার পরেও খেলা চালিয়ে গেছে।

জফরার মনে হয়েছিল, সব ঘটনার কথা জানলে বারবার এটা নিয়ে কথা হত। যা ক্রিকেট থেকে তার ফোকাস সরিয়ে দিতে পারত। তাই এটা নিয়ে কাউকে কিছু বলবেন না ঠিক করে ফেলেন ইংল্যান্ডের তরুণ পেসার। তার খেলা দেখেও এত বড় মানসিক ধাক্কার আঁচ পাওয়া সম্ভব ছিল না। মিচেল স্টার্ক ও লকি ফার্গুসনের মতো বিশ্বকাপে পাল্লা দিয় উইকেট শিকার করেছেন। ১১ ম্যাচে তার শিকার ২০ উইকেট।

আর্চারের লক্ষ্য ছিল ইংল্যান্ডকে বিশ্বকাপ দিয়ে ইংরেজদের তথাকথিত ‘অভিজাত ক্রিকেটমহলে’ পাকা জায়গা করে নেয়া। তার বাবার কথায়, আট বছর থেকেই ছেলের স্বপ্ন ছিল ইংল্যান্ড দলে খেলার। অনেকেই প্রশ্ন তুলতেন, আমার ছেলে কতটা ব্রিটিশ তা নিয়ে। কিন্তু বিশ্বকাপে আর্চার যেভাবে খেলল, তাতে ইংরেজ তরুণরাই অনুপ্রাণিত হবে।

এখনও ইংল্যান্ডে ক্রিকেট অভিজাতদের খেলা। আর্চারের জন্যই হয়তো ইংল্যান্ডে ক্রিকেট আমজনতার খেলা হয়ে উঠবে। সেমিফাইনালের পরেই আর্চার বাবা ছেলেকে বলেছিলাম, এখন তোমার সময়। নিজের সেরাটা দেওয়ার জন্য ঝাঁপাও। তাহলেই একমাত্র ইংল্যান্ডের ক্রিকেট-নায়করা বুঝতে পারবে তোমার মূল্য।

এমজে/