দিন শেষে শ্রীলংকার ২২২ রান

দিন শেষে শ্রীলংকার ২২২ রান

ঢাকা, ৮ ফেব্রুয়ারি (জাস্ট নিউজ) : দীর্ঘদিন পর টেস্টে আব্দুর রাজ্জাকের প্রত্যাবর্তনটা হল রাজকীয়। দুর্দান্ত বোলিং করলেন তিনি। তার রঙিন প্রত্যাবর্তনের দিনে দারুণ বোলিং করলেন তাইজুল ইসলাম ও মোস্তাফিজুর রহমান। গোটা ইনিংসেই রাজ্জাককে যোগ্য সমর্থন দিয়ে গেলেন তারা।

আর না বললেও চলে, তিন বাঁহাতি বোলারের স্পিন ও সুইং বিষে নীল হয়েছে শ্রীলংকা। ঢাকা টেস্টের প্রথম ইনিংসে ২২২ রানে গুটিয়ে গেছে সফরকারীরা। ৪ উইকেট শিকার করে লম্বা সময় ধরে উপেক্ষিত থাকার জবাব দিয়েছেন রাজ্জাক। সমানসংখ্যক উইকেট ঝুঁলিতে ভরে নিজের সামর্থ্যের প্রমাণ দিয়েছেন তাইজুল। আর ২ উইকেট নিয়ে ভেলকি দেখিয়েছেন মোস্তাফিজ।

বৃহস্পতিবার মিরপুরে টস জিতে প্রথমে ব্যাটিং নেন শ্রীলংকা অধিনায়ক দিনেশ চান্দিমাল। ব্যাটিং করতে নেমে শুরুতেই হোঁচট খায় সফরকারীরা। দলীয় ১৪ রানে লিটন দাসের স্ট্যাম্পিং বানিয়ে দিমুথ করনারতেœকে ফিরিয়ে চমক দেখান অভিজ্ঞ স্পিনার আব্দুর রাজ্জাক। এ নিয়ে চার বছর পর জাতীয় দলের হয়ে খেলতে নেমে ভালো কিছুর আভাস দেন তিনি।

এর পর ধনাঞ্জয়া ডি সিলভাকে নিয়ে শুরুর ধাক্কা সামলে উঠে এগিয়ে যাচ্ছিলেন কুশল মেন্ডিস। ধীরে ধীরে জমাট বেঁধে উঠছিল তাদের জুটি। বাংলাদেশকে চোখ রাঙাচ্ছিলেন তারা। এ পরিস্থিতিতে ডি সিলভাকে (১৯) ফিরিয়ে কার্যকরী ব্রেক থ্রু এনে দেন তাইজুল ইসলাম। দলীয় ৬২ রানে গত ম্যাচে সেঞ্চুরি করা ব্যাটসম্যানকে স্লিপে সাব্বির রহমানের ক্যাচ বানিয়ে ফেরান তিনি। এতে ভাঙে ৪৭ রানের জুটি।

পরে দানুস্কা গুনাথিলাকাকে নিয়ে দলকে এগিয়ে নেয়ার চেষ্টা করেন কুশল মেন্ডিস। তবে তাদের বেশি দূর এগোতে দেননি রাজ্জাক। দলীয় ৯৬ রানে লংকান শিবিরে জোড়া আঘাত হেনে চমক অব্যাহত রাখেন তিনি। পর পর দুই বলে ফিরিয়ে দেন গুনাথিলাকা ও অধিনায়ক দিনেশ চান্দিমালকে। এতে বিপর্যয়ে থেকে লাঞ্চ বিরতিতে যান অতিথিরা।

লাঞ্চ থেকে ফিরলেও শনির দশা কাটেনি শ্রীলংকার। একের পর এক টপ অর্ডার ব্যাটসম্যান ফিরলেও ভরসা হয়ে টিকেছিলেন মেন্ডিস। অবেশেষে দলীয় ১০৯ রানে বোল্ড করে ফিরিয়ে পথের কাঁটা সরান রাজ্জাক। ফলে লংকানদের ওপর নেমে আসে চরম বিপর্যয়। ফেরার আগে ৯৮ বলে ১০ চার ও ১ ছক্কায় ৬৮ রানের বীরোচিত ইনিংস খেলেন মেন্ডিস।

এ বিপর্যয়ের মধ্যে নিরোশান ডিকভেলাকে বোল্ড করে ফিরিয়ে শ্রীলংকার টুঁটি চেপে ধরেন তাইজুল। এ অবস্থায় দিলরুয়ান পেরেরাকে নিয়ে প্রতিরোধ গড়ার চেষ্টা করেন রোশেন সিলভা। তারা এগোচ্ছিলেনও বেশ। তবে দলীয় ১৬২ রানে পেরেরাকে ফিরিয়ে সেই প্রতিরোধ গুঁড়িয়ে দেন এ বাঁহাতি স্পিনার।

পেরেরার বিদায়ের পর আকিলা ধনাঞ্জয়াকে নিয়ে ফের প্রতিরোধ গড়ে তোলার চেষ্টা করেন রোশেন। ভালোই এগোচ্ছিলেনও তারা। মাথাব্যথার কারণ হয়ে দাঁড়ায় এ জুটি। দলীয় ২০৫ রানে মুশফিকের ক্যাচ বানিয়ে আকিলাকে (২০) ফিরিয়ে টাইগারদের মাথাব্যথা প্রশমন করেন মোস্তাফিজুর রহমান।

এদিন দারুণ বোলিং করছিলেন মোস্তাফিজ। তবে উইকেটের দেখা মিলছিল না। অবশেষে কাঙ্ক্ষিত উইকেট পাওয়ার পর ফের শিকার পান তিনি। অল্প সময়ের ব্যবধানে সেই মুশফিকের ক্যাচ বানিয়ে রঙ্গনা হেরাথকে ফেরান কাটার মাস্টার।

এতে শ্রীলংকার গুটিয়ে যাওয়া সময়ের ব্যাপার হয়ে দাঁড়ায়। শেষ পর্যন্ত ২২২ রানে অলআউট হয় তারা। রোশেনকে ফিরিয়ে প্রতিপক্ষ শিবিরে শেষ পেরেক ঠুকেন তাইজুল। ফেরার আগে ১২৪ বলে ৩ চার ও ১ ছক্কায় ৫৬ রানের লড়াকু ইনিংস খেলেন মিডল অর্ডার ব্যাটসম্যান।

(জাস্ট নিউজ/জেআর/১৬১০ঘ.)