দুই দফায় বৃষ্টির হানায় হিসাব নিকাশ গেল উল্টে। দ্বিতীয় টি টোয়েন্টি ম্যাচে জিততে হলে বাংলাদেশকে করতে হবে ১৪৮ রান, ওভার ১৬। টার্গেট নির্ধারণ করতে গিয়েও যেন গলদঘর্ম হতে হলে ম্যাচ রেফারি জেফ ক্রোকে।
এর আগে টস হেরে ব্যাট করতে নেমে দুই দফায় বৃষ্টির কবলে পড়ে নিউজিল্যান্ডের ব্যাটিং। প্রথম ১২.২ ওভারে। দ্বিতীয় দফা ১৭.৫ ওভারে। এরপর বাকি ওভারগুলো আর হয়নি। নিউজিল্যান্ডের রান ৫ উইকেটে ১৭৩ রান। ডার্ক ওয়ার্থ লুইস পদ্ধতিতে বাংলাদেশের জয়ের টার্গেট দাঁড়ায় ১৬ ওভারে ১৭০ রান।
টস হেরে আগে ব্যাট করতে নেমে শুরু থেকে রান বাড়াতে থাকেন কিউই ওপেনার গাপটিল ও মারকুটে ফিন অ্যালেন। শুরুতে অ্যালেনের ক্যাচ ড্র। ধরতে পারেননি মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ। তাসকিনের বলে ছক্কা হাকাতে গিয়ে ৯৫ মিটার উঁচুতে বল পাঠান অ্যালেন। ঠাওর করতে পারেননি মাহমুদউল্লাহ। ফসকে যায় ক্যাচ।
জীবন পেয়েও তা কাজে লাগাতে পারেননি অ্যালেন। তাকে ফেরান তাসকিনই। ৩.৬ ওভারে স্কয়ার লেগে অ্যালেনের ক্যাচ তালুবন্দী করেন মোহাম্মদ নাঈম। ১০ বলে ১৭ রান করেন তিনি।
এরপর বিদায় নেন দুর্ধর্ষ মার্টিন গাপটিল। সাইফউদ্দিনের বলে শর্ট ফাইন লেগে দারুণ শট খেলেছিলেন গাপটিল। কিন্তু বাজপাখির মতো ঝাপিয়ে এক হাতে ক্যাচ নেন তাসকিন। অবিশ্বাস আর হতাশার দোলাচালে গাপটিল ফেরেন সাজঘরে ১৮ বলে ২১ রানে।
দলীয় ৫৫ রানে তৃতীয় সাফল্য পায় বাংলাদেশ শরিফুলের হাত ধরে। ডেভন কনওয়ের স্কয়ার লেগে ক্যাচ নেন মোহাম্মদ মিঠুন। ৯ বলে ১৫ রানে ফেরেন কনওয়ে। ওয়ানডে ক্যারিয়ারে প্রথম উইকেটের দেখা পান শরিফুল। নিউজিল্যান্ডের দলীয় রান তখন ৫৫। উইকেট নেই তিনটি।
উইল ইয়ং ও গ্লেন ফিলিপস এরপর দলকে এগিয়ে নিতে থাকেন। দলীয় ৯৪ রানের মাথায় দৃশ্যপটে মাহেদী হাসান। ফেরান ইয়ংকে।
ইয়াংকে বেরিয়ে আসতে দেখেই স্টাম্পের বাইরে একটু টেনে লেংথ বল করেন মেহেদী। ইয়াং পারেননি ব্যাটে-বলে করতে। স্টাম্পিংয়ের সুযোগ কাজে লাগাতে বেগ পেতে হয়নি লিটন দাসকে। ১৭ বলে ১৪ করে আউট ইয়াং। ইয়াংকে হারানোর ওভারেই মেহেদীকে গ্যালারিতে পাঠিয়ে দলকে একশ’ পার করালেন ফিলিপস। ১২ ওভার শেষে নিউজিল্যান্ড ৪ উইকেটে ১০১।
১৩তম ওভারে হানা দেয় বৃষ্টি। ১২.২ ওভারে নিউ জিল্যান্ডের রান তখন ৪ উইকেটে ১০২। বৃষ্টির কারণে খেলা বন্ধ থাকে ২৫ মিনিট। এরপর আবার শুরু লড়াই।
দলীয় ১১১ রানে পঞ্চম উইকেট হারায় নিউজিল্যান্ড। চমক মেহেদী হাসানের। মেহেদীর ঝুলিয়ে দেয়া বলে একটু বেরিয়ে এসে মিড অফ বা কাভার দিয়ে খেলতে চেয়েছিলেন বাঁ হাতি চাপম্যান। কিন্তু বল ছিল অনেক ধীরগতির, টাইমিং তাই হয়নি ঠিকমতো। সহজ ক্যাচ লাফ দিয়ে তালুবন্দী করেন মেহেদীই। ৮ বলে ৭ করে আউট চাপম্যান।
ফিলিপস এগিয়ে গেছেন নিজের মতো। মেহেদীর ফুল টসকে কাজে লাগিয়ে একটি ছক্কা, পরের বলে দুই রান নিয়ে ফিলিপস পৌঁছে যান ফিফটিতে। ২৭ বলে ছুঁলেন ফিফটি, টি-টোয়েন্টিতে তার দ্বিতীয় ফিফটি। সেঞ্চুরিও আছে একটি।
ম্যাচের শেষের দিকে আবার হানা দেয় বৃষ্টি। নিউজিল্যান্ডের রান থকন ৫ উইকেটে ১৭৩। ওভার ১৭.৫। এরপর আর বাকি ওভার গুলো হয়নি। ৩১ বলে ৫৮ রানে ফিলিপস ও ১৬ বলে ৩৪ রানে মিচেল থাকেন অপরাজিত। বাংলাদেশের হয়ে মেহেদী দুটি, নাসুম, সাইফউদ্দিন, তাসকিন ও শরিফুল নেন একটি করে উইকেট।
দ্বিতীয় টি-টোয়েন্টিতে বাংলাদেশ দলে একটি পরিবর্তন। বাদ পড়েছেন পেসার মোস্তাফিজুর রহমান। তার পরিবর্তে দলে এসেছেন তাসকিন আহমেদ। এই ম্যাচে নেই মুশফিকুর রহীম।
প্রথম টি টোয়েন্টিতে বাংলাদেশ হেরেছিল ৬৬ রানের ব্যবধানে। আগে ব্যাট করতে নেমে নিউজিল্যান্ড করেছিল ২১০ রান। জবাবে বাংলাদেশের ইনিংস শেষ হয়েছিল ১৪৪ রানে।
এমজে/