পুতিনকে ‘যুদ্ধাপরাধী’ বলায় ভীষণ ক্ষিপ্ত ক্রেমলিন

পুতিনকে ‘যুদ্ধাপরাধী’ বলায় ভীষণ ক্ষিপ্ত ক্রেমলিন

রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনকে 'যুদ্ধাপরাধী' বলেছেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। এই পরিপ্রেক্ষিতে ভীষণ ক্ষিপ্ত হয়েছে ক্রেমলিন।

বৃহস্পতিবার (১৭ মার্চ) ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি এ তথ্য জানিয়েছে।

প্রতিবেদনে বলা হয়, ইউক্রেনে এক বিলিয়ন ডলারের অস্ত্র পাঠিয়ে পুতিনকে 'যুদ্ধাপরাধী' আখ্যা দিলেন বাইডেন।

মস্কো এর প্রতিবাদে বলেন, বাইডেনের এমন মন্তব্যকে 'অগ্রহণযোগ্য ও ক্ষমার অযোগ্য'। তাদের (যুক্তরাষ্ট্র) বোমার আঘাতেও বিশ্বজুড়ে লাখ লাখ মানুষ নিহত হয়েছে।

এর আগে ইউক্রেনে সামরিক অভিযানের কারণে রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনকে ‘যুদ্ধাপরাধী’ মনে করেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। বুধবার (১৬ মার্চ) হোয়াইট হাউসে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, ইউক্রেনে যুদ্ধাপরাধ করছেন পুতিন। আমি মনে করি তিনি একজন যুদ্ধাপরাধী।

সিএনএনের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এর মধ্য দিয়ে ইউক্রেন ইস্যুতে পুতিনের ব্যাপারে নিজের আগের অবস্থান থেকে সরে আসলেন বাইডেন। এর আগে পুতিনের ইউক্রেন অভিযানের কঠোর সমালোচনা করলেও যুদ্ধাপরাধ প্রশ্নে বাইডেন ও মার্কিন সরকারের অন্যান্য কর্মকর্তারা চুপই ছিলেন।

বাইডেনের মন্তব্যের ব্যাপারে হোয়াইট হাউস প্রেস সচিব জেন সাকি বলেন, ‘প্রেসিডেন্ট বাইডেন সঠিক মন্তব্যই করেছেন। তিনি হৃদয় থেকেই এ কথা বলেছেন।’

এর আগে মঙ্গলবারই (১৫ মার্চ) পুতিনকে ‘যুদ্ধাপরাধ’ হিসাবে আখ্যায়িত করে একটি নিন্দা প্রস্তাব পাস করেছে মার্কিন সিনেট। এ সময় কংগ্রেসের সব সদস্য ঐক্যবদ্ধভাবে এই প্রস্তাবের পক্ষে ভোট দেয়। সিনেটে ওই নিন্দা প্রস্তাবটি উত্থাপন করেন রিপাবলিকান সিনেটর লিন্ডসে গ্রাহাম। উভয়পক্ষের সিনেট সদস্যরা তা সমর্থন করেন।

ডেমোক্রেটিক সিনেটের সংখ্যাগরিষ্ঠ নেতা চাক শুমার ভোট প্রদানের আগে তার বক্তৃতায় বলেন, ‘এই সভায় অমরা ডেমোক্র্যাট ও রিপাবলিকানরা একত্রিত হয়ে বলেছি, পুতিন ইউক্রেনের জনগণের বিরুদ্ধে সংঘটিত নৃশংসতার জন্য জবাবদিহি থেকে এড়াতে পারবেন না।’

এদিকে ইউক্রেনে অবিলম্বে সামরিক অভিযান বন্ধ করতে রাশিয়াকে নির্দেশ দিয়েছেন আন্তর্জাতিক বিচার আদালত (আইসিজে)। রাশিয়ার বিরুদ্ধে ইউক্রেনের গণহত্যার অভিযোগের শুনানিতে বুধবার আদালত এ আদেশ দেন। বিচারক বলেন, 'রুশ ফেডারেশন ইউক্রেনের ভূখণ্ডে গত ২৪ ফেব্রুয়ারি যে সামরিক অভিযান শুরু করেছে, অবিলম্বে তা বন্ধ করতে হবে।'

বিচারকরা আরও বলেন, 'রাশিয়াকে অবশ্যই নিশ্চিত করতে হবে যে তার নিয়ন্ত্রণাধীন বা মস্কো সমর্থিত অন্যান্য বাহিনী যেন সামরিক অভিযান চালাতে না পারে।' শুনানিতে ইউক্রেন জানিয়েছে যে পূর্ব ইউক্রেনে গণহত্যার কোনো হুমকি নেই।

১৯৪৮ সালের জাতিসংঘের গণহত্যা কনভেনশনে দুই দেশই সই করেছে। তাই তারা কেউই একটি গণহত্যাকে ঠেকাতে আরেকটি গণহত্যা চালাতে পারে না বলে ইউক্রেনের পক্ষ থেকে উল্লেখ করা হয়। আদেশের পর রাশিয়া একটি লিখিত আবেদনে জানিয়েছে যে আইসিজে কোনো সিদ্ধান্ত চাপিয়ে দিতে পারে না।