‘হামলার মধ্য দিয়ে আ. লীগের সন্ত্রাসী চরিত্র উদ্ভাসিত হয়েছে’

‘হামলার মধ্য দিয়ে আ. লীগের সন্ত্রাসী চরিত্র উদ্ভাসিত হয়েছে’

সরকার দেশে নৈরাজ্য সৃষ্টির পায়তারা করছে বলে অভিযোগ করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

আজ সোমবার দুপুরে রাজধানীর নয়াপল্টনে কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে সারাদেশে উপজেলা পর্যায়ে দলের ঘোষিত চলমান কর্মসূচিতে ক্ষমতাসীনদের হামলার ঘটনা তুলে ধরে তিনি এই অভিযোগ করেন।

মির্জা ফখরুল বলেন, 'সারাদেশে এতোদিন ধরে আওয়ামী সন্ত্রাসীরা যে ত্রাস সৃষ্টি করেছে, এখন তাতে তারা একটা নতুন মাত্রা যোগ করেছে, নেতা-কর্মীদের বাসা-বাড়িতে হামলা শুরু করেছে। বিভিন্ন সভা-সমাবেশে, দলীয় কার্যালয়ে, ব্যবসায়ী প্রতিষ্ঠানে আওয়ামী লীগ-যুবলীগ-ছাত্রলীগের সশস্ত্র সন্ত্রাসীরা হামলা চালাচ্ছে, মিথ্যা মামলা দিচ্ছে, নেতা-কর্মীদের খুন-জখম করছে।'

'একবারও তারা (ক্ষমতাসীন দল) চিন্তা করছে না, যে কাজটা তারা শুরু করেছে, এটা সমগ্র দেশে নৈরাজ্য সৃষ্টি করবে। প্রকৃতপক্ষে এই আন্দোলনে বর্তমান অবৈধ সরকার সম্পূর্ণভাবে ভীত হয়ে, সন্ত্রস্ত হয় আবার তাদের সেই দমননীতি চালিয়ে যেতে শুরু করেছে', বলেন তিনি।

বিএনপি মহাসচিব বলেন, 'কিছুদিন আগে অবৈধ প্রধানমন্ত্রী বললেন যে, কাউকেই গ্রেপ্তার করা হবে না, সভা-সমিতি সব করতে দেওয়া হবে।'

'তারা কথা বলবেন এক, আর কাজ করবেন আরেক। এখন দেখা যাচ্ছে যে, ঠিক উল্টো কাজটি তারা এখন করছেন। এটাই আওয়ামী লীগের চরিত্র। তাদের যে সন্ত্রাসী চরিত্র সেটা আরও একবার এসব ঘটনার মধ্য দিয়ে দেশের জনগণের কাছে উদ্ভাসিত হয়েছে। এভাবেই তারা এ দেশে গণতন্ত্রকে ধ্বংস করেছেন, বাংলাদেশকে একটা ব্যর্থ রাষ্ট্রে পরিণত করেছেন', যোগ করেন তিনি।

মির্জা ফখরুল বলেন, 'আমাদের ঘোষিত উপজেলা-থানা-পৌরসভা-ইউনিয়ন পর্যায়ের কর্মসূচি আগামী ১০ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত চলবে। যেসব উপজেলা ও থানায় কর্মসূচি হয়নি সেগুলোতে এই বিক্ষোভ কর্মসূচি অনুষ্ঠিত হবে। এরপর আমরা পরবর্তী কর্মসূচি ঘোষণা করবো।'

জ্বালানি তেলের মূল্যবৃদ্ধি ও বিদ্যুতের লোডশেডিংয়ের প্রতিবাদে গত ২২ আগস্ট থেকে উপজেলা-থানা-পৌরসভা-ইউনিয়ন পর্যায়ে বিক্ষোভ সমাবেশ কর্মসূচি পালন করে বিএনপি।

সংবাদ সম্মেলনে যশোর, মুন্সিগঞ্জ, টাঙ্গাইল, ফেনী, সাতক্ষীরা, পটুয়াখালী, চট্টগ্রাম, বাগেরহাট, খাগড়াছড়ি, রাঙ্গামাটি, ঠাকুরগাঁও, লক্ষ্মীপুর, ময়মনসিংহ, মাগুরা, গাইবান্ধা, বরিশাল, খুলনা, নেত্রকোণা, ব্রাক্ষণবাড়িয়া, নরসিংদী, রাজশাহী, নোয়াখালী, ভোলা, নাটোর, কুমিল্লা, নড়াইলের বিভিন্ন উপজেলায় গত ২২ আগস্ট থেকে চলমান বিক্ষোভ সমাবেশে আওয়ামী লীগ ও পুলিশি হামলার ঘটনা তুলে ধরেন বিএনপি মহাসচিব।

তিনি বলেন, 'এ পর্যন্ত এসব হামলায় আহত হয়েছেন সাড়ে ৭ শতাধিক নেতা-কর্মী। মিথ্যা মামলা দায়ের করা হয়েছে কয়েক হাজার নেতা-কর্মীর নামে। মোট গ্রেপ্তারের সংখ্যা এখন পর্যন্ত ৬০ জনের অধিক।'

সংবাদ সম্মেলনে বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা কাউন্সিলের সদস্য আবদুস সালাম, জ্যেষ্ঠ যুগ্ম-মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী, সাংগঠনিক সম্পাদক ফজলুল হক মিলন, আবদুস সালাম আজাদ, কেন্দ্রীয় নেতা মীর সরফত আলী সপু, আবুল কালাম আজাদ, আসাদুল করিম, শাহিন, তাইফুল ইসলাম টিপু, সাইফুল আলম নীরব এবং শ্রমিক দলের আনোয়ার হোসাইন প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।