পাকিস্তান-ইরানকে সংযত থাকার আহ্বান জাতিসংঘ ও যুক্তরাষ্ট্রের

পাকিস্তান-ইরানকে সংযত থাকার আহ্বান জাতিসংঘ ও যুক্তরাষ্ট্রের

ইরান ও পাকিস্তানের প্রতি সংযম প্রদর্শনের আহ্বান জানিয়েছে জাতিসংঘ ও যুক্তরাষ্ট্র। একে অপরের ভূখণ্ডে পাল্টাপাল্টি হামলা নিয়ে দুই দেশের মধ্যে চলমান উত্তেজনার মধ্যে গতকাল বৃহস্পতিবার এ আহ্বান জানানো হয়।

গত মঙ্গলবার পাকিস্তানের বেলুচিস্তানে প্রথম হামলা চালায় তেহরান। এতে অন্তত দুই শিশু নিহত হয়। এর প্রতিক্রিয়ায় ইরানের রাষ্ট্রদূতকে বহিষ্কার করে পাকিস্তান। তেহরান থেকে পাকিস্তানের রাষ্ট্রদূতকেও প্রত্যাহার করা হয়। এরপর গতকাল বৃহস্পতিবার ইরানের সিস্তান-বেলুচিস্তান প্রদেশে পাল্টা হামলা চালায় পাকিস্তান। ইরানের সরকারি বার্তা সংস্থা আইআরএনএর খবরে বলা হয়েছে, এ হামলায় কমপক্ষে ৯ জন নিহত হয়েছেন। তাঁদের বেশির ভাগই নারী ও শিশু।

পাকিস্তান ও ইরান—এই দুই প্রতিবেশী দেশের মধ্যে এমন একসময় পাল্টাপাল্টি হামলার ঘটনা ঘটছে, যখন ইসরায়েল-ফিলিস্তিন সংঘাত ঘিরে মধ্যপ্রাচ্যজুড়ে উত্তেজনা বাড়ছে।

এ পটভূমিতে গতকাল বৃহস্পতিবার জাতিসংঘের প্রধান আন্তোনিও গুতেরেস পাকিস্তান ও ইরান সরকারকে ‘সর্বোচ্চ সংযম প্রদর্শনের’ আহ্বান জানান।

গুতেরেসের মুখপাত্র স্টিফেন দুজারিক বলেন, সম্প্রতি ইরান ও পাকিস্তানের পাল্টাপাল্টি সামরিক হামলা এবং দুই পক্ষের প্রাণহানির ঘটনা নিয়ে মহাসচিব গভীরভাবে উদ্বিগ্ন।

এদিকে হোয়াইট হাউসের জাতীয় নিরাপত্তা পরিষদের মুখপাত্র জন কারবি বলেন, যুক্তরাষ্ট্র ‘অত্যন্ত নিবিড়ভাবে’ পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করছে। পাকিস্তানের কর্মকর্তাদের সঙ্গেও যোগাযোগ অব্যাহত আছে।

সাংবাদিকদের কারবি বলেন, ‘দুই দেশই অস্ত্রশস্ত্রে সমৃদ্ধ দেশ। আমরা চাই না উত্তেজনা আরও বাড়ুক।’

মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের মুখপাত্র ম্যাথু মিলারের বক্তব্যেও একই কথা প্রতিধ্বনিত হয়েছে। তিনি বলেন, ‘যেকোনোভাবে, যেকোনো রূপে, যেকোনো আকারে এ উত্তেজনা বাড়তে দেওয়াটা ঠিক হবে না বলে আমরা মনে করি। ন্যাটোভুক্ত দেশ না হলেও পাকিস্তান যুক্তরাষ্ট্রের অত্যন্ত মিত্র দেশ। তা অপরিবর্তিত থাকবে। তবে এ ক্ষেত্রে (পাল্টাপাল্টি হামলা) আমরা সংযত থাকার জন্য আহ্বান জানাচ্ছি।’

সিস্তান-বেলুচিস্তান প্রদেশের উপগভর্নর আলিরেজা মারহামাতির বরাতে আইআরএনএর প্রতিবেদনে বলা হয়, ভোর সাড়ে চারটার দিকে সারাভান শহরের কাছের একটি গ্রামে তিনটি ড্রোন হামলা হয়। এতে চারটি ঘরবাড়ি ধ্বংস হয়ে গেছে।

ইরানের সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত ছবিতে দেখা গেছে, হামলায় ঘরবাড়ি মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। একটি ভিডিওতে দেখা গেছে, এক জায়গায় গর্ত হয়ে গেছে। তা দেখার জন্য সেখানে লোকজন ভিড় করেছেন।

মারহামাতি বলেন, নিহত ব্যক্তিদের সবাই পাকিস্তানি। তাঁরা কেন ইরানের গ্রামে অবস্থান করছিলেন, তা নিশ্চিত হতে তদন্ত চলছে।

পাকিস্তানের সেনাবাহিনীর দাবি, বালুচ বিচ্ছিন্নতাবাদীদের লক্ষ্য করে হামলা চালিয়েছে তারা। পাকিস্তানে হামলা প্রসঙ্গে ইরানও বলেছে, তারা ‘সন্ত্রাসীদের ঘাঁটি’কে হামলার লক্ষ্যবস্তু করেছে।