মিয়ানমারে সেনাবাহিনীর হেলিকপ্টারে গুলি, ব্রিগেডিয়ার-জেনারেলসহ ৪ সামরিক কর্মকর্তা নিহত

মিয়ানমারে সেনাবাহিনীর হেলিকপ্টারে গুলি, ব্রিগেডিয়ার-জেনারেলসহ ৪ সামরিক কর্মকর্তা নিহত

থাই সীমান্তে সেনাবাহিনীর একটি হেলিকপ্টার অবতরণের প্রস্তুতিকালে তাতে স্নাইপাররা গুলি করেছে। এতে একজন ব্রিগেডিয়া-জেনারেল সহ সেনাবাহিনীর সিনিয়র অন্য তিনজন সদস্য নিহত হয়েছেন। সেনাবাহিনীর সূত্রকে উদ্ধৃত করে এ খবর দিয়েছে অনলাইন ডন। এতে বলা হয়, এ ঘটনা ঘটে সোমবার থাইল্যান্ড সীমান্তের কাছে মায়াবতী শহরের কাছে থিঙ্গানিনাউঙ্গ শহরে।

নিহতরা হলেন ব্রিগেডিয়ার জেনারেল আই মিন নাউং, তার ব্যক্তিগত নিরাপত্তা কর্মকর্তা ও দু’জন পাইলট। সূত্র বিস্তারিত না জানিয়ে বলেছেন, স্নাইপাররা ওই হেলিকপ্টারে গুলি করার পর প্রথমে তারা আহত হন। তার মধ্যে কিছুক্ষণ পরে মারা যান ব্রিগেডিয়ার জেনারেল নাউং।

সাম্প্রতিক সময়ে মিয়ানমার পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে পড়েছে। সেনাবাহিনীর সঙ্গে জাতিগত বিদ্রোহীদের লড়াই তীব্র আকার ধারণ করেছে। সামরিক জান্তার নিয়ন্ত্রণ থেকে বহু এলাকা তারা কেড়ে নিয়েছে। সর্বশেষ বাংলাদেশ সীমান্তের কাছে রাখাইন রাজ্যে আরাকান আর্মিদের সঙ্গে সেনাবাহিনীর তীব্র লড়াই হচ্ছে বলে বিভিন্ন মিডিয়া খবর দিয়েছে। সোমবারও সীমান্তের ওপাড়ে ভারি গোলাগুলির শব্দ পাওয়া যায়।

ফলে সীমান্ত এলাকায় কমপক্ষে ৬টি মাদ্রাসা ও স্কুল বন্ধ করে দেয় বাংলাদেশ। আরও উল্লেখ করা প্রয়োজন যে, সামরিক বাহিনী জাতিগত এই বিদ্রোহীদের সামনে দাঁড়াতে পারছে না। এর প্রেক্ষিতে সামরিক জান্তা সরকারের ভারপ্রাপ্ত প্রেসিডেন্ট মিন্ট শয়ে সম্প্রতি বলেছেন, বর্তমান পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করতে না পারলে মিয়ানমার ভেঙে টুকরো টুকরো হয়ে যেতে পারে।

অন্যদের কথা বাদই দেয়া যেতে পারে, কিন্তু যখন ভারপ্রাপ্ত প্রেসিডেন্ট এমন কথা বলেন- তখন পরিস্থিতি কি ভয়াবহ তা সহজেই অনুমেয়। নিয়মিত মায়াবতীর আশপাশে এবং মিয়ানমারের বিভিন্ন এলাকায় বিদ্রোহী জাতিগোষ্ঠীর জোট এবং মিত্র পিপলস ডিফেন্স ফোর্সেস গ্রুপের সঙ্গে তীব্র লড়াই চলছে সেনাদের।

২০২১ সালের ১লা ফেব্রুয়ারি সামরিক অভ্যুত্থান ঘটানোর মাধ্যমে অং সান সুচিকে ক্ষমতাচ্যুত করে সামরিক জান্তা অং মিন হ্লাইং। তারপর থেকেই এসব বিদ্রোহীর বিরুদ্ধে থেমে থেমে লড়াই চলছিল। কিন্তু সম্প্রতি তা ভয়াবহ আকার ধারণ করেছে। এখন পরিস্থিতি এমন হয়েছে যে, যেকোনো সময় ক্ষমতা হারাতে পারে সামরিক জান্তা। ফলে অভ্যুত্থানের পর এত বড় চ্যালেঞ্জের মুখে তারা এর আগে পড়েনি। এ অবস্থায় আসিয়ান থেকে একটি বিবৃতি দেয়া হয়েছে। তাতে একজন বিশেষ দূতকে দায়িত্ব দেয়া হয়েছে সংশ্লিষ্ট সব পক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করতে এবং মিয়ানমারের জনগণের সমস্যা সমাধানের চেষ্টা করতে। নতুন দায়িত্বপ্রাপ্ত এই দূত হলেন আলোনকেও কিত্তিখোউন। তিনি এ মাসের শুরুর দিকে মিয়ানমার সফর করে সামরিক জান্তার সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছেন। তবে আসিয়ান বা লাওস কোনো পক্ষই ওই সফরের বিস্তারিত জানায়নি। ওই দূত সামরিক জান্তাবিরোধী কোনো গ্রুপের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছেন কিনা তাও স্পষ্ট জানা যায়নি।