ট্রাম্পের বিরুদ্ধে রায় স্থগিতের আবেদন সুপ্রিম কোর্টে

ট্রাম্পের বিরুদ্ধে রায় স্থগিতের আবেদন সুপ্রিম কোর্টে

নিম্ন আদালতের রায়কে স্থগিত করার জন্য সুপ্রিম কোর্টের কাছে আবেদন করেছেন যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্প। এর আগে একটি নিম্ন আদালত ২০২০ সালের নির্বাচন সংক্রান্ত মামলায় রায়ে বলেছিলেন, ট্রাম্প বিচারের ক্ষেত্রে প্রেসিডেন্সিয়াল দায়মুক্তি পাবেন না। সেই আদেশকে স্থগিত করার জন্য তিনি সুপ্রিম কোর্টে আবেদন করেছেন। ওই নির্বাচনে ট্রাম্প হস্তক্ষেপ করেছিলেন, নির্বাচনের ফল পাল্টে দেয়ার চেষ্টা করেছিলেন, ২০২১ সালের ৬ই জানুয়ারি তার উস্কানিতে যুক্তরাষ্ট্রের ক্যাপিটল হিলে দাঙ্গা করেন সমর্থকরা। তাতে কমপক্ষে ৫ জন নিহত হন। কিন্তু ট্রাম্প দাবি করেছেন, যেহেতু তখন তিনি প্রেসিডেন্ট ছিলেন, তাই তিনি দায়মুক্তি পাবেন। কিন্তু নিম্ন আদালতের তিনজন বিচারক তার সঙ্গে একমত হননি। তারা রায়ে বলেছেন, অন্য যেকোনো নাগরিকের মতো তাকেও বিচারের মুখোমুখি হতে হবে। তবে ট্রাম্পের আইনজীবীরা বলেছেন, নির্বাচনী প্রচারণা চলাকালে তার বিচার করা উচিত হবে না। এ খবর দিয়েছে অনলাইন বিবিসি।

সুপ্রিম কোর্টে বিচার স্থগিত চেয়ে ট্রাম্পের আইনজীবীরা যে আবেদন করেছেন তাতে বলা হয়েছে, প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের বিরুদ্ধে অনেক মাসব্যাপী ফৌজাদারি অপরাধের অভিযোগে বিচার করা হলে নির্বাচনের এই উপযুক্ত সময়ে প্রেসিডেন্ট বাইডেনের বিরুদ্ধে সাবেক প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের প্রচারণার সক্ষমতায় মারাত্মক বিঘ্ন ঘটবে।

এখন সুপ্রিম কোর্ট সিদ্ধান্ত নেবে। তারা জানাবে ট্রাম্পের আবেদন গ্রহণ করে তার বিচার স্থগিত করা হবে কিনা। সুপ্রিম কোর্টে রক্ষণশীল বা রিপাবলিকান বিচারকরা সংখ্যাগরিষ্ঠ। তারা যদি দীর্ঘ বিলম্বের ঐতিহাসিক রায় দেন এই মামলায় তাহলে তা নভেম্বরের নির্বাচনের পরে পর্যন্তও হতে পারে। কিন্তু যদি নিম্ন আদালতের রায়কে স্থগিত রাখতে অস্বীকৃতি জানায় সুপ্রিম কোর্ট, তবে বিচারক তানিয়া চাটকান এই মামলা বসন্তে শুরু করতে পারেন। তিনিই এই মামলা দেখাশোনা করছেন কেন্দ্রীয় পর্যায়ে।

হোয়াইট হাউসের দৌড়ের ক্ষেত্রে এই মামলার সঙ্গে ট্রাম্প আরও তিনটি ফৌজদারি মামলার মুখোমুখি। একটি অভিযোগে বলা হয়েছে, ২০২০ সালের নির্বাচনের পর জর্জিয়া রাজ্যের ফল উল্টে দিতে চেষ্টা করেছিলেন তিনি। হোয়াইট হাউস ত্যাগ করার পর গোপন ডকুমেন্ট তিনি তার ফ্লোরিডার অবকাশ যাপনের বাড়িতে নিয়ে রেখেছিলেন। এটা তার এক্তিয়ারে পড়ে না। এ নিয়ে তার বিরুদ্ধে সাতটি অভিযোগ আছে। তৃতীয় মামলাটি হলো নিউ ইয়র্কে। সাবেক পর্নো তারকা স্টর্মি ডানিয়েলের মুখ বন্ধ রাখার জন্য তাকে অর্থ দিয়েছিলেন বলে অভিযোগ আছে। তবে এসব অভিযোগের সবটাই প্রত্যাখ্যান করেছেন ট্রাম্প। তিনি নিজেকে নির্দোষ দাবি করেছেন।

এ বছরের নির্বাচনের পর পর্যন্ত ট্রাম্পের বিরুদ্ধে এসব ফৌজদারি মামলার বিচার বিলম্বিত করার জন্য বার বার চেষ্টা করে যাচ্ছেন তার আইনজীবী টিম। কেন্দ্রীয় নির্বাচনী হস্তক্ষেপ বিষয়ে ট্রাম্পের বিরুদ্ধে আনা হয়েছে চার দফা অভিযোগ। তা হলো- যুক্তরাষ্ট্রে প্রতারণার মাধ্যমে ষড়যন্ত্র করা, সরকারি কার্যপ্রক্রিয়ায় বাধা দেয়ার ষড়যন্ত্র, সরকারি কাজে বাধা দেয়া এবং নাগরিক অধিকারের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র। তবে বার বারই ট্রাম্প অভিযোগ প্রত্যাখ্যান করেছেন। তার আইনজীবীরা দাবি করে আসছেন, অপরাধ সংঘটনের সময় ট্রাম্প প্রেসিডেন্টের দায়িত্বে ছিলেন। এ জন্য তিনি দায়মুক্তি পান।