গাজায় ত্রাণকর্মীদের ওপর হামলা

বাইডেন-নেতানিয়াহু উত্তপ্ত বাক্য বিনিময়

বাইডেন-নেতানিয়াহু উত্তপ্ত বাক্য বিনিময়

ইসরাইল ইস্যুতে চাপ বাড়ছে বৃটিশ প্রধানমন্ত্রী ঋষি সুনাক এবং যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের ওপর। দেশের ভিতর থেকেই তাদের ওপর এই চাপ তীব্র হয়ে উঠেছে। দাবি উঠেছে, ইসরাইলকে অস্ত্র সরবরাহ দেয়া বন্ধ করতে হবে। দাতব্য সংস্থা ওয়ার্ল্ড সেন্ট্রাল কিচেনের (ডব্লিউসিকে) স্টাফদের ওপর গাজায় হামলা করে কমপক্ষে ৭ জন সদস্যকে হত্যার পর ইসরাইলি নৃশংসতার বিরুদ্ধে প্রতিবাদ বিক্ষোভ হচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র, বৃটেনে। দল, মত, ধর্ম নির্বিশেষে মানুষ এসব বিক্ষোভে শরীক হচ্ছেন। এ অবস্থায় ইসরাইলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুকে সাবধান করেছেন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। তিনি জানিয়ে দিয়েছেন, যুক্তরাষ্ট্র গাজা যুদ্ধে তার নীতি পরিবর্তন করতে পারে।

বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর ওপর তিনি ক্ষোভ প্রকাশ করেন। অবশ্য এটা না করে উপায় নেই বাইডেনের। আগামী ৫ই নভেম্বর তার প্রেসিডেন্ট নির্বাচন। এই নির্বাচনকে সামনে রেখে তাকে চলতে হবে জনগণের পাল্স বুঝে।

বার্তা সংস্থা এএফপি বলছে, দুই নেতার মধ্যে বৃহস্পতিবার উত্তপ্ত বাক্য বিনিময় হয়। এতে কিছুটা কাজেও এসেছে বলে মনে হচ্ছে। কারণ, তাদের ফোনকলের কয়েক ঘন্টার মধ্যে গাজায় অধিক পরিমাণ ত্রাণ সাময়িকভাবে পাঠানোর অনুমতি ঘোষণা করেছে নেতানিয়াহুর অফিস। এএফপি বলছে, তা সত্ত্বেও ইসরাইলকে সমর্থন দেয়ার কারণে মুসলিম ও তরুণ ভোটাররা ডেমোক্রেটদের ওপর ক্ষুব্ধ।

রাজনৈতিক মিত্ররা তাদের ওপর চাপ বৃদ্ধি করেছে, যাতে যুক্তরাষ্ট্র তার নীতি পরিবর্তন করে। নেতানিয়াহুর সঙ্গে ৩০ মিনিট ফোনে কথা বলেন বাইডেন। এরপর হোয়াইট হাউস থেকে বলা হয়েছে, ইসরাইলের তাৎক্ষণিক পদক্ষেপ নির্ধারণ করবে যে গাজা বিষয়ে মার্কিন নীতি কি হবে। এ বিষয়টি প্রেসিডেন্ট বাইডেন স্পষ্ট করে জানিয়ে দিয়েছেন নেতানিয়াহুকে। তিনি বলেছেন, গাজায় বেসামরিক নাগরিক ও ত্রাণকর্মীদের হত্যা কমাতে হবে। ভয়াবহ মানবিক পরিস্থিতির উন্নতি করতে হবে। এ সময় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন বাইডেন। তিনি বলেছেন, ত্রাণকর্মীদের ওপর হামলা অগ্রহণযোগ্য। এ সময় তিনি অবিলম্বে যুদ্ধবিরতির দিকে অগ্রসর হতে ইসরাইলের প্রতি আহ্বান জানান। একই দিন সন্ধ্যায় সিএনএন’কে হোয়াইট হাউসের জাতীয় নিরাপত্তা পরিষদের মুখপাত্র জন কিরবি বলেছেন, ডব্লিউসিকে’র ওপর যে হামলা হয়েছে, সেটা বাইডেনের এই ফোনকলে অনুঘটকের মতো কাজ করেছে।

উল্লেখ্য, গাজা যুদ্ধে ইসরাইলকে যুক্তরাষ্ট্র সমর্থন দিয়ে এলেও একটা সময় প্রেসিডেন্ট বাইডেন ইসরাইলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুকে সতর্ক করেছেন। বলেছেন, গাজায় সাধারণ মানুষকে হত্যা করার ফলে ইসরাইল ক্রমশ নিঃসঙ্গ হয়ে পড়বে। বার বার তিনি একথা বলে এসেছেন। সর্বশেষ রাফায় ইসরাইলের নৃশংস স্থল হামলায় প্রায়দিনই মার্কিন প্রশাসন থেকে একই কথা বলা হয়েছে। একই সতর্কতা দিয়েছে জাতিসংঘ, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা সহ মানবাধিকার বিষয়ক সংগঠনগুলো।

ওদিকে একই দাবিতে বৃটিশ প্রধানমন্ত্রী ঋষি সুনাকের ওপর তীব্র চাপ সৃষ্টি হয়েছে। তার দল এবং বিরোধী দলের বেশ কয়েকজন পার্লামেন্ট সদস্য ইসরাইলের কাছে অস্ত্র বিক্রি সাময়িকভাবে বন্ধ রাখার আহ্বান জানিয়েছেন।