নুসরাত হত্যা: বান্ধবী নিশাত-ফুর্তির সাক্ষ্যগ্রহণ আজ

নুসরাত হত্যা: বান্ধবী নিশাত-ফুর্তির সাক্ষ্যগ্রহণ আজ

ফেনীর সোনাগাজীর আলোচিত মাদরাসাছাত্রী নুসরাত জাহান রাফিকে আগুনে পুড়িয়ে হত্যা মামলার বাদী ও নিহতের বড় ভাই মাহমুদুল হাসান নোমানের জেরা রবিবার বিকালে শেষ হয়েছে। ফেনীর নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক (জেলা ও দায়রা জজ) মামুনুর রশিদের আদালতে রবিবার মামলার বাদী নোমানের জেরার দিন ধার্য ছিল। এর আগে ২৭ জুন সাক্ষ্য শুরুর প্রথম দিনে বাদীর আংশিক সাক্ষ্য নেওয়া হয়। ওই দিন তাঁকে আসামিপক্ষের ৯ জন আইনজীবী জেরা করেন।

গতকাল রবিবার ফের সাতজন আইনজীবী তাকে জেরা করেন। এখানে বাদী সাক্ষ্যের বাকি অংশ বর্ণনা করেন। এ ছাড়াও আজ সোমবার নুসরাতের সহপাঠী ও বান্ধবী নিশাত সুলতানা ও নাসরিন সুলতানা ফুর্তির সাক্ষ্যগ্রহণ। গতকাল তাদের সাক্ষ্যগ্রহণের কথা থাকলেও সময়ের অভাবে তা হয়নি।

আদালত সূত্রের বরাত দিয়ে সরকারি কৌঁসুলি (পিপি) অ্যাডভোকেট হাফেজ আহাম্মদ জানান, মামলার ১৬ আসামিকে রবিবার সকাল ১১টায় কড়া নিরাপত্তার ভেতর দিয়ে আদালতে আনা হয়। সোয়া ১১টা নাগাদ আদালতের কার্যক্রম শুরু হয়। শুরুতে বাদী নোমান তাঁর সাক্ষ্যের বাকি অংশ বর্ণনা করেন। এরপর আসামি উম্মে সুলতানা পপি, কামরুন নাহার মনি, আব্দুর রহিম শরীফের পক্ষে তাঁকে টানা দেড় ঘণ্টা জেরা করেন অ্যাডভোকেট নুর ইসলাম (৪), গিয়াস উদ্দিন নান্নু, কামরুল হাসান ও কাজী সোহাগ বুলবুল। এরপর আসামি সাইফুর রহমান ওরফে জোবায়েরের পক্ষে জেরা করেন অ্যাডভোকেট আবুল বশর চৌধুরী। দুপুর আড়াইটায় বিচারক ৩০ মিনিটের জন্য বিরতি দেন। বিকেল ৩টায় আবার কার্যক্রম শুরু হয়ে তা একটানা সোয়া ৫টা পর্যন্ত চলে। এ সময় আসামি শরীফ, মহিউদ্দিন শাকিল ও শামীমের পক্ষে জেরা অব্যাহত রাখেন অ্যাডভোকেট গিয়াস উদ্দিন নান্নু ও আহসান কবির বেঙ্গল।

পিপি জানান, রবিবার মামলার সাক্ষী, নুসরাতের সহপাঠী ও বান্ধবী নিশাত সুলতানা ও নাসরিন সুলতানা ফুর্তির সাক্ষ্যগ্রহণের কথা থাকলেও সময়ের অভাবে তা হয়নি। আজ সোমবার তাদের সাক্ষ্যগ্রহণের দিন ধার্য করেন বিচারক।

রবিবার আসামি নুর উদ্দিনের আইনজীবী কামরুল হাসান বাদীর কাছে জানতে চান—মামলার প্রথম এজাহারে কোনো আসামির নাম ছিল না। কিন্তু পরবর্তী সময়ে কাদের নির্দেশে ও পরামর্শে আসামিদের নাম এজাহারে উল্লেখ করা হলো? জবাবে বাদী নোমান জানান, প্রথম এজাহারে তাঁর স্বাক্ষর ছিল না। সেটি জাল স্বাক্ষর ছিল। এরপর আইনজীবী বলেন—নুসরাত নিজেই আত্মহত্যার চেষ্টা করেছে।

জবাবে নোমান বলেন, নুসরাতের গায়ে কেরোসিন ঢেলে পরিকল্পিতভাবে আগুন লাগিয়ে হত্যা করা হয়েছে, যা আসামিরা আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিতে স্বীকার করেছে। অন্য এক আসামির আইনজীবী নুর ইসলাম বলেন, তাঁর (নোমানের) বোন মাদরাসার ছাদে উঠে অন্যদের সঙ্গে মুঠোফোনে প্রেম করত। নোমান জবাবে বলেন, বিষয়টি সত্য নয়। অধ্যক্ষ নিজেই তাঁকে ডেকে নিয়ে তাঁর দপ্তরে শ্লীলতাহানি করেছেন।

আরেক আইনজীবী বাদীকে প্রশ্ন করেন, তার বাবা সোনাগাজী মাদরাসার অধ্যক্ষ হতে না পেরে ষড়যন্ত্রমূলকভাবে এ মামলা সাজিয়েছেন। জবাবে নোমান বলেন, ফাজিল মাদরাসায় অধ্যক্ষ হওয়ার মতো শিক্ষাগত যোগ্যতা তাঁর বাবার নেই। যাঁরা এটি বলছেন তারা মিথ্যা অপপ্রচার করছেন।

ওই আইনজীবী আরো বলেন, মামলার সাক্ষী নুসরাতের সহপাঠী নাসরিন সুলতানা ফুর্তির সঙ্গে নোমানের বিয়ে ঠিক হয়েছে। সে কারণে ষড়যন্ত্র করে তাকে এ মামলায় সাক্ষী করা হয়েছে। জবাবে নোমান বলেন, ‘এ ধরনের অভিযোগ কাল্পনিক ও মিথ্যা।’

এমআই