ভ্যানচালক কিশোর শাহীন সঙ্কটাপন্ন

ভ্যানচালক কিশোর শাহীন সঙ্কটাপন্ন

যাত্রীবেশী দুর্বৃত্তরা হাতুড়ি অথবা এজাতীয় কিছু দিয়ে আঘাত করেছে ভ্যানচালক কিশোর শাহীনের মাথায়। এতে তার মাথার হাড় ভেঙে ভেতরে ঢুকে গেছে। তার অবস্থা সঙ্কটাপন্ন। তবে ১৬ ঘণ্টা পার হলেও এখনো তার জ্ঞান ফেরেনি। বর্তমানে সে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালের জেনারেল আইসিইউতে ভর্তি রয়েছে।

রবিবার বিকালে শাহীনের চিকিৎসায় গঠিত মেডিক্যাল বোর্ডের প্রধান ডা. অসিত চন্দ্র সরকার এসব তথ্য জানান।

ঢামেক সূত্রে জানা গেছে, গত শনিবার রাত ৯টা ৫০ মিনিটে তাকে ঢামেকে আনার পর রাত সাড়ে ১২টায় অপারেশন থিয়েটারে নেয়া হয়। অপারেশন শেষে রাত সোয়া ৩টায় তাকে নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে (আইসিইউ) রাখা হয়।

ড. অসিত চন্দ্র সরকার জানান, দুর্বৃত্তদের আঘাতে শাহীন আহত হওয়ার খবরটি প্রকাশ হলে তা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। বিষয়টি নজরে আসে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনারও। তিনি শাহীনের চিকিৎসার তদারকি করছেন।

ঢামেক হাসপাতাল পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল এ কে এম নাসির উদ্দিন সাংবাদিকদের বলেন, শাহীনের মাথায় ধারালো অস্ত্রের গুরুতর আঘাত রয়েছে। তার অবস্থা গুরুতর। রাতে তার মাথায় অস্ত্রোপচার করার পরপরই আইসিইউতে রাখা হয়েছে। এখনো তার জ্ঞান ফেরেনি।

তিনি আরো বলেন, হাসপাতালের পক্ষ থেকেই তার চিকিৎসার যাবতীয় ব্যবস্থা করা হচ্ছে। শাহীনের চিকিৎসার জন্য ইতোমধ্যে নিউরোসার্জারি বিভাগীয় প্রধানকে প্রধান করে সাত সদস্যের একটি মেডিক্যাল বোর্ড গঠন করা হয়েছে।

ঢামেকের নিউরোসার্জারি বিভাগের প্রধান ডা. অসিত চন্দ্র আরো বলেন, শাহীনের মাথার আঘাত খুবই গুরুতর। আমরা ধারণা করছি, হাতুড়ি অথবা এজাতীয় কিছু একটা দিয়ে তাকে আঘাত করা হয়েছে। এরকম অনেক রোগী অস্ত্রোপচারের পর ভালো হয়েছে। কিন্তু শাহীনের অতিরিক্ত রক্তক্ষরণ হয়েছে বিধায় তার অবস্থা সঙ্কটাপন্ন। এক-দুই দিন না গেলে শাহীনের অবস্থা সম্পর্কে কিছু বলা যাচ্ছে না। সোমবার আবার তার সিটি স্ক্যান করা হবে।

এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, অস্ত্রোপচার করার পরে কারো কারো ২ থেকে ৩ দিন পরও জ্ঞান ফেরে। শাহীনের চিকিৎসার সব কিছুই আমরা মনিটরিং করছি।

উল্লেখ্য, গত ২৮ জুন শুক্রবার দুপুরে কেশবপুরের মঙ্গলকোট গ্রামের হায়দার আলী মোড়লের ছেলে কিশোর শাহীনের ভ্যানে যাত্রীবেশে ওঠে দর্বৃত্তরা। পরে পাটকেলঘাটা থানার ধানদিয়ায় রাস্তার দু’পাশের পাট ক্ষেতের নির্জন স্থানে শাহীনের মাথায় আঘাত করে গাড়িটি নিয়ে পালিয়ে যায় তারা। অনেকক্ষণ অচেতন অবস্থায় পড়ে থাকে সে। চেতনা ফিরলে শাহীনের কান্নার শব্দে স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে পুলিশকে খবর দেন। পরে পুলিশ শাহীনকে উদ্ধার করে খুলনা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করে। তার শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে পরদিন শনিবার উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে পাঠানো হয়। যশোরের কেশবপুরের গোলাখালী মাদরাসার সপ্তম শ্রেণির ছাত্র শাহীন।

এমআই