কাউন্সিলরের ছেলের নামে ১০ টাকা কেজির চালের কার্ড, এলাকাবাসীর ক্ষোভ

কাউন্সিলরের ছেলের নামে ১০ টাকা কেজির চালের কার্ড, এলাকাবাসীর ক্ষোভ

দিনাজপুরে খাদ্যবান্ধব কর্মসূচির বিশেষ ওএমএস এর কার্ড পেয়েছেন কাউন্সিলরের ছেলে। ১০ টাকা কেজি দরে সরকারিভাবে এই বিশেষ ওএমএসের কার্ড পাওয়ার কথা দুস্থ ও গরীব মানুষদের। কিন্তু দিনাজপুর পৌরসভার সংরক্ষিত ১০, ১১ ও ১২ নং ওর্য়াডের নারী কাউন্সিলর মোছা. মাজতুরা বেগম তার ছেলে মো. মিরেজ হোসেনের নামে বিশেষ ওএমএস কার্ড পাইয়ে দিয়েছেন।

বিষয়টি জানাজানি হলে এলাকায় ক্ষোভের সৃষ্টি হয়। অনেকেই ওই নারী কাউন্সিলর তার নিজের ছেলের নামে ওএমএস এর কার্ড করার বিষয়ে সামালোচনাও করেছেন।

বিশেষ ওএমএস- এর কার্ড থেকে জানা যায়, দিনাজপুর পৌরসভার ১২নং ওয়ার্ডের মো. খাইরুল ইসলামের ছেলে মো. মিরেজ হোসেনকে ওএমএস এর কার্ড দেওয়া হয়েছে। পেশা হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে তিনি একজন ব্যবসায়ী। যার কার্ড নং-৫৬১০। যদিও কাউন্সিলর মাজতুরা বেগম ছেলে মিরেজ হোসেন কৃষি কাজ করে বলে গণমাধ্যমকে জানিয়েছেন।

সংরক্ষিত নারী কাউন্সিলর মাজতুরা বেগম দাবি করে বলেন, ‘আমার ছেলে বিয়ের পরে আলাদা খায়। আমার ছেলে কৃষিকাজ করে এজন্য সে একটা কার্ড করে দিতে বলেছিল, তাই দিয়েছি। আবার আমি কাউন্সিল বলে আমার ছেলে বা আত্মীয়-স্বজনরা কার্ড পাবে না এটা কোনো কথা হলো! সবাই তো ধনী নয়। আমার যারা বংশধর হবে তারা কোন সুযোগ সুবিধা পাবে না? আমার আত্মীয়-স্বজন, আমার ভাই বোন কি কোনো সুযোগ নিতে পারে না! আমার ছেলেকে নিয়ে যেহেতু এত কথা হচ্ছে তাহলে কার্ডটি বাদ দিয়ে দেন। আমার ছেলে-মেয়ে গরীব হতে পারে না? আমি নিচ্ছি নাকি এটা দেখেন। এগুলো নিয়ে এত কথা কেন!

কাউন্সিলর তার নিজের ছেলেকে এরকম সুবিধা পাইয়ে দেয়ার বিষয়ে দিনাজপুর পৌরসভার মেয়র মো. জাহাঙ্গীর আলম গণমাধ্যমকে বলেন, ‘বিষয়টি আমি জেনেছি। একজন কাউন্সিল তার ছেলেকে বিশেষ ওএমএসের কার্ড করে দিয়েছেন। বিষয়টি দুঃখজনক! আরো অনেকেই হয়ত এ রকম করেছেন। আমরা বিষয়গুলো খতিয়ে দেখে পরবর্তীতে ব্যবস্থা গ্রহণ করব।’

এ বিষয়ে দিনাজপুরের জেলা প্রশাসক মো. মাহমুদুল আলম বলেন, ‘আমরা এরকম অভিযোগ আরো কিছু পেয়েছি। যার প্রেক্ষিতে এখন দিনাজপুর পৌরসভার ১২টি ওয়ার্ডের ৬ হাজার বিশেষ ওএমএস-এর কার্ড জেলার ১২টি সরকারি অফিসের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের দিয়ে পুনরায় যাচাইবাছাই করা শুরু করেছি। সরকারের এই বিশেষ ওএমএস এর কার্ড দুস্থ ও অসহায় মানুষদের পাওয়ার কথা। প্রকৃতভাবেই যেন দুস্থ ও অসহায় মানুষরাই এই কার্ডগুলো পায় আমরা সেটা নিশ্চিত হবার জন্য বাছাইয়ের কাজ করছি। কোনো অসঙ্গতি কিংবা অনিয়ম সহ্য করা হবে না বলেও জানান তিনি।’