পণ্যের বাড়তি দামে দিশেহারা ভোক্তা

পণ্যের বাড়তি দামে দিশেহারা ভোক্তা

রাজধানীর খুচরা বাজারে সাতদিনে ১২ নিত্যপণ্যের দাম বেড়েছে। চাল, মশুর ডাল, চিনি, ব্রয়লার মুরগি, ইলিশ মাছ, গরু ও খাসির মাংস, ডিম, দেশি রসুন, জিরা, আমদানি করা হলুদ ও শুকনা মরিচের দাম ঊর্ধ্বমুখী।

এসব নিত্যপণ্যের বাড়তি দরে সাধারণ ভোক্তারা দিশেহারা হয়ে পড়েছে। বৃহস্পতিবার রাজধানীর কাওরান বাজার, নয়াবাজার, মালিবাগ কাঁচাবাজার ঘুরে ক্রেতা ও বিক্রেতাদের সঙ্গে কথা বলে এ তথ্য জানা গেছে।

ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশের (টিসিবি) দৈনিক বাজার পণ্যমূল্য তালিকায়ও ১২টি নিত্যপণ্যের দাম বৃদ্ধির চিত্র দেখা গেছে। টিসিবি বলছে, রাজধানীতে সপ্তাহের ব্যবধানে প্রতি কেজি মোটা চাল ২ দশমিক শূন্য ৬ ও মাঝারি আকারের চাল ১ দশমিক ৮৯ শতাংশ বেশি দরে বিক্রি হচ্ছে। এছাড়া প্রতি কেজি বড় দানার মসুর ডাল ৩ দশমিক ৩৩, চিনি শূন্য দশমিক ৭০, ব্রয়লার মুরগি ৮ দশমিক ৩৩, গরুর মাংস ১ দশমিক ৭২, খাসির মাংস ১ দশমিক ৮৮, ইলিশ ৮ দশমিক ৮২, দেশি রসুন ৭ দশমিক ৬৯, জিরা ২ দশমিক ৮৬, আমদানি করা হলুদ ৩ দশমিক শূন্য ৩, প্রতি হালি (৪ পিস) ডিম ৬ দশমিক ৩৫ ও প্রতি কেজি দেশি শুকনা মরিচ ১৮ দশমিক ৯২ শতাংশ বেশি দরে বিক্রি হচ্ছে।

মালিবাগ কাঁচাবাজারের খালেক রাইস এজেন্সির মালিক ও খুচরা চাল বিক্রেতা দিদার হোসেন বলেন, প্রতি কেজি পাইজাম চাল বিক্রি হয়েছে ৫৮ টাকা, যা সাতদিন আগে ৫৬ টাকায় বিক্রি হয়েছে। পাশাপাশি মোটা চালের মধ্যে স্বর্ণা জাতের চাল প্রতি কেজি বিক্রি হয়েছে ৫২ টাকা, যা সাতদিন আগে ৫০ টাকায় বিক্রি হয়েছে। দাম বৃদ্ধির কারণ জানতে চাইলে তিনি জানান, দুইদিন যেতে না যেতে মিল পর্যায় থেকে চালের দাম বাড়িয়ে নতুন রেট ধরে দিচ্ছে। এ কারণে পাইকারি বাজারে চালের দর বাড়ছে। ফলে বাড়তি দরে কিনে এনে বাড়তি দরেই ভোক্তা পর্যায়ে বিক্রি করতে হচ্ছে।

তিনি আরও জানান, এরপরও তদারকি সংস্থা মিল পর্যায় মনিটরিং না করে খুচরা বাজারে মনিটরিং করছে। এভাবে চালের দাম কমবে না। মিলারদের দিকে নজর রাখতে হবে। কারণ ধানের বাম্পার ফলন হলেও চালের দাম কমেনি। বরং তাদের কারসাজিতে দাম আরও বেড়েছে। বড় দানার মসুর ডাল প্রতি কেজি ৮০-৮৪ টাকায় বিক্রি হয়েছে, যা সাতদিন আগে ৭৫-৭৮ টাকায় বিক্রি হয়েছে।

প্রতি হালি ডিম বিক্রি হয়েছে ৩৫-৩৬ টাকায়, যা সাতদিন আগে বিক্রি হয়েছে ৩৩ টাকায়। এছাড়া প্রতি কেজি চিনির দাম ৩ টাকা বেড়ে ৭৫ টাকায় বিক্রি হয়েছে। প্রতি কেজি দেশি রসুন সপ্তাহের ব্যবধানে ১০ টাকা বেড়ে ৮০ টাকায় বিক্রি হয়েছে। দেশি শুকনা মরিচ কেজিতে ৬০ টাকা বেড়ে ২৬০ টাকা বিক্রি হয়েছে। পাশাপাশি কাঁচা মরিচ ১৬০ থেকে সর্বোচ্চ ১৯০ টাকায় বিক্রি হয়েছে। আমদানি করা হলুদ কেজিতে ১০ টাকা বেড়ে ২০০ টাকায় বিক্রি হয়েছে। প্রতি কেজি জিরা ২০ টাকা বেড়ে ৩২০ টাকায় বিক্রি হয়েছে।

রাজধানীর কাওরান বাজারে ক্রেতা মো. সুমন বলেন, নিত্যপণ্য কিনতে এক হাজার টাকা নিয়ে বাজারে এসেছি। কিন্তু যা যা দরকার ও যে পরিমাণে দরকার, তা এ এক হাজার টাকায় কেনা সম্ভব নয়। কারণ বাজারে প্রতিটি পণ্যের দাম বাড়তি। এছাড়া নতুন করে বেশ কয়েকটি পণ্যের দাম বেড়েছে। এ কারণে নিত্যপণ্য কিনতে এসে হিমশিম খেতে হচ্ছে।

প্রতি কেজি গরুর মাংস বিক্রি হয়েছে ৬২০ টাকায়। যা সাতদিন আগে ৫৬০ থেকে ৬০০ টাকায় বিক্রি হয়েছে। হাড় ছাড়া গরুর মাংস বিক্রি হয়েছে ৭২০-৭৩০ টাকায়, যা সাতদিন আগে ৭০০ টাকায় বিক্রি হয়েছে।

পাশাপাশি সাতদিনের ব্যবধানে প্রতি কেজি খাসির মাংসে ৩০ টাকা বেড়ে ৭৮০ টাকা বিক্রি হয়েছে। এছাড়া বাজারে প্রতি কেজি ব্রয়লার মুরগি বিক্রি হয়েছে ১৪০ টাকা, যা সাতদিন আগে বিক্রি হয়েছে ১২৫ টাকায়।

এমজে/