১০ টাকা কেজি চালের দাম বেড়ে ১৫ টাকা

১০ টাকা কেজি চালের দাম বেড়ে ১৫ টাকা

সরকার দেশের অতি দরিদ্রদের কাছে ১০ টাকা দরে মাসে যে ৩০ কেজি করে চাল বিক্রি করে আসছিল, সে দাম কেজিতে ৫ টাকা করে বৃদ্ধির প্রস্তাব করেছেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল। অর্থমন্ত্রীর প্রস্তাব কার্যকর হলে গ্রামের গরিব মানুষকে চাল কিনতে হবে ১৫ টাকা কেজি দরে।

পাঁচ বছর আগে অর্থাৎ ২০১৬-১৭ অর্থবছর থেকে খাদ্য মন্ত্রণালয়ের আওতায় ৫০ লাখ পরিবারকে মাথায় রেখে এ কর্মসূচি চালু করা হয়। এটিকে বলা হয় প্রধানমন্ত্রীর ব্র্যান্ডিং ‘খাদ্যবান্ধব কর্মসূচি’। এ কর্মসূচি বাস্তবায়ন করছে খাদ্য অধিদপ্তর। কর্মসূচি বাস্তবায়নে ইউনিয়ন পর্যায়ে বসবাসরত বিধবা, বয়স্ক, পরিবারপ্রধান নারী, নিম্ন আয়ের দুস্থ পরিবারপ্রধানদের অগ্রাধিকার ভিত্তিতে ১০ টাকা কেজি দরে চাল দেওয়ার জন্য একটি তালিকা করা রয়েছে।

গতকাল বাজেট বক্তৃতায় অর্থমন্ত্রী বলেন, চালের বাজারদর নিয়ন্ত্রণসহ স্বল্প আয়ের মানুষের জন্য খাদ্যপ্রাপ্তি সহজলভ্য করতে খোলাবাজারে বিক্রি (ওএমএস) কার্যক্রমের মাধ্যমে নিয়মিতভাবে সুলভ মূল্যে চাল ও আটা বিক্রি করা হচ্ছে।

চলতি ২০২১-২২ অর্থবছরেও এ কর্মসূচিতে দেওয়া হচ্ছে ৫ লাখ ৭০ হাজার টন চাল ও ৪ লাখ ৮৫ হাজার টন গমের আটা। এর মধ্যে খাদ্যবান্ধব কর্মসূচির আওতায় স্বল্প আয়ের ৫০ লাখ মানুষের মধ্যে ১০ টাকা কেজি দরে চাল বিক্রি করা হচ্ছিল। নতুন অর্থবছরে তা ৫ টাকা বাড়িয়ে ১৫ টাকা করা হচ্ছে।

অর্থমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা ২০২২-২৩ অর্থবছরেও খাদ্যবান্ধব কর্মসূচি অব্যাহত রাখব। ৫০ লাখ নিম্ন আয়ের পরিবারকে বছরে কর্ম-অভাবকালীন সেপ্টেম্বর, অক্টোবর ও নভেম্বর এবং মার্চ ও এপ্রিল অর্থাৎ পাঁচ মাসব্যাপী ১৫ টাকা কেজি দরে পরিবারপ্রতি মাসে ৩০ কেজি চাল খাদ্যসহায়তা বাবদ বিক্রি করা হবে।’

করোনা আসার পর উপকারভোগী ৫০ লাখ থেকে বাড়িয়ে ৬২ লাখ ৫০ হাজার করা হয়েছিল। খাদ্য মন্ত্রণালয় এবারও সেই সংখ্যাটি চেয়েছিল। কিন্তু অর্থ বিভাগ রাজি হয়নি। ১০ টাকা থেকে ১৫ টাকা করার বিষয়ে যখন অর্থ বিভাগ সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত করেছে, তখন অর্থমন্ত্রীর কাছে ১ জুন প্রথম আলোর পক্ষ থেকে বিষয়টি জানতে চাওয়া হয়েছিল। অর্থমন্ত্রী তখন বলেছিলেন, ‘দেখতে হবে অর্থ বিভাগ কোন বিবেচনায় এমন চিন্তা করেছে। না দেখে আমি কিছু বলতে পারব না।’

অর্থমন্ত্রীর প্রস্তাব শেষ পর্যন্ত বহাল থাকলে নিম্ন আয়ের পরিবারগুলোকে মাসে ১৫০ টাকা অর্থাৎ বছরের পাঁচ মাসে মোট ৭৫০ টাকা করে বাড়তি গুনতে হবে। ১২ মাসের মধ্যে পাঁচ মাসই এই চাল দেওয়া হয়। আগামী অর্থবছরের খাদ্যবান্ধব কর্মসূচিতে প্রায় চার হাজার কোটি টাকা ভর্তুকি দেওয়া হবে। অর্থ বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, ১০ টাকা থেকে ১৫ টাকা করায় ভর্তুকি কমবে ৩৭৭ কোটি টাকা।