বেনাপোলে রাজস্ব কর্মকর্তার ঘুষ বাণিজ্যের ভিডিও ভাইরাল

বেনাপোলে রাজস্ব কর্মকর্তার ঘুষ বাণিজ্যের ভিডিও ভাইরাল

বেনাপোল স্থলবন্দর। আমদানি-রপ্তানির ক্ষেত্রে সহজ রুট হিসেবে ব্যবসায়ীদের কাছে সবসময়ই জনপ্রিয়। কিন্তু, বিভিন্ন সময়ে এই স্থলবন্দরের অনিয়ম-দুর্নীতি আর হয়রানীর খবর মেলে হরহামেশায়।

সম্প্রতি এক রাজস্ব কর্মকর্তার ঘুষ নেয়ার ভিডিও ছড়িয়ে পড়ার পর সমালোচনায় স্থলবন্দরটি। ভিডিওতে দেখা যায়, বেনাপোল কাস্টমস হাউসের সহকারী রাজস্ব কর্মকর্তা (এআরও) বনলতা রায় নিজ দপ্তরে বসে আছেন। সামনে সারিবদ্ধভাবে দাঁড়িয়ে আছে একদল লোক। পর্যায়ক্রমে ওই কর্মকর্তা তাদের কাছ থেকে নগদ টাকা নিয়ে ড্রয়ারে গুনে রাখছেন। এরপর ক্যালকুলেটরে হিসেব মিলিয়ে নিয়ে সামনে থাকা ফাইলে দিচ্ছেন বিশেষ চিহ্ন। লেনদেন নিয়ে সন্তুষ্ট না হওয়ায় এদের একজনের ফাইলটিতে বিশেষ চিহ্ন না দিয়ে সরিয়ে রাখেন তিনি।

ব্যবসায়ীরা জানান, বনলতার সামনে দাঁড়িয়ে থাকা লোকগুলো সিএন্ডএফ এজেন্ট প্রতিনিধি। ‌‘স্পিড মানি’ নামে সাপ্তাহিক ঘুষের টাকা দিচ্ছেন তারা।

তারা বলেন, এসব কারণে এখন অনেকেই বন্দরবিমুখ হচ্ছেন। প্রতিটা টেবিলে ঠিকমত যদি তাদের মাসোয়ারা না দেয়া হয় তখনই তারা ফাইল নিয়ে টাল বাহানা করে নানা রকম দুর্নীতি করে। ফলে আমরা ব্যবসায়ীরাতো আছি, সরকারও ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে।

জড়িতদের শাস্তি দাবি নাগরিক সমাজের। যশোরের সনাক সভাপতি অধ্যক্ষ শাহিন ইকবাল বলেন, সরকারি দপ্তরগুলোর দুর্নীতি যেন না হয় সেজন্য সরকার দ্রুত পদক্ষেপ গ্রহণ করবে বলে আমরা আশা করি।

ঘুষ বাণিজ্যের বিষয়ে বেমালুম অস্বীকার করেন অভিযুক্ত বনলতা রায়। ফোনে তার সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, কোন ভিডিওর কথা বলছেন জানি না। তবে কোনো কিছু কিনতে দেওয়ার জন্যে হয়তো কাউকে টাকা দিচ্ছিলাম।

বনলতা রায় আরও বলেন, আমি রপ্তানি গ্রুপে কাজ করি। সেখানে টাকা গ্রহণের সুযোগ নেই।

এ ব্যাপারে জানতে সংশ্লিষ্ট দপ্তরের সঙ্গে বারবার যোগাযোগের চেষ্টা করেও সাড়া মেলেনি।

চলতি অর্থবছরের প্রথম ছয় মাসে বন্দরের রাজস্ব আয়ের লক্ষ্যমাত্রা ২ হাজার ৯৩৯ কোটি টাকা থাকলেও আদায় হয়েছে ২ হাজার ৬৩১ কোটি টাকা। এছাড়াও কমেছে আমদানিও।