এক ডজন আইনস্টাইন দিয়েও ইভিএমে ভোটের ফল পাল্টানো যাবে না: সিইসি

এক ডজন আইনস্টাইন দিয়েও ইভিএমে ভোটের ফল পাল্টানো যাবে না: সিইসি

ইভিএমে (ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিন) শেষের ১০ মিনিটে এক ডজন আইনস্টাইন বসিয়ে দিলেও ফলাফল পাল্টানো যাবে না বলে মন্তব্য করেছেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী হাবিবুল আউয়াল।

রবিবার (২৬ ফেব্রুয়ারি) সকালে পাবনার ঈশ্বরদীতে ‘নির্বাচনে আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহার, চ্যালেঞ্জসমূহ এবং উত্তরণের উপায়’ শীর্ষক কর্মশালার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে সিইসি এ কথা বলেন।

সিইসি বলেন, ‘ইভিএম পদ্ধতি হলো—আমার ভোট আমি দেব, এটা নিশ্চিত করা। অন্যকেউ যেন আমার ভোট দিতে না পারে এটা নিশ্চিত করা। ফিঙ্গার প্রিন্ট ম্যাচ না করলে ডিজিটাল ব্যালট ওপেন হবে না। এটা একটা ভালো দিক। কিন্তু আমাদের সমাজের একটা বড় অংশ যারা বুদ্ধিজীবী, রাজনীতিক তাঁরা দাঁড়িয়ে গেলেন এটার বিপক্ষে। তারা অকাতরে বলতে লাগলেন—এটা ভোট চুরির মেশিন।’

সিইসি আরও বলেন, ‘আমি সিইসি হয়ে প্রথমে বিশ্বাস করলাম—এটা বোধহয় ভোটচুরির মেশিন। পরে দীর্ঘ পাঁচ মাসে অসংখ্য বিশেষজ্ঞ, যারা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইসিটির অধ্যাপক—ডেকে এনে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করালাম। রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে একটা পলিটিক্যাল ডায়লগ, আরেকটা টেকনোলোজিক্যাল ডায়লগ করলাম এবং ৮-১০টি ইভিএম মেশিন দিয়ে তাদের বললাম আপনারা কারচুপিটা কীভাবে করবেন বা করা যাবে–এটা আমাদের একটু বুঝিয়ে দেন। তারা তা পারেন নাই। এখন আমি ১০০ শতাংশ বিশ্বাস করি, এর মাধ্যমে ভোট চুরি করা যাবে না এবং কেউ বলেন, এখানে টিপ দিলে ওখানে চলে যাবে— বিগত ৯-১০ মাসের নির্বাচনগুলোতে এ ধরনের বস্তুনিষ্ঠ কোনো অভিযোগ আমরা পাইনি। তারপর বলল—ইভিএমে ভোট ভালো হয়েছে কিন্তু শেষের ১০ মিনিটে ফলাফল পাল্টে দেওয়া হলো। শেষের ১০ মিনিটে ফলাফল পাল্টে দেওয়ার জন্য যদি ইভিএমে এক ডজন আইনস্টাইনকেও বসিয়ে দেওয়া হয় ফলাফল পাল্টানো যাবে না। কারণ ডাউনলোডেড রিসিট এরই মধ্যে সবাইকে দিয়ে দেওয়া হয়েছে।’

কর্মশালা উদ্বোধনে শেষে সিইসি গণমাধ্যমকর্মীদের বলেন, ‘রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে মতৈক্য না হলে অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন অনুষ্ঠান কঠিন হবে। নির্বাচন নিয়ে কোনো প্রশ্ন থাকলে রাজনৈতিক দলগুলোকে তা আলোচনার মাধ্যমেই সমাধান করতে হবে। নির্বাচন অবাধ, নিরপেক্ষ করতে আমরা কাজ করছি, কিন্তু সব বিষয় কমিশনের নিয়ন্ত্রণে নয়। এ ক্ষেত্রে, রাজনৈতিক দলগুলোকে বড় ভূমিকা নিতে হবে। নির্বাচনে কেন্দ্রে কেন্দ্রে প্রতিদ্বন্দ্বিতা না থাকলে নির্বাচন নিয়ে বিতর্ক সৃষ্টি হতে পারে।’

কর্মশালায় নির্বাচন কমিশনের অতিরিক্ত সচিব অশোক কুমার দেবনাথ, রাজশাহী বিভাগীয় কমিশনার জি এস এম জাফরউল্লাহ, রাজশাহী রেঞ্জের ডিআইজি আব্দুল বাতেন বক্তব্য দেন।