হিলিতে পেঁয়াজের দাম কেজিতে ৫ টাকা বাড়ল

হিলিতে পেঁয়াজের দাম কেজিতে ৫ টাকা বাড়ল

আরও দুই থেকে তিন দিন বাজার পরিস্থিতি দেখে পেঁয়াজ আমদানির বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেয়া হবে কৃষিমন্ত্রী মো. আব্দুর রাজ্জাকের এমন বক্তব্যে আবারো দিনাজপুরের হিলিতে বাড়তে শুরু করেছে দেশি পেঁয়াজের দাম।

একদিনের ব্যবধানে কেজিতে ৫ টাকা বেড়ে বর্তমানে ৭০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে যা রোববার (২১ মে) ৬৫ টাকা দরে বিক্রি হয়েছিল। এদিকে পেঁয়াজের দামের এমন উঠানামায় ক্ষোভ বিরাজ করছে ক্রেতাদের মাঝে।

সোমবার (২২ মে) সকালে হিলির কাঁচাবাজার ঘুরে দেখা গেছে, বাজারের সব দোকানেই পেঁয়াজের পর্যাপ্ত সরবরাহ আছে। তারপরেও আগের দিনের তুলনায় কেজি প্রতি ৫ টাকা করে বাড়তি দামে বিক্রি হচ্ছে পেঁয়াজ। সম্প্রতি সরবরাহ কমের অজুহাতে পেঁয়াজের দাম বাড়তে বাড়তে ৮০ টাকায় উঠে গিয়েছিল। কিন্তু ভারত থেকে পেঁয়াজ আমদানির অনুমতি দেয়া হবে এমন খবরে দুদিন আগে পেঁয়াজের দাম কমে ৬৫ টাকায় নেমেছিল। সম্প্রতি পেঁয়াজ আমদানির অনুমতি আরও কয়েকদিন পরে দেয়া হবে এমন খবরে আবারো পেঁয়াজের দাম বাড়ছে।

হিলি বাজারে পেঁয়াজ কিনতে আসা সাইফুল ইসলাম বলেন, পেঁয়াজের বাড়তি দামের কারণে আমাদের মত সাধারণ মানুষদের সংসারের ব্যয়ভার মেটানো কষ্টকর হয়ে পড়েছে। যেভাবে পণ্যটির দাম বাড়ে সেই তুলনায় আমাদের আয় ইনকাম তো আগের মতই রয়েছে সেটি তো আর বাড়ছে না। কিন্তু পেঁয়াজের বাজার নিয়ে রীতিমত নাটক চলছে ভারত থেকে পেঁয়াজ আমদানির খবরেই দাম কমছে আবার যেই শুনছে ভারত থেকে পেঁয়াজ আমদানি হবে না রাতের ব্যবধানে আবারো পেঁয়াজের দাম বাড়ছে। সব দোকানেই পর্যাপ্ত পেঁয়াজের সরবরাহ রয়েছে তারপরেও পেঁয়াজের দাম বাড়তি। ব্যবসায়ীরা বলছেন সরবরাহ কম কিন্তু বাজারে তো যথেষ্ট পেঁয়াজ রয়েছে এটি ব্যবসায়ীদের কারসাজি ছাড়া কিছুই নয়।

হিলি বাজারের পেঁয়াজ বিক্রেতা শাকিল খান বলেন, দেশে পেঁয়াজের বাজার ঊর্ধ্বমুখী হয়ে উঠলে ভারত থেকে পেঁয়াজ আমদানির অনুমতি দেয়া হবে বলে বক্তব্য দেন বাণিজ্যমন্ত্রী। তার এমন বক্তব্যের পর অচিরেই ভারত থেকে পেঁয়াজ আমদানি শুরু হবে এমন আশংকায় দেশের বিভিন্ন মোকামে যারা কিনা দেশীয় পেঁয়াজ মজুদ করে রেখেছিলেন তারা লোকসানের আশংকায় পেঁয়াজগুলো ছাড়তে শুরু করে। যার কারণে মোকামে পেঁয়াজের দাম মন প্রতি ৫০০ থেকে ৬০০ টাকা কমে গিয়েছিল। কিন্তু রোববার কৃষিমন্ত্রী আবারো বক্তব্য দেন আরও দুই থেকে তিন দিন বাজার পরিস্থিতি দেখে পেঁয়াজ আমদানির বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেয়া হবে। তার এমন বক্তব্যে পেঁয়াজ আমদানি শুরু হতে আরও সময় বাকি রয়েছে সেই সুযোগে আবারো মোকামে পেঁয়াজের দাম বাড়িয়েছেন ব্যবসায়ীরা। আমদানির খবরে মণ প্রতি যে পেঁয়াজের দাম কমেছিল তা রাতের ব্যবধানে আবারো বাড়তি হয়েছে। যার কারণে আমাদের বাড়তি দামে কিনতে হচ্ছে, বাড়তি দামেই বিক্রি করতে হচ্ছে। তবে ভারত থেকে পেঁয়াজ আমদানি শুরু হলে দাম কমে আসবে বলেও জানিয়েছেন তিনি।

হিলি স্থলবন্দর আমদানি রপ্তানিকারক গ্রুপের সভাপতি হারুন উর রশীদ বলেন, দেশীয় কৃষকের স্বার্থ বিবেচনা করে ১৫ মার্চ থেকে পেঁয়াজ আমদানির অনুমতি দিচ্ছে না সরকার। এতে করে ওই সময় থেকে পেঁয়াজ আমদানি বন্ধ রয়েছে। কৃষক যা দাম পাওয়ায় পেয়েছে বর্তমানে কৃষকের ঘরে তো পেঁয়াজ নেই পেঁয়াজ রয়েছে মজুতদারদের নিকট। আমদানি বন্ধের সুযোগে দেশীয় পেঁয়াজ ব্যবসায়ী যারা কিনা পেঁয়াজ মজুদ করে রেখে দাম বাড়িয়ে চলছেন। দাম নিয়ন্ত্রণে রাখতে ও সরবরাহ স্বাভাবিক রাখতে আমরা ভারত থেকে পেঁয়াজ আমদানির জন্য সংশ্লিষ্ট দপ্তরে আবেদনসহ সকল প্রস্তুতি গ্রহণ করে রেখেছি। কিন্তু সরকার এখন পর্যন্ত পেঁয়াজ আমদানির অনুমতি দেয়নি। দ্রুত অনুমতি দিলে বন্দর দিয়ে অচিরেই পেঁয়াজ আমদানি শুরু হবে এতে করে দাম নিয়ন্ত্রণে চলে আসবে বলেও জানিয়েছেন তিনি।