যমুনার পানি বিপদসীমা ছুঁই ছুঁই, প্লাবিত নিম্নাঞ্চল

যমুনার পানি বিপদসীমা ছুঁই ছুঁই, প্লাবিত নিম্নাঞ্চল

উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢল ও ভাষী বর্ষণে সিরাজগঞ্জে যমুনা নদীর পানি হু হু করে বাড়ছে। ইতোমধ্যে সিরাজগঞ্জ শহর রক্ষা বাঁধ এলাকায় যমুনার পানি বিপদসীমার ১৮ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। পানি বিদদসীমার কাছে থাকায় জেলার অভ্যন্তরীণ করতোয়া, ফুলজোড়, ইছামতি, বড়ালসহ অন্যান্য নদী ও খাল-বিলের পানি বাড়ায় নিম্নাঞ্চলের মানুষের মধ্যে বন্যা আতঙ্ক শুরু হয়েছে।

এদিকে, যমুনার পানি হু হু করে বাড়তে থাকায় নদী তীরবর্তী নিম্নাঞ্চলের নতুন নতুন এলাকা প্লাবিত হচ্ছে। পানির স্রোতে নদী-তীরবর্তী অঞ্চল কাজীপুর, সদর, বেলকুচি, শাহজাদপুর, এনায়েতপুর ও চৌহালীতে নদীভাঙন দেখা দিয়েছে। ভাঙনে ঘর-বাড়ি, ফসলি জমি নদীগর্ভে বিলীন হতে দেখা গেছে। ভাঙন রোধে পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) পক্ষ থেকে বালুর বস্তা ফেলা হচ্ছে।

রবিবার (১৬ জুলাই) সকালে সিরাজগঞ্জ হার্ড পয়েন্টে যমুনা নদীর পানির সমতল রেকর্ড করা হয়েছে ১২ দশমিক ৭২ মিটার। গত ২৪ ঘণ্টায় ১১ সেন্টিমিটার বৃদ্ধি পেয়ে বিপদসীমার ১৮ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। অপরদিকে, কাজিপুরের মেঘাই ঘাট পয়েন্টে পানির সমতল রেকর্ড করা হয়েছে ১৪ দশমিক ৩১ মিটার। ২৪ ঘণ্টায় ১২ সেন্টিমিটার বেড়ে বিপদসীমার ৪৯ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।

নদীর পানি বেড়ে প্লাবিত হচ্ছে জেলার ৫ উপজেলার যমুনা অভ্যন্তরের চরাঞ্চলের গ্রামগুলো। ফসলের মাঠ তলিয়ে বসতবাড়িতেও পানি উঠছে।

ফলে সদরের কাওয়াকোলা, কাজিপুরের স্পার বাঁধ, চৌহালী উপজেলার বাঘুটিয়া ও শাহজাদপুরের খুকনী এবং জালালপুর ইউনিয়নে দেখা দিয়েছে তীব্র নদীভাঙন।

কাওয়াকোলা ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান জিয়া মুন্সী জানান, যমুনার পানি বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে চরাঞ্চলের নিম্নভূমি তলিয়ে গেছে। বসতবাড়িতেও পানি উঠতে শুরু করেছে। গত কয়েকদিন ধরে কাওয়াকোলা ইউনিয়নের হাটবয়রা, ছোট কয়রা, দোগাছি ও কাওয়াকোলা গ্রামে ভাঙন দেখা দিয়েছে। ইতোমধ্যে এসব অঞ্চলের শতাধিক বাড়ি নদীগর্ভে বিলীন হয়েছে।

সিরাজগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী রনজিত কুমার সরকার জানান, উজানে ভারী বর্ষণে যমুনার পানি বৃদ্ধি অব্যাহত রয়েছে। আরও ২ দিন পানি বাড়বে ও আজকের মধ্যেই বিপৎসীমা অতিক্রম করার সম্ভাবনা রয়েছে। চরাঞ্চলের নিম্নভূমিগুলো প্লাবিত হচ্ছে। এর মধ্যে বিপদসীমা অতিক্রম করলেও আতঙ্কের কোনো কারণ নেই। স্বাভাবিক প্লাবন হলেও বন্যা বা আশংকাজনক অবস্থা সৃষ্টির সম্ভাবনা কম বলে তিনি জানিয়েছেন।