সংলাপের সময় শেষ: কাদের

সংলাপের সময় শেষ: কাদের

আসন্ন জাতীয় নির্বাচন নিয়ে সংলাপের সময় শেষ হয়ে গেছে উল্লেখ করে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, ‘যুক্তরাষ্ট্রের মধ্য ও দক্ষিণ এশিয়াবিষয়ক সহকারী পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডোনাল্ড লু-এর দেওয়া সংলাপ-সম্পর্কিত চিঠির জবাব শিগগিরই দেওয়া হবে।’

নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার পরদিন বৃহস্পতিবার তেজগাঁওয়ে আওয়ামী লীগের ঢাকা জেলা কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ কথা বলেন।

বিএনপিসহ সব দলকে নির্বাচনে আসার আহ্বান জানিয়ে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘যারা নির্বাচনে আসতে চায় তাদের জন্য নির্বাচনের দরজা খোলা আছে। বিএনপি যদি মন পরিবর্তন করে নির্বাচনে আসে তাহলে স্বাগত জানাই। আমরা সবাইকে নিয়ে নির্বাচন করতে চাই। একা নির্বাচন করতে চাই না, সবাইকে নিয়ে (নির্বাচনের মাধ্যমে) ক্ষমতায় যেতে চাই।’

তিনি বলেন, ‘এখন সংলাপ করার কথা বলেন। ২০১৪ সালে সংলাপের জন্য আহ্বান করা হয়েছে। বহুদল গেলেও বিএনপি তাতে সাড়া দেয়নি। শেখ হাসিনা ব্যক্তিগতভাবে খালেদা জিয়াকে সংলাপে আমন্ত্রণ করেছিলেন। আমাদের দোষ কোথায়, অপরাধ কোথায়?’

আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘এ দেশে গণতন্ত্রের নামে পদে পদে কলঙ্ক সৃষ্টি হয়েছে। বিএনপির অবরোধের তো আওয়ামী লীগ বাধা দেয়নি। বিএনপি তাদের নেতাকর্মীদের ডেকে এনে আগুন-সন্ত্রাস করে সরকার পতন করতে পারবে না। তারা সরকারের পতনের নামে আগুন-সন্ত্রাস করবে, ষড়যন্ত্র করবে। যখন শুনেছিলাম বিএনপি পুলিশকে হত্যা করেছে, বিচারপতি বাসায় হামলা করেছে, তখনই আমরা বুঝতে পেরেছি তাদের আন্দোলন বারটা বেজে গেছে।’

তিনি বলেন, ‘গণতন্ত্র ছাড়া ষড়যন্ত্রের পথে আওয়ামী লীগের রাষ্ট্র ক্ষমতার ইতিহাস নেই। বঙ্গবন্ধুকে হত্যার পরে গণতন্ত্রের মুকুটও ছিনতাই হয়ে গেল। বঙ্গবন্ধুকে হত্যার পরে কারাগারে জাতীয় চার নেতাকে হত্যা করে জাতি নেতৃত্ব শূন্য করার ষড়যন্ত্র করা হয়। আওয়ামী লীগ ২১ বছর  ক্ষমতায় ছিল না, তখন এই ২১ বছর গণতন্ত্র ছিনতাই হয়ে গেছে। এই ২১ বছর আওয়ামী লীগকে গণতন্ত্র চর্চা করতে দেয়নি। জিয়াউর রহমান ও এরশাদ।  তারপর খালেদাও একই কায়দায় স্বৈরাচারী গণতন্ত্র কায়েম করেছিল।’

তিনি আরও বলেন, ‘আওয়ামী লীগের ওপর বারবার হামলা করা হয়েছে। এসব প্রতিরোধ করেই আওয়ামী লীগ আজ এখানে এসেছে। শেখ হাসিনা ক্ষমতায় এসে যে কাজটা করেছেন সেটা হলো দেশের মধ্যে গণতন্ত্রকে শৃঙ্খলাবদ্ধ করা।’ 

উল্লেখ্য, যুক্তরাষ্ট্রের দক্ষিণ ও মধ্য এশিয়াবিষয়ক সহকারী পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডোনাল্ড লু দেশের প্রধান তিন রাজনৈতিক দলকে যে চিঠি দিয়েছেন, তার জবাব দিয়েছে বিএনপি। দলের সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী ডোনাল্ড লুকে ধন্যবাদ জানিয়ে ফিরতি চিঠিতে বলেছেন, অবাধ, সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের স্বার্থে সংলাপ নিয়ে তার দলের কোনো আপত্তি নেই। 

তবে সংলাপের জন্য অনুকূল পরিবেশ রয়েছে কিনা– সে বিষয়ে প্রশ্ন তুলে তিনি চিঠিতে বলেছেন, বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরসহ দলের হাজারো নেতাকর্মী এখন কারাবন্দি। বিএনপির একটি সূত্র বিষয়টি নিশ্চিত করেছে।
গত সোমবার বাংলাদেশের প্রধান তিন রাজনৈতিক দল আওয়ামী লীগ, বিএনপি ও জাতীয় পার্টিকে চিঠি দেন ডোনাল্ড লু। চিঠিতে উল্লেখ করা হয়, বাংলাদেশে অবাধ, সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ এবং অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন প্রত্যাশা করে যুক্তরাষ্ট্র। এতে শর্তহীন সংলাপের আহ্বান জানিয়ে দেশটির ঘোষিত ভিসা নীতির কথা স্মরণ করিয়ে দেওয়া হয়।