৭ জানুয়ারির নির্বাচন তামাশার বিষয়ে পরিণত হয়েছে: গণতন্ত্র মঞ্চ

৭ জানুয়ারির নির্বাচন তামাশার বিষয়ে পরিণত হয়েছে: গণতন্ত্র মঞ্চ

গণতন্ত্র মঞ্চের নেতারা বলেছেন, নির্বাচনকে সুষ্ঠু দেখানোর চেষ্টা করে কোনো লাভ নেই। ৭ জানুয়ারির নির্বাচন ইতিমধ্যেই একটি তামাশার বিষয়ে পরিণত হয়েছে। 

মঙ্গলবার সকালে রাজধানীর কাকরাইল মোড়ে আয়োজিত এক সমাবেশে গণতন্ত্র মঞ্চের নেতারা এসব কথা বলেন। ‘একতরফা ভোট বর্জন করুন’ এমন আহ্বানে ওই সমাবেশ করা হয়।

সমাবেশে নেতারা বলেন, এই নির্বাচন ইতিমধ্যেই মানুষের ভোটাধিকার কেড়ে নেওয়ার একটি নাটক হিসেবে জনগণ ও আন্তর্জাতিক বিশ্বের কাছে প্রতিফলিত। ফলে এই নির্বাচন বন্ধ করে সংবিধানের ১২৩ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী সংসদ ভেঙে, রাজনৈতিক সংকট সমাধান করে পরবর্তী ৯০ দিনের মধ্যে অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন আয়োজনের ব্যবস্থা করতে হবে।

আওয়ামী লীগ নিজেদের মধ্যে সহিংসতা করছে অভিযোগ করে নেতারা বলেন, সরকারের ডামি নির্বাচনে এক নৌকা চার ভাগে বিভক্ত। এই ভাগাভাগির মধ্যেও নিজেদের সহিংসতা থামাতে পারছে না। তাই গণতন্ত্র মঞ্চের নেতারা সরকারকে তাদের সভা–সমাবেশ না থামিয়ে আওয়ামী লীগের সহিংসতা থামাতে পুলিশ পাঠাতে বলেন।

সমাবেশে পুলিশ মাইক ব্যবহার বন্ধ করে দিতে চাইলে এর নিন্দা জানিয়ে নেতারা বলেন, মাইক ব্যবহারের সাংবিধানিক অধিকার রয়েছে। এই একতরফা তামাশার নির্বাচন বর্জন করা জনগণের অধিকার এবং জনগণকে সেই আহ্বান জানানোও সাংবিধানিক অধিকার।

দেশে আইন সবার জন্য সমান নয়—এমন অভিযোগ করে গণতন্ত্র মঞ্চের নেতারা বলেন, সরকারপক্ষীয় ও আওয়ামী লীগের ছায়াতলে থাকা লোকজনের জন্য আইন একভাবে কাজ করে। আর বিরোধী অন্যান্য রাজনৈতিক দলের জন্য দেশে আইন আরেক রকম। দেশে এখন বিরোধিতাকারীদের বিরুদ্ধে ফরমায়েশি রায় দেওয়া হচ্ছে। এমনকি আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন ব্যক্তি ড. মুহাম্মদ ইউনূসকেও দণ্ড দেওয়া হয়েছে।

বিএনপিকে নিষিদ্ধ করার চিন্তার বিষয়ে আওয়ামী লীগকে সাবধান করে দিয়ে নেতারা বলেন, অন্যের জন্য গর্ত খুঁড়লে নিজেরও সেই গর্তে পড়ার আশঙ্কা থাকে। এসব ফ্যাসিস্ট চিন্তা বাদ দিয়ে একতরফা নির্বাচন পরিহার করে গণতান্ত্রিক রূপান্তরের পথে এগোতে হলে একটি অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন দরকার। সেই পথে যেতেই সরকারের আহ্বান জানান প্রতি গণতন্ত্র মঞ্চের নেতারা।

সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্না। সমাবেশে অন্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন বাংলাদেশের বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক, গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী জোনায়েদ সাকি, ভাসানী অনুসারী পরিষদের আহ্বায়ক শেখ রফিকুল ইসলাম, রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়ক হাসনাত কাইয়ুম, জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দলের (জেএসডি) সাধারণ সম্পাদক শহীদ উদ্দীন মাহমুদ। সমাবেশ পরিচালনা করেন নাগরিক ঐক্যের সাধারণ সম্পাদক শহীদুল্লাহ কায়সার।

সমাবেশ শেষে রাজধানীর কাকরাইল মোড় থেকে শান্তিনগর, মালিবাগ হয়ে মালিবাগ রেলগেট এলাকায় ভোট বর্জনের পক্ষে গণসংযোগ করা হয়। আগামীকাল বুধবার ফার্মগেট আনন্দ সিনেমা হলের সামনে বেলা সাড়ে ১১টায় সমাবেশ, গণসংযোগ ও মিছিল করবে গণতন্ত্র মঞ্চ।