মাস্ক সরবরাহে ‘অস্তিত্বহীন’ প্রতিষ্ঠান, সরকারের ৯ কোটি টাকা জলে!

মাস্ক সরবরাহে ‘অস্তিত্বহীন’ প্রতিষ্ঠান, সরকারের ৯ কোটি টাকা জলে! ছবি: মানহীন ২ লাখ পিস কেএন নাইন্টি ফাইভ মাস্ক পড়ে আছে গুদামে, পরিশোধ করা হয়েছে ৯ কোটি টাকা।

ঠিকানাবিহীন প্রতিষ্ঠান ‘সিম করপোরেশন’। অস্তিত্ব না থাকলেও গুরুত্ব পেয়েছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের জরুরি কেনাকাটায় গঠিত ইআরপিপি প্রকল্পের কাছে। মানহীন ২ লাখ পিস কেএন নাইন্টি ফাইভ মাস্ক সরবরাহ করে হাতিয়ে নিয়েছে ৯ কোটি টাকা।

জানতে চাইলে বর্তমান পরিচালক দায় চাপান সাবেক পরিচালকের ওপর। পলাতক মালিককে খুঁজে না পেয়ে এর মধ্যে তার নামে দায়ের করা হয়েছে মামলা।

প্রকল্প অফিসে দেখা গেল, স্বাস্থ্যকর্মীদের জন্য কেনা ২ লাখ পিস কেএন ৯৫ মাস্ক পড়ে আছে গত ৩ মাস ধরে। মানসম্মত নয়, আবার আমদানি করতে নেই ওষুধ প্রশাসন অধিদপ্তরের অনুমতিপত্র। অথচ ঠিকই ‘সিম করপোরেশনকে’ শোধ করা হয়েছে ৯ কোটি টাকা।

প্রতিষ্ঠানটির খোঁজে সময় নিউজের এ প্রতিবেদক শহীদ মুনির চোধুরী সড়ক, সেন্ট্রাল রোডে যায়। সেখানে ১১০ নম্বর বাড়ির কোথাও নেই ‘সিম করপোরেশন’। বাড়ির ভাড়াটিয়াদের রেজিস্ট্রি খাতায়ও নেই প্রতিষ্ঠানটির মালিক মোস্তফা মানোয়ার মিম নামে কোনো ব্যক্তির নাম।

বাড়ির দায়িত্বরত ব্যক্তি (দারোয়ান) বলেন, ‘আমি এখানে ১২ বছর যাবত কাজ করছি। এই নামে কেউ এখানে থাকেন না। আগেও কেউ ছিলেন বলে মনে পড়ে না।’

অফিস খুঁজে না পেয়ে সিম করপোরেশনের ওয়েবসাইটে গিয়ে দেখা যায়, তাদের কাজ সফটওয়্যার ডেভেলপ ও এলইডি বাল্ব সরবরাহ করা। সেখানে তাদের কাজের বিবরণের পাশাপাশি রিভিউতে বাণিজ্যমন্ত্রীসহ বেশ কয়েকজন বিশিষ্ট ব্যক্তির ছবি ব্যবহার করা হয়েছে। প্রতিষ্ঠানের ঠিকানার পাশাপাশি দেয়া আছে রাজধানীর পল্লবীতে একটি করপোরেট অফিসের ঠিকানা। সেখানে গিয়ে দেখা গেল, এ ঠিকানাটিও ভুয়া।

এ বিষয়ে স্থানীয়রা বলেন, ‘এই নম্বরের কোনো সড়ক বা বাড়ি নেই এই এলাকায়।’ অনেক খোঁজা-খুঁজি করেও পাওয়া যায়নি ওই ঠিকানার কোনো হদিস।’

এ বিষয়ে সিম করপোরেশানের মালিক মোস্তফা মানোয়ারের ৩টি মোবাইল নাম্বারে যোগাযোগ করা হলেও তাকে পাওয়া যায়নি। তবে প্রকল্প পরিচালক বলছেন, মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে গঠন করা হচ্ছে তদন্ত কমিটি।

ইআরপিপি’র বর্তমান প্রকল্প পরিচালক ডা. শামীম হোসেন সময় সংবাদকে বলেন. ‘মন্ত্রণালয় যেহেতু তদন্ত কমিটি গঠন করেছে সেহেতু আমার কিছু বলার নেই। তদন্ত সাপেক্ষে দেখা যাবে।’

মেসার্স চৌধুরী ট্রেডার্স নামে একটি প্রতিষ্ঠান থেকে মাস্ক কিনে প্রকল্পে সরবরাহ করেছে সিম করপোরেশন। তাদের দেয়া এনওসিতে মান যাচাই না থাকায় এ মাস্ক ব্যবহার করলে তার দায় নেবে না বলে জানায় ওষুধ প্রশাসন।