নির্বাচন ৫০-৬০ শতাংশ গ্রহণযোগ্য হলেই সফলতা: সিইসি

নির্বাচন ৫০-৬০ শতাংশ গ্রহণযোগ্য হলেই সফলতা: সিইসি

নির্বাচন যদি ‘৫০ থেকে ৬০ শতাংশ গ্রহণযোগ্য’ হয় তবে সেটাকেও ‘সফলতা’ হিসেবে দেখা যায় বলে জানিয়েছেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী হাবিবুল আউয়াল। তিনি বলেছেন, শতভাগ সফলতা কখনো সম্ভব নয়। এটা যদি ৫০ শতাংশ বা ৬০ শতাংশও গ্রহণযোগ্য হয়, তাহলেও সেটা বড় সফলতা হবে।

মঙ্গলবার (২২ মার্চ) রাজধানীর আগারগাঁওয়ের নির্বাচন ভবনে সুশীল সমাজের প্রতিনিধিদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এ কথা বলেন। সংলাপে সুশীল সমাজের ৩৭ জন প্রতিনিধিকে আমন্ত্রণ জানানো হলেও অংশ নেন ১৯ জন।

সিইসি বলেন, দেশের নির্বাচন নিয়ে বিবর্তনটা ইতিবাচক হয়নি। সহিংসতা ব্যাপকতা লাভ করে। এটা হলে ভোটাররা আগ্রহ হারিয়ে ফেলেন। ভোট দিতে পারেন না। আপনারাও বলেছেন, সহিংসতা প্রতিরোধ করতে হবে।

হাবিবুল আউয়াল বলেন, এটা সত্য কথা আমাদের সাহস থাকতে হবে। সাহসের পেছনে থাকতে হবে সততা। আমাদের হারানোর কিছু নেই। পাওয়ার কিছুও নেই। জীবনের শেষ প্রান্তে আমরা ইতিবাচক যদি কিছু করতে পারি, আপনাদের সাজেশনের (সুপারিশ) আলোকে নির্বাচনটা যদি সবার অংশগ্রহণে অবাধ ও সুষ্ঠু করা যায়, সেটা একটা সফলতা হতে পারে।

নির্বাচনে ‘১০০ শতাংশ সফলতা’ হয়তো কখনো সম্ভব নয় মন্তব্য করে তিনি বলেন, কেউ বলেছেন এটা যদি ৫০ শতাংশ বা ৬০ শতাংশও গ্রহণযোগ্য হয়, তাহলে এটাও একটা বড় সফলতা।

সাম্প্রতিক নির্বাচনে মানুষের অনীহার প্রসঙ্গ টেনে সিইসি বলেন, বিগত নির্বাচনগুলোতে বেশ কিছু কারণে মানুষ মুখ ফিরিয়ে নিয়েছে। কেউ বলছে ভোট দিচ্ছে না (ভোটাররা)। তবে নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশন নির্বাচন খুব সুন্দর হয়েছে। ইভিএমের (ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিন) মাধ্যমে এটা একটা ভালো দিক।

ইভিএমের বিপক্ষে অনেকেই বলছেন জানিয়ে সিইসি বলেন, এটার মধ্যে কোনো অসুবিধা আছে কি না, এটা ব্যবহারে অনেকেই অভ্যস্ত নয়। মেশিনের মাধ্যমে কোনো ডিজিটাল কারচুপি হয় কি না, পৃথিবীর অনেক দেশ ইভিএম বাতিল করে দিয়েছে, কেন করলো সেটা গবেষণা করা উচিত।

ইভিএমে রিকাউন্টিং সমস্যা আছে জানিয়ে তিনি আরও বলেন, যদি কোনোরকম কারচুপি হয়ে থাকে, তাহলে রিকাউন্টিং করা যাবে কি না, এটার কোনো ব্যবস্থা আছে কি না, এটা আমাদের বুঝতে হবে। আমাদের টেকনিক্যাল কমিটির মিটিং করে একটা ধারণা নিতে হবে। নির্বাচনে যেন ধর্মের ব্যবহার না হয়, সেটাও আমরা গুরুত্ব সহকারে দেখবো।

নির্বাচনে রাজনৈতিক দলগুলোর জন্য লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড (সমান সুযোগ-সুবিধা) তৈরির প্রসঙ্গ টেনে হাবিবুল আউয়াল বলেন, এটা একটা কষ্টসাধ্য কাজ। আমাদের চেষ্টা করতে হবে। আপনাদের আশ্বস্ত করতে চাই আমরা চেষ্টা করবো।

ভোটের আগে ও ভোটের পরে ভোটারদের নিরাপত্তার বিষয়ে তিনি বলেন, ভোটার কেন্দ্রে যেতে পারবে কি না, ভোটার তার কেন্দ্র থেকে বের হয়ে নিরাপদ কি না? এটা ওসি-ডিসিদের মাধ্যমে দেখতে পারলে ভালো হয়।

সংলাপে বিশিষ্ট নাগরিকদের মধ্যে অংশ নেন ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী, ড. ইফতেখারুজ্জামান, আলী ইমাম মজুমদার, ড. মোহাম্মদ ফরাস উদ্দিন, ড. দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য, অধ্যাপক নজরুল ইসলাম, সঞ্জীব দ্রং, আবু আলম মো. শহীদ খান, মহিউদ্দিন আহমেদ, খুশী কবির, রোবায়েত ফেরদৌস, ড. সিনহা এম এ সাঈদ, আব্দুল লতিফ মন্ডল, বেগম শাহীন আনাম, ড. মোস্তাফিজুর রহমান, ড. জহুরুল আলম এবং ড. শেখ হাফিজুর রহমান।