টেকনাফে অপহৃত শিক্ষার্থীসহ আটজনকে ফেরত দিলো সন্ত্রাসীরা

টেকনাফে অপহৃত শিক্ষার্থীসহ আটজনকে ফেরত দিলো সন্ত্রাসীরা

অপহৃতের চারদিনের মাথায় শিক্ষার্থীসহ আটজনকে গভীর রাতে ফিরিয়ে দিয়েছে অপহরণকারীরা। অপহৃতদের আবদুল করিমের ভাই হাবিব আজ বৃহস্পতিবার সকালে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। তিনি জানান, তাদের কেউ বা কোন সংস্থা উদ্ধার করেনি। তাদের ফিরিয়ে আনা হয়েছে। মুক্তিপণের মাধ্যমে আনা হয়েছে কিনা জানতে চাইলে তিনি তা এড়িয়ে যান।

গত ১৮ই ডিসেম্বর টেকনাফের বাহারছড়া ইউনিয়নের জাহাজপুরা পাহাড়ি এলাকা থেকে শিক্ষার্থীসহ আটজনকে অপহরণ করেছিল সন্ত্রাসীরা। মুক্তি পাওয়া তরুণরা হলেন- জাহাজপুরা এলাকার রশিদ আহমেদের ছেলে আবছার উদ্দিন, ছৈয়দ আমিরের ছেলে নুরুল মোস্তাফা, করিম উল্লাহ নুর মোহাম্মদ, মোহাম্মদ উল্লাহ, সেলিম উল্লাহ, রিদুওয়ান ও নুরুল হক।

অপহৃত করিমের ভাই মো. হাবিব জানান জানান- অপহরণকারীরা শুরু থেকেই জনপ্রতি দুই লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করছিলেন। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা পাহাড়ে তল্লাশি চালায় ও সংবাদমাধ্যম ঘটনাটি নিয়ে প্রতিবেদন করায় ক্ষিপ্ত হয়ে অপহৃতদের ওপর শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন চালায় দুর্বৃত্তরা। বুধবার গভীর রাত ২টার দিকে তারা ফিরে আসেন।

জানা গেছে, গত ১৮ই ডিসেম্বর রোববার বিকালে টেকনাফ উপজেলার সাগর ও পাহাড়বেষ্টিত বাহারছড়া ইউনিয়নের জাহাজপুরা এলাকার একটি পাহাড়ের ভেতর পানির জলাধারে শখ করে মাছ ধরতে গেলে অস্ত্রধারী একদল অপহরণকারী স্থানীয় এক কলেজ শিক্ষার্থীসহ আট তরুণ-যুবককে অপহরণ করে নিয়ে যায়। তখন থেকে দফায় দফায় মুক্তিপণ দাবি করে আসছিলো। খবর পেয়ে পুলিশ একাধিক দলে বিভক্ত হয়ে অভিযান পরিচালনা করেছিলেন।

কিন্তু পুলিশ উদ্ধার করতে ব্যর্থ হলেও কিন্তু ৪ দিন পর নিজেরা নিজেদের মতো করে ফিরেছেন। কিন্তু ফেরা নিয়ে মিশ্র প্রতিক্রিয়া পাওয়া গেছে। অপহৃত ও পরিবাররা মুক্তিপণের বিষয়ে মুখ না খুললেও মুক্তিপণ দিয়ে ফিরেছে বলে জনশ্রুতি রয়েছে।

এর আগে পরিবার জানিয়েছিলেন, অপহরণকারীরা ৩ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করেছিলেন। সর্বশেষ ৫০ হাজার টাকা দাবি করেছিলেন বলে জানিয়েছিলেন অপহৃতের ভাই মো. আলী। অপহৃতরা আটজনই এক গ্রামের এবং তারা পরস্পর নিকট আত্মীয়। অপহৃতদের মধ্যে আবছার উদ্দীন কক্সবাজার কলেজের শিক্ষার্থী। কয়েকজন কৃষিজীবী। দুইজন বিদেশ যাওয়ার জন্য সকল প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছে।

বাহারছড়া ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি দেলোয়ার হোসেন জানান, পুলিশের সাথে শত শত স্থানীয় লোকজন অপহৃতদের উদ্ধারে কাজ করেছিলেন। কিছু সময়ের ব্যবধানে তারা ফিরে আসেন। টেকনাফ থানার আওতাধীন বাহারছড়া পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা পরিদর্শক বলেন, পুলিশের অবিরাম অভিযানের কারণে অপহরণকারীরা ভয়ে তাদের ছেড়ে দেয়। তারা কিছুটা আহত হয়। তারা বর্তমানে পুলিশের হেফাজতে রয়েছেন। মুক্তিপণ দেওয়ার বিষয়ে তার কাছে কোনো তথ্য নেই বলেও জানান তিনি।

পুলিশ এ ঘটনায় অপহৃত করিমুল্লাহর ভাই মোহাম্মদ হাবীব বাদী হয়ে অজ্ঞাতনামা আসামিদের বিরুদ্ধে গত মঙ্গলবার রাতে টেকনাফ মডেল থানায় মামলা দায়ের করেছেন বলে নিশ্চিত করেছেন টেকনাফ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোঃ আবদুল হালিম। এ বিষয়ে টেকনাফ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবদুল হালিম জানান, বুধবার রাতে অপহৃতরা এলাকায় এসেছেন। পরে ঘটনাটি জানার পরপরই তাদের থানায় নিয়ে আসা হয়েছে।