বিএসএফের নির্যাতনে নিহত, ৬ দিন পর ফেরত দিল লাশ

বিএসএফের নির্যাতনে নিহত, ৬ দিন পর ফেরত দিল লাশ

পরিবারের সঙ্গে অভিমান করেছিলেন যশোরের শার্শার যুবক শাহিন হোসেন। বাড়ি থেকে বের হয়ে সোজা চলে যান উপজেলার পুটখালী সীমান্তের ইছামতী নদীতীরে। নো-ম্যান্সল্যান্ড অতিক্রম করে ঢুকে পড়েন ভারতে। দুদিন ঘোরাঘুরির পর গত ১৫ ডিসেম্বর ফেরার পথে ধরা পড়েন ওপারে আংরাইলে সীমান্তরক্ষী বাহিনীর (বিএসএফ) কাছে। তারা এই যুবকের ওপর নির্যাতনের স্টিম রোলার চালায়। আশঙ্কাজনক অবস্থায় ভর্তি করে দেশটির বনগাঁ হাসপাতালে। চিকিৎসাধীন অবস্থায় ১৭ ডিসেম্বর তাঁর মৃত্যু হয়। বিভিন্ন আইনি প্রক্রিয়া ও তৎপরতার পর বৃহস্পতিবার রাত ১০টার দিকে তাঁর লাশ দেশে পৌঁছে।

জানা যায়, নিহত শাহিন পুটখালী গ্রামের বাছা ধাবকের ছেলে। ভারতের অভ্যন্তরে নির্যাতনে তাঁর মৃত্যুর খবর পেয়ে পরিবারের পক্ষ থেকে যোগাযোগ করা হয় বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের (বিজিবি) সঙ্গে। শুরু হয় নানা তৎপরতা। উভয় দেশের প্রশাসনের উচ্চ পর্যায়ের আলোচনা ও সহায়তায় লাশ ফেরত পাওয়া যায় ছয় দিন পর। উপজেলার বেনাপোল চেকপোস্ট দিয়ে মরদেহটি হস্তান্তর করেছে ভারতীয় পুলিশ ও বিএসএফ। এপারে লাশ গ্রহণ করে পোর্ট থানা পুলিশ। এ সময় নিহতের আত্মীয়স্বজনের কান্নায় ভারি হয়ে ওঠে পরিবেশ।

নিহতের আত্মীয় আজাদ হোসেন বলেন, সীমান্তে অনুপ্রবেশের শাস্তি কি মৃত্যুদণ্ড? সেটাও যদি হয়ে থাকে, তা আইনি প্রক্রিয়ায় হতে হবে। এই ঠুনকো অভিযোগে কাউকে পিটিয়ে হত্যা মেনে নেওয়া যায় না। তাঁকে আটক করে প্রচলিত আইনে শাস্তি দিতে পারত। তা না করে নির্মম নির্যাতনে হত্যা করেছে। এভাবে আর কত দিন সয়ে যাব, আর কত মায়ের বুক খালি হবে? স্থানীয় ইউপি সদস্য জাহাঙ্গীর আলম বলেন, অন্যায়ভাবে বাংলাদেশিদের নির্যাতন ও খুন যেন থামছেই না। সীমান্ত হত্যা বন্ধ করতে হবে।

পোর্ট থানার ওসি কামাল হোসেন ভূইয়া বলেন, ভারতের পেট্রাপোল থানা পুলিশ আমাদের কাছে নিহত শাহিনের লাশ বুঝিয়ে দিয়েছে। আইনি প্রক্রিয়া শেষে মরদেহটি তাঁর পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।