রক্তের হোলি খেলায় মেতে উঠেছে সরকার: বিএনপি

রক্তের হোলি খেলায় মেতে উঠেছে সরকার: বিএনপি

ক্ষমতাসীন সরকারকে রক্তপিপাসু উল্লেখ করে বিএনপি অভিযোগ করে বলেছে, রক্তের হোলি খেলায় মেতে উঠেছে আওয়ামী লীগ সরকার। গুম, খুন, বিচারবহির্ভূত হত্যার পর আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে বিরোধী নেতা-কর্মীদের হত্যা করতে লেলিয়ে দিয়েছে। এরই মধ্যে সারাদেশে ১৫ জন নেতা-কর্মীকে হত্যা করা হয়েছে। এই ধারাবাহিকতায় পঞ্চগড়ের বোদা উপজেলার ময়দানদিঘি ইউনিয়ন বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক আব্দুর রশিদ আরেফিনকে পুলিশ গুলি করে হত্যা করেছে। 

আজ শনিবার রাজধানীর নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলন করে দলটি। সেখানে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত দপ্তর সম্পাদক সৈয়দ এমরান সালেহ প্রিন্স দলের পক্ষে অভিযোগ তুলে ধরেন। 

তিনি বলেন, দেশের সকল জেলা ও মহানগরে বিএনপির পূর্বঘোষিত শান্তিপূর্ণ গণমিছিলে বিভিন্ন জায়গায় পুলিশ লাঠিচার্জ করেছে। গুলি করে হত্যা, নির্যাতন আর অসংখ্য নেতা-কর্মীকে আহত করা হয়েছে। 

বিএনপির অভিযোগ, সরকার দলীয় নেতা-কর্মীরাও অনেক স্থানে বিএনপির কার্যালয়ে হামলা-ভাঙচুর করেছে। পঞ্চগড়ে স্থানীয় ওসির নির্দেশে পুলিশ বিএনপির মিছিলে গুলি করে হত্যা ও বেধড়ক লাঠিপেটা করে। পুলিশের গুলিতে গুরুতর আহত হয়েছেন জেলা যুবদলের সাধারণ সম্পাদক নুরুজ্জামান বাবুসহ আরও অর্ধশতাধিক নেতা-কর্মী। পুলিশ এখনও নিহত আরেফিনের লাশ ঘিরে রেখেছে। পরিবার ও নেতাকর্মীদের কাছে লাশ হস্তান্তর করছে না।

প্রিন্স জানান, আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের বক্তব্যে জনগণ অনুমান করেছিল- বিএনপির শান্তিপূর্ণ কর্মসূচিতে সশস্ত্র হামলা করা হবে। জনগণের অনুমানই সত্য প্রমাণিত হয়েছে। পঞ্চগড়সহ অন্যান্য স্থানে হামলা, হত্যা, নির্যাতন পূর্বপরিকল্পিত। দেশকে বিরোধীদলশূন্য করতে সরকারের নীলনকশার অংশ হিসেবেই পঞ্চগড়ের আব্দুর রশিদ আরেফিনকে হত্যা করা হয়েছে। এই হত্যার দায় সম্পূর্ণ সরকারের।  

তিনি বলেন, নিশিরাতের সরকারের সীমাহীন লুটপাট, দুর্নীতি ও নিপীড়নে দেশের মানুষ অতিষ্ঠ। অবৈধ সরকারের লুটপাটের কারণে নিত্যপণ্যসহ সবকিছুর দাম আকাশ ছোঁয়া। দেশ থেকে লাখ লাখ কোটি টাকা পাচার করে দেশকে ফোঁকলা করে দেওয়া হয়েছে। দেশে গণতন্ত্র নেই, বিচার নেই, কথা বলার অধিকার নেই। উন্নয়নের নামে দেশে দুর্নীতির মহোৎসব চলছেই। ব্যাংকে টাকা নেই, গ্যাস নেই, বিদ্যুৎ নেই, পানি নেই, সবকিছুই যেন নেই আর নেই। এ অবস্থায় দেশের মানুষের বেঁচে থাকাই দায়। চারদিকে সরকারের বিরুদ্ধে ফুঁসে উঠেছে জনগণ। এ অবস্থায় দেশকে বাঁচাতে হলে আওয়ামী ফ্যাসিস্ট সরকারের পদত্যাগ ও নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচন দিতে হবে। জনপ্রতিনিধিত্বশীল সরকার ও সংসদ প্রতিষ্ঠিত করতে হবে। 

সংবাদ সম্মেলন থেকে পিরোজপুর, গাজীপুর, মাগুরা, নোয়াখালী ছাড়াও বিভিন্ন স্থানে পুলিশ ও আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীদের হামলা, গ্রেপ্তার ও ভাঙচুরের বিবরণ তুলে ধরে এসব ঘটনার নিন্দা ও প্রতিবাদ জানানো হয়।

সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন বিএনপি’র সহ-দপ্তর সম্পাদক তাইফুল ইসলাম টিপু, দলের সভাপতি আফরোজা আব্বাস, যুবদলের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মামুন হাসান, সাধারণ সম্পাদক আব্দুল মোনায়েম মুন্না, সাংগঠনিক সম্পাদক ইসহাক সরকার প্রমুখ।