যুক্তরাষ্ট্র-ইইউয়ে বাংলাদেশি গার্মেন্টস পণ্য রপ্তানি প্রবৃদ্ধি কমেছে

যুক্তরাষ্ট্র-ইইউয়ে বাংলাদেশি গার্মেন্টস পণ্য রপ্তানি প্রবৃদ্ধি কমেছে

রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে উদ্ভূত সংকটজনক পরিস্থিতিতে যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপীয় ইউনিয়নে বাংলাদেশি গার্মেন্টস পণ্যের রপ্তানি গত জুলাই থেকে ডিসেম্বরে হ্রাস পেয়েছে। বাংলাদেশি গার্মেন্টস পণ্য রপ্তানির সবচেয়ে বৃহৎ বাজারগুলোর তালিকায় শীর্ষে রয়েছে যুক্তরাষ্ট্র ও ইইউ।

এক্সপোর্ট প্রমোশন ব্যুরোর (ইপিবি) তথ্য বলছে, চলতি অর্থবছরের প্রথম ৬ মাসে যুক্তরাষ্ট্রে গার্মেন্টস পণ্য রপ্তানি করে বাংলাদেশের আয় হয়েছে ৪ দশমিক ২৭ বিলিয়ন ডলার, যা এর আগের বছরের একই সময়ের চেয়ে ১ দশমিক ১১ শতাংশ বেশি।

অর্থের পরিমাণ ৪ দশমিক ২৩ বিলিয়ন ডলার থাকলেও এর আগের বছরে প্রবৃদ্ধির হার ছিল ৪৫ দশমিক ৯১ শতাংশ।

জুলাই-ডিসেম্বরে ইইউ থেকে আয় হয়েছে ১১ দশমিক ৫০ বিলিয়ন ডলার। সেই হিসাবে প্রবৃদ্ধির হার ১৬ দশমিক ৬১ শতাংশ। এই তালিকায় যুক্তরাজ্যের কাছ থেকে পাওয়া ২ দশমিক ৩৯ বিলিয়ন মার্কিন ডলার অন্তর্ভুক্ত করা হয়নি। কারণ পরবর্তীতে ইইউ থেকে ইউকে আলাদা হয়ে গেছে।

অথচ ৬ মাস আগেও এর পরিমাণ ছিল ১২ বিলিয়ন ডলার এবং তখন প্রবৃদ্ধি ছিল ২৩ দশমিক ৮৩ শতাংশ। তবে, তখন এই তালিকায় যুক্তরাজ্য থেকে আসা ২ দশমিক ১৪ বিলিয়ন ডলার অন্তর্ভুক্ত ছিল।

এসব তথ্য থেকে বোঝা যায়, চলমান যুদ্ধের কারণে উদ্ভূত উচ্চ মুদ্রাস্ফীতি সত্ত্বেও বাংলাদেশি গার্মেন্টস পণ্য রপ্তানি থেকে আয় আগের বছরের তুলনায় কিছুটা বেড়েছে। কিন্তু, প্রবৃদ্ধি কমে গেছে।

বিশ্বব্যাপী করোনাভাইরাস মহামারির বিধিনিষেধ শিথিল হতে শুরু করার পর থেকে ২০২১ সালের মাঝামাঝি সময়ে এসে বাংলাদেশ গার্মেন্টস পণ্য রপ্তানিতে উল্লেখযোগ্য প্রবৃদ্ধি অর্জন করেছে।

কিন্তু গত বছরের ফেব্রুয়ারিতে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর যে প্রভাব পড়েছে, তা এখনো কাটানো যায়নি।

বাংলাদেশ গার্মেন্টস ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যান্ড এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের (বিজিএমইএ) সভাপতি ফারুক হাসান বলেন, 'পশ্চিমা অর্থনীতিতে উচ্চতর মুদ্রাস্ফীতির কারণে আন্তর্জাতিক খুচরা বিক্রেতা ও ব্র্যান্ডগুলো অর্ডার কম করেছে। সেই কারণে আগামী ৩ মাসের মধ্যেও পোশাক রপ্তানিতে কাঙ্ক্ষিত প্রবৃদ্ধি অর্জন নাও হতে পারে।'

বাংলাদেশের ৮০ শতাংশেরও বেশি গার্মেন্টস পণ্য যায় যুক্তরাষ্ট্র ও ইইউতে।

ইইউর পরিসংখ্যান বিষয়ক অফিস ইউরোস্ট্যাটের প্রাথমিক অনুমান অনুযায়ী, ২০২২ সালের ডিসেম্বরে ইউরো অঞ্চলের বার্ষিক মুদ্রাস্ফীতি ৯ দশমিক ২ শতাংশ হবে বলে আশা করা হয়েছিল, যা নভেম্বরে ১০ দশমিক ১ শতাংশ থেকে কমে গেছে।

রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ, চরম আবহাওয়া, বেকারত্ব ও রাজনৈতিক অস্থিরতাসহ নানা কারণে ইউরোপের বেশিরভাগ মানুষ দ্রব্যমূল্যের ক্রমবর্ধমান বৃদ্ধি নিয়ে উদ্বিগ্ন।