আর শান্তি সমাবেশ নয়, বিএনপিকে প্রতিরোধ: কাদের

আর শান্তি সমাবেশ নয়, বিএনপিকে প্রতিরোধ: কাদের

সরকার পতনের এক দফা আন্দোলনের নামে বিএনপি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে হত্যার ষড়যন্ত্র করছে বলে দাবি করেছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। তিনি বলেছেন, বিএনপির সমাবেশে শেখ হাসিনাকে হত্যার হুমকি দেওয়া হয়েছে। এ জন্য এখন থেকে শান্তি সমাবেশ নয়, সারা দেশে বিএনপিকে প্রতিরোধ করতে হবে।

রবিবার রাজধানীর আগারগাঁওয়ের বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি জাদুঘরের সামনে ঢাকা মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগ আয়োজিত শান্তি সমাবেশে এ ঘোষণা দেন ওবায়দুল কাদের। তিনি বলেন, ‘মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর এখন শেখ হাসিনা সরকারকে পতনের জন্য এক দফার ঘোষণা দিয়েছেন। আর গত ১৯ মে রাজশাহীর পুঠিয়ায় দলটির জেলা আহ্বায়ক (আবু সাঈদ চাঁদ) বলেন শেখ হাসিনাকে কবরস্থানে পাঠাতে হবে। আমরা অনেক শান্তি সমাবেশ করেছি। নেতা-কর্মীদের বলব আর শান্তি সমাবেশ নয়, তাদের প্রতিরোধ করা হবে। আমরা কোনো ব্যক্তিকে মারব না। আমরা খুনের রাজনীতি করি না।’

বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরকে উদ্দেশ করে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘চাপাবাজি অনেক করেছেন। আপনি কি ওই চাঁদকে জিজ্ঞেস করেছেন, শেখ হাসিনার প্রকাশ্য হত্যার হুমকি দেওয়ার কথা। আপনারা বলেন, আপনাদের কর্মীরা বিপদে আছে, তাদের হয়রানি করা হচ্ছে, গ্রেপ্তার করা হচ্ছে। ১৯ মে শেখ হাসিনাকে হত্যার হুমকি দিয়ে আজকে ২১ তারিখেও তিনি বাইরে আছেন, জেলে যাননি। আমি জানি না স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বিষয়টিতে কত দূর অবহিত।’

আওয়ামী লীগের নেতা–কর্মীদের উদ্দেশে ওবায়দুল কাদের বলেন, আজ থেকে প্রতিরোধের সংগ্রাম চলবে। চক্রান্তকারী, ষড়যন্ত্রকারীদের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ চলবে। তাদের ষড়যন্ত্রের দুর্গ চূর্ণ–বিচূর্ণ করে দিতে হবে। তিনি আরও বলেন, ‘আমরা সত্যের পথে, ইমানের পথে আছি, মানুষের পাশে আছি। আমরা ভাগ্যবান শেখ হাসিনার মতো নেতৃত্ব পেয়েছি, তাঁকে হারাতে চাই না। তাঁর হাতকে শক্তিশালী করতে হবে।’

আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক তাঁর দলেরও এক দফা দাবি আছে বলে জানান। তিনি বলেন, তাঁদের এক দফা এক দাবি বিএনপির সাম্প্রদায়িক, দুর্নীতির রাজনীতিকে কবরস্থানে পাঠানো। তারা আওয়ামী লীগের নেত্রীকে কবরস্থানে পাঠাতে চায়। তাদের রাজনীতিকে কবরস্থানে পাঠাতে হবে।

বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান বাইরে বসে বসে ফন্দি আঁটছে, পরামর্শ দিচ্ছে দাবি করে ওবায়দুল কাদের বলেন, তারা সিদ্ধান্ত নিয়েছে শেখ হাসিনার অধীনে নির্বাচন নয়, এ সরকারের অধীনে নির্বাচন নয়। নির্বাচন করবেন না সেটা জানি, কিন্তু নির্বাচন ঠেকাতে এলে জনগণকে নিয়ে প্রতিরোধ গড়ে তোলা হবে। কোনো অপশক্তিকে বাংলাদেশের শান্তিপূর্ণ নির্বাচনে বাধা দিতে দেওয়া হবে না। তিনি আরও বলেন, নির্বাচন হবে সংবিধান অনুযায়ী। সংবিধানের বাইরে কোনো নির্বাচন বাংলাদেশে হতে দেওয়া হবে না। সব দেশে সংবিধান অনুযায়ী নির্বাচন করে, এ দেশে কেন নয়, প্রশ্ন তোলেন তিনি?

আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন সম্পর্কে সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেন, নির্বাচনে আর মাত্র কয়েক মাস। এখন থেকে প্রস্তুত হতে হবে। নেত্রীকে যে কটূক্তি করেছে, তার প্রতিবাদ ও বিক্ষোভ করতে হবে সারা দেশে। তিনি আরও বলেন, ‘আর আমরা ছেড়ে দেব না। এই নগরীতে তাদের বিক্ষোভের পাশে শান্তির সমাবেশ করেছি। একটা টুঁ শব্দও হয়নি, কোনো হানাহানি, মারামারিতে আওয়ামী লীগের কর্মীরা যায়নি। ফখরুলের লজ্জা থাকলে এ কথা স্বীকার করত। প্রকাশ্য দিবালোকে শত শত মিটিং করলা আমরা তো কোনো মিছিলে হামলা করিনি। অথচ আমরা বিরোধী দলে থাকতে রাস্তায় পিটুনি খেয়েছি।’

ঢাকা মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ বজলুর রহমানের সভাপতিত্বে আরও বক্তব্য দেন আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া, সাংগঠনিক সম্পাদক মির্জা আজম, মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এস এম মান্নান, মহানগর নেতা কাদের খান, উইলিয়াম প্রলয় সমাদ্দার, স্থানীয় সংসদ সদস্য ও আওয়ামী লীগের নেতারা।

ওবায়দুল কাদেরের বক্তব্য শেষে জানানো হয়, আগামী শনিবার রাজধানীর বাড্ডায় বিক্ষোভ মিছিল ও প্রতিবাদ সমাবেশ করবে ঢাকা মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগ। এ ছাড়া মঙ্গলবার হাজারীবাগে শেখ হাসিনাকে হত্যার হুমকির প্রতিবাদে সমাবেশ করার ঘোষণা দিয়েছে ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগ। এতে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন ওবায়দুল কাদের।