ভুটানকে উড়িয়ে ১৪ বছর পর সাফের সেমিতে বাংলাদেশ

ভুটানকে উড়িয়ে ১৪ বছর পর সাফের সেমিতে বাংলাদেশ

জয় কিংবা ড্র নয়; ১-০ ব্যবধানে হারলেও সাফ চ্যাম্পিয়নশিপের সেমিফাইনাল নিশ্চিত করবে বাংলাদেশ। এমন সমীকরণকে সামনে রেখেই ভুটানের বিপক্ষে মাঠে নেমেছিল লাল-সবুজ জার্সিধারীরা। কিন্তু সেই সমীকরণ ভুলে গ্রুপ পর্বের শেষ ম্যাচে ভুটানকে রীতিমতো বিধ্বস্ত করেছে বাংলাদেশ। ৩-১ গোলের জয় নিয়ে দীর্ঘ ১৪ বছর পর সাফের সেমিফাইনাল নিশ্চিত করেছে জামাল ভুঁইয়ার দল।

২০০৯ সালে সর্বশেষ সাফের শেষ চারে খেলেছিল বাংলাদেশ। এরপর ২০১১, ২০১৩, ২০১৫ এবং ২০১৮ সালে বাংলাদেশ গ্রুপ পর্ব থেকেই বিদায় নেয়। ২০২১ সালে লিগভিত্তিক টুর্নামেন্টে পাঁচ দলের মধ্যে চতুর্থ হয় বাংলাদেশ।

বুধবার বেঙ্গালুরুর কান্তিরাভা স্টেডিয়ামে নামার আগে ভুটানের বিপক্ষে পরিসংখ্যান বাংলাদেশের পক্ষে ছিল। সাফে আগের ৬ বারের দেখায় কখনও হারেনি লাল-সবুজ জার্সিধারীরা। এবারও হারেনি। ভুটানকে হারিয়ে ‘বি’ গ্রুপ রানার্সআপ দল হিসেবে শেষ চারে পা রেখেছে বাংলাদেশ।

আগামী ১ জুলাই সেমিফাইনালে বাংলাদেশের প্রতিপক্ষ ‘এ’ গ্রুপের চ্যাম্পিয়ন কুয়েত। একই দিনে দ্বিতীয় সেমিফাইনালে ‘এ’ গ্রুপে রানার্সআপ হওয়া স্বাগতিক ভারতের বিপক্ষে মাঠে নামবে ‘বি’ গ্রুপ চ্যাম্পিয়ন লেবানন।

ভুটানের বিপক্ষে বাংলাদেশের শুরুটা অবশ্য ভালো হয়নি। ম্যাচের মাত্র ৯ মিনিটে আক্রমণে যায় ভুটান। ডি বক্সের প্রান্ত থেকে শেরুব দর্জির জোরালো শট শুয়ে পড়ে তালুবন্দি করেন গোলরক্ষক জিকো। সে যাত্রায় বিপদ না হলেও ১২ মিনিটে দারুণ এক গোলে বাংলাদেশ শিবিরে ভয় ধরিয়ে দেয় ভুটান। ডি-বক্সের বাইরে থেকে তপু বর্মণকে কাটিয়ে তিশেল থ্রিম নামগিল জোরালো শটে জিকোকে পরাস্ত করে ভুটানকে এগিয়ে নেন।

১৮ মিনিটে দ্বিতীয় গোলও পেতে পারতো ভুটান। নিমা ওয়াংদি দু’জনকে কাটিয়ে ডি-বক্সের বাইরে থেকে জোরালো শট নিলেও তা ক্রসবারে লেগে প্রতিহত হয়। তবে শুরুর ধাক্কা কাটিয়ে প্রথমার্ধের বাকি সময় ম্যাচের নিয়ন্ত্রণ নিজেদের দখলে রাখে হাভিয়ের কাবরেরার দল। তাতে সমতা ফেরায় ২২ মিনিটেই। আগের ম্যাচের তৃতীয় গোলদাতা শেখ মোরসালিন দারণ এক শটে দলকে ম্যাচে ফিরিয়েছেন। রাকিবের পাসে বক্সের বাইরে থেকে নেওয়া মোরসালিন বাঁ পায়ের বুলেট গতির শট বাংলাদেশকে সমতায় ফেরায়।

৮ মিনিটের ব্যবধানে লিডও পেয়ে যায় বাংলাদেশ। ৩০ মিনিটে দলের দ্বিতীয় গোলটিরও নেপথ্যে ছিলেন মোসরাসিল। মোরসালিনের কাছ থেকে উড়ে আসা বলটি জামালকে দিতে শট নিয়েছিলেন রাকিব। তবে সেটি ভুটানের জিগমের গায়ে লেগে নিজেদের জালে জড়ায়। আর তাতে ২-১ ব্যবধানে এগিয়ে যায় বাংলাদেশ।

৩৪ মিনিটেই ব্যবধান বাড়িয়ে নিতে পারতো বাংলাদেশ। এবারও সুযোগ এসেছিল রাকিবের সামনে। মোরসালিনের বাড়ানো বল যখন রাকিব পেয়েছিলেন তখন তার সামনে একা ভুটানের গোলরক্ষক। রাবিক গোলরক্ষকের পাশ দিয়ে শটও নিয়েছিলেন। কিন্তু দ্বিতীয় পোস্ট ঘঁষে বল চলে যায় বাইরে।

তবে ব্যবধান বাড়াতে বেশি সময় নেননি রাকিব। ২ মিনিট পরই বক্সের বাইরে ভুটানের ডিফেন্ডার শেরুব দর্জিকে কাটিয়ে রাকিব একাই ঢুকে পড়েন প্রতিপক্ষের বিপদ সীমানায়। এরপর ডান পোস্টের কাছ থেকে রাকিবের নেওয়া শট দ্বিতীয় পোস্টে লেগে ভুটানের জালে জড়ায়। শেষ পর্যন্ত ৩-১ গোলে এগিয়ে থেকে প্রথমার্ধের খেলা শেষ করে বাংলাদেশ।

বিরতির পর বাংলাদেশের একাদশে ৬টি পরিবর্তন আসে। এমনকি দ্বিতীয়ার্ধে আর তেড়েফুঁড়েও খেলেনি লাল-সবুজ জার্সিধারীরা। এই অর্ধে ভুটান ব্যবধান কিছুটা কমানোর চেষ্টা করেছিল। কিন্তু বাংলাদেশ তাদের সেই সুযোগ দেয়নি। তাতে ম্যাচের স্কোরলাইনেরও কোনো হেরফের হয়নি।