পাকিস্তানে ‘সারপ্রাইজ’ আনোয়ারুল হক কাকার

পাকিস্তানে ‘সারপ্রাইজ’ আনোয়ারুল হক কাকার

পাকিস্তানের অষ্টম তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রধানমন্ত্রী হতে চলেছেন স্বল্পপরিচিত সিনেটর আনোয়ারুল হক কাকার। সব দল তাকে বেছে নেয়াকে ‘সারপ্রাইজ’ হিসেবে উল্লেখ করছেন বিদায়ী সরকারের অংশীদার সব দল এবং বিরোধীরা। বেলুচিস্তানের এই সিনেটরের নাম প্রস্তাব করেন বিদায়ী বিরোধী দলীয় নেতা রাজা রিয়াজ। কয়েক সপ্তাহ ধরে এ নিয়ে নানা কানাঘুষা, দেনদরবারের পর বেলুচিস্তান আওয়ামী পার্টির (বিএপি) সিনেটর কাকারকে বেছে নিয়েছে পাকিস্তান। তাকে প্রধানমন্ত্রী নিয়োগ সংক্রান্ত বিদায়ী প্রধানমন্ত্রীর পাঠানো সারসংক্ষেপে স্বাক্ষর করেছেন প্রেসিডেন্ট ড. আরিফ আলভি। আজ রোববার কোনো এক সময় কাকারকে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রধানমন্ত্রী হিসেবে শপথ পড়ানোর কথা।

তাকে বেছে নেয়ার ফলে সব মহল থেকে ইতিবাচক প্রতিক্রিয়া দেয়া হয়েছে। এতেই পরিষ্কার হয়েছে যে, সব রাজনৈতিক দলের কাছে তিনি গ্রহণযোগ্য এবং তার মনোনয়ন একটি সারপ্রাইজ। উপরন্তু কাকারের দল বিএপির ওপর দেশের এস্টাবলিশমেন্ট বা সামরিক মহলের আশীর্বাদ আছে বলে মনে করা হয়। পাকিস্তানের সবচেয়ে বড় দুই দল পাকিস্তান মুসলিম লিগ-নওয়াজ (পিএমএলএন) ও পাকিস্তান পিপলস পার্টির (পিপিপি) সঙ্গেও আছে তার সুসম্পর্ক। তার প্রশংসা করেছেন পাকিস্তানের সুপরিচিত সাংবাদিক হামিদ মীরও।

বিদায়ী জোট সরকারের অনেক সদস্য অনলাইন ডনকে বলেছেন, জোটের অনেকের কাছেই আনোয়ারুল হক কাকারের মনোনয়ন এক বিরাট বিস্ময়। এমনকি কাকারকে মনোনয়ন দেয়ার সারসংক্ষেপে যারা স্বাক্ষর করেছেন তারা পর্যন্ত নাম প্রকাশের আগে পর্যন্ত জানতেন না কাকার হতে চলেছেন তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রধানমন্ত্রী। বিদায়ী ক্ষমতাসীন জোটের একজন রাজনীতিক বলেছেন, পাকিস্তানের সাবেক প্রধানমন্ত্রী নওয়াজ শরীফ ও বিদায়ী প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ শরীফের মনোনয়নও এক্ষেত্রে টেকেনি। তাই যেখান থেকেই কাকারের নাম আসুক, সব অংশীদারকে তা মেনে নিতে হবে। একই মন্তব্য করেছেন পিপিপি নেতা সৈয়দ খুরশিদ শাহ। তিনি বলেন, কাকার যে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধানমন্ত্রী হচ্ছেন, সে বিষয়ে কেউই অবগত ছিলেন না। তিনি আরও বলেন, পিপিপি তিনটি নাম প্রস্তাব করেছিল। এ নামগুলো আরও ভাল বাছাই হতে পারতো। কিন্তু যেখান থেকেই নাম আসুক, আমাদেরকে সর্বোত্তম আশা রাখতে হবে।

ওদিকে বিরোধী দলীয় নেতা রাজা রিয়াজ সাংবাদিকদের বলেছেন- আমিই কাকারের নাম দিয়েছি। প্রধানমন্ত্রী এতে সম্মতি দিয়েছেন। সারসংক্ষেপে স্বাক্ষর করেছি আমি এবং প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ। আজ রোববার তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রধানমন্ত্রী হিসেবে কাকারের শপথ হতে পারে বলে তিনি জানান। তবে প্রেসিডেন্সির একটি সূত্র অনলাইন ডনকে বলেছেন, দুই/এক দিনের মধ্যে হবে শপথ অনুষ্ঠান।

রাজা রিয়াজ বলেন, তত্ত্বাবধায়ক সরকার প্রধান হিসেবে অন্য যেসব নাম এসেছে তা প্রকাশ না করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন তিনি এবং শেহবাজ শরীফ। উভয় পক্ষই সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রধানমন্ত্রী বাছাই করা হবে একটি ছোট্ট প্রদেশ থেকে। ওদিকে প্রধানমন্ত্রী ও বিরোধী দলীয় নেতার সারসংক্ষেপে প্রেসিডেন্ট ড. আরিফ আলভি স্বাক্ষর করার সঙ্গে সঙ্গে আনোয়ারুল হক কাকারকে নিরাপত্তা এবং প্রধানমন্ত্রীর প্রোটোকল দেয়া হয়েছে।

শুক্রবার রাতে জোটের সঙ্গীদের সম্মানে বিদায়ী নৈশভোজ দেন বিদায় প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ শরীফ। সেখানে অংশীদাররা শেহবাজ শরীফকে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রধানমন্ত্রী ইস্যুতে সিদ্ধান্ত নেয়ার সর্বময় ক্ষমতা দেন।