হজক্যাম্পে ১১ যাত্রী রেখে পালিয়েছে এজেন্সী মালিক!

হজক্যাম্পে ১১ যাত্রী রেখে পালিয়েছে এজেন্সী মালিক!

হজ ফ্লাইটের মিথ্যা আশ্বাস দিয়ে ১১ যাত্রীকে ঢাকার হজক্যাম্পে নিয়ে এসে তাদের রেখেই এজেন্সী মালিক চলে গেছেন মক্কায়। এই ১১ জন যাত্রীকেই শনিবার ফ্লাইটের আশ্বাস দেয়া হলেও শুক্রবার হজক্যাম্পে এসে তারা জানতে পারলেন এখনো তাদের বিমান টিকিট ও ভিসার আবেদনই করা হয়নি। যদিও গত ৩০ জুলাই এজেন্সী মালিক ফিরোজ কিবরিয়া নিজেই চলে গেছেন মক্কায়।

সাউদিয়া ট্রাভেলস এন্ড ট্যুরস নামের এই এজেন্সীকে টাকা দিয়ে বিপাকে পড়েছেন ১১ হজযাত্রী। এ অবস্থায় হজযাত্রীদের গ্রুপ লিডার নিজেও এজেন্সীর মালিকের সাথে যোগাযোগ করতে ব্যর্থ হয়ে শরনাপন্ন হয়েছেন ঢাকা হজ অফিসের।

শুক্রবার সকালে থেকেই প্রতারিত হওয়া এই হজযাত্রীরা বিমান টিকিট ও ভিসার প্রক্রিয়া করার জন্য অপেক্ষায় আছেন আশকোনার হজ অফিসে।

হজ অফিস সূত্র জানায়, সাউদিয়া ট্রাভেলস এন্ড ট্যুরস (লাইসেন্স নং ১১৭০) এর মাধ্যমে এ বছর হজে যাওয়ার জন্য গ্রুপ লিডারের মাধ্যমে টাকা জমা দিয়েছেন হজযাত্রীরা। তারা প্রত্যেকেই সাড়ে তিন লাখ টাকা করে জমা দিয়েছেন। এদের মধ্যে হজ অফিসে এসে লিখিত অভিযোগ দাখিল করেছেন জামাল শিকদার ও আবদুস সালাম নামের দুজন হজযাত্রী।

হজযাত্রী জামাল শিকদার জানান, আমি অনেক আগেই সব টাকা পরিশোধ করেছি। আমার ট্র্যাকিং নম্বর এন ১এফ৮৩৮১এফসি৪৬। নিবন্ধিত হজযাত্রী বা পিআইডি নং ১১৭০০৬১। তার বাড়ি ভোলা জেলার মনপুরার চরনিজাম এর বিচ্ছিন্ন একটি দ্বীপে। ৭১ বছরের বয়োবৃদ্ধ এই হজযাত্রী আরো জানান, জীবনের এই শেষ বেলায় এসে জমি বিক্রি করে আমি হজের টাকা জমা দিয়েছি। এখন যদি হজে যেতে না পারি তাহলে হয়তো জীবনে আর কোনো দিন হজেই যাওয়া হবে না।

এজেন্সীর গ্রুপ লিডার মহিবুল্লাহ জানান, এজেন্সী মালিক ফিরোজ কিবরিয়া আমাকে বলেছেন ৩ আগষ্ট, শনিবার এই যাত্রীদের ফ্লাইট। বিমান টিকিট ও তাদের ভিসা বাংলামোটরস্থ এজেন্সী অফিসে থাকবে। আপনি এদেরকে পাঠিয়ে দেয়ার ব্যবস্থা করবেন। পরে বৃস্পতিবার এজেন্সী অফিসে গিয়ে খোঁজ নিয়ে জানতে পারলাম আমার গ্রুপের দুই জন হজযাত্রীর আবদুস সালাম নামের একজনের ভিসার আবেদন করা হয়েছে কিন্তু বিমান টিকিট করা হয়নি। আর জামাল শিকদারের বিমান টিকিট ও ভিসার কোনোটির কোন কাজ করা হয়নি। এখন এজেন্সী মালিক আমার ফোনও ধরছেন না।

প্রতারণার শিকার এই দুই হজযাত্রী জানান, তাদের সাথে আরো ৯ জন হজযাত্রী আছেন তারাও একই রকম বিপাকে পড়েছেন। তারাও হজ ক্যাম্পে এসে সমসার সমাধানের জন্য নানা জনের কাছে সাহায্য চাইছেন।

ঢাকা হজ অফিসের পরিচালক মো: সাইফুল ইসলাম এ বিষয়ে জানান, আমরা দুজন হজযাত্রীর কাছ থেকে অভিযোগ পেয়েছি। যেহেতু এজেন্সী মালিক দেশে নেই তাই এখনি কোন এ্যাকশনে আমরা যেতে পারছি না । তবে আমরা হজযাত্রীদের নিকট থেকে লিখিত অভিযোগ নিচ্ছি। ব্যাংকে খোঁজ আবদুস সালাম নামের একজনের বিমান টিকিটের টাকা স্যোসাল ইসলামী ব্যাংক কাকরাইল শাখায় জমা আছে বলেও জানান হজ অফিসার।