জনগণের ঐক্য সৃষ্টি হলে দুর্নীতি অপশাসনের মুক্তি হবে: ড. কামাল হোসেন

জনগণের ঐক্য সৃষ্টি হলে দুর্নীতি অপশাসনের মুক্তি হবে: ড. কামাল হোসেন

জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের আহ্বায়ক ও গণফোরাম সভাপতি ড. কামাল হোসেন বলেছেন, জনগণের ঐক্য সৃষ্টি হলে দেশে দুর্নীতি-অপশাসনের মুক্তি হবে। সকলকে ঐক্যের ডাক দিয়ে সারা দেশের জেলা উপজেলায় যাওয়ার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, ঐক্যের কারণেই অনেক অসম্ভবকে সম্ভব করা হয়েছিল। এটা আমরা একাত্তরে বঙ্গবন্ধুুর সংগ্রামী জীবনে দেখেছি।

সোমবার বিকালে জাতীয় প্রেসক্লাব মিলনায়তনে ‘বঙ্গবন্ধু হত্যা ও প্রতিরোধ যুদ্ধ’ শীর্ষক আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন কৃষক শ্রমিক জনতা লীগের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি বঙ্গবীর কাদের সিদ্দিকী বীর উত্তম।

ড. কামাল হোসেন আরো বলেন, সংবিধানে বঙ্গবন্ধুর দেয়া আদেশ অমান্য করছে এ সরকার। তিনি (বঙ্গবন্ধু) যে রাষ্ট্র রেখে গেছেন সেই রাষ্ট্রের মধ্যে যেগুলো আজকে ঘটছে এগুলো ষোলআনা বঙ্গবন্ধুর যে আদেশ ছিলো তার পরিপন্থি। জনগণ ক্ষমতার মালিক তিনি তো সংবিধানে স্বাক্ষর করে দিয়ে গেছেন। আপনারা নিজেদের কি মালিকের ভুমিকায় দেখছেন? যারা দেশ শাসন করছে, বঙ্গবন্ধুর স্বাক্ষরিত আদেশকে এরা অমান্য করে যাচ্ছে। সম্পূর্ণ এর বিপরীত কাজ করা হচ্ছে।

ড. কামাল হোসেন আরো বলেন, বঙ্গবন্ধুকে আমরা সন্মান করি, শ্রদ্ধা করি আর উনার কথা আমরা ষোষআনা অমাণ্য করি এটাকে কী মিলানো যায়?এর উত্তর কী? আমরা তো কোনো উত্তর পাই না। তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের বাংলাদেশ পাচ্ছি না আমরা।

তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধুর স্বপ্ন ছিলো জনগণ হবে ক্ষমতার মালিক। বিভিন্নভাবে আমাদেরকে অভিযোগ করতে হচ্ছে- দেশ কার নিয়ন্ত্রণে চলছে, পুলিশ কার আদেশে তারা বিভিন্নভাবে মানুষকে হয়রানি করছে। জনগণ যদি ক্ষমতার মালিকের ভুমিকায় থাকতো আজকে তো এ ধরনের আইনশৃঙ্খলার অবস্থা থাকতো না, এই ধরনের নারী নির্যাতিত হতো না, হত্যাকান্ডের শিকার হতো না এবং অত্যন্ত লজ্জ্বার বিষয় যেসব ঘটনা প্রতিদিনের পত্র-পত্রিকায় পড়তে হচ্ছে -এটা যদি সত্যিকার অর্থে বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের রাষ্ট্র থাকতো, জনগণ ক্ষমতার মালিক থাকতো - এগুলো কল্পনাই করা যেতো না। তবে জনগনকে ঐক্যবদ্ধ করা গেলে বঙ্গবন্ধুর সেই স্বপ্নের বাংলদেশ গড়ে উঠবে।

গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের ট্রাস্টি ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী বলেন, বঙ্গবন্ধুর পাশাপাশি বেগম মুজিব, তাজউদ্দিনসহ চার নেতার পাশাপাশি জিয়াউর রহমানকে স্মরণ করা উচিত।

জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল (জেএসডি) সভাপতি আ স ম আব্দুর রব বলেন, মুক্তিসংগ্রামের পর বিপ্লবী জাতীয় সরকার গঠন না করে উপনিবেশিক শাসন ব্যবস্থা-উপনিবেশিখ প্রশাসন অব্যহত রাখার মাধ্যমে বঙ্গবন্ধুকে হত্যার দিকে ঠেলে দেয়া হয়েছিল। তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ বঙ্গবন্ধু হত্যাকে দোষারোপের রাজনীতিতে আবদ্ধ রেখেছে-গভীর সত্য অনুধাবন করতে চায়নি।

তিনি আরো বলেন, ঐসময়ে বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করা হচ্ছে জেনেও সরকার তখন কেনো নিরব থেকেছে? এদায় কার। তিনি বলেন, জাতির ভবিষ্যত নির্মাণে বঙ্গবন্ধু হত্যার সত্য অনুধাবন করা উচিত, মুক্তিযুদ্ধের সঠিক ইতিহাস নির্মাণ করা উচিত। তিনি বলেন, জাতিকে এখন ঐক্যবদ্ধ হওয়া ছাড়া কোনো গতি নেই।

তিনি বলেন, এককভাবে কোনো দল কোনো কর্মসূচি করার মধ্য দিয়ে আসলে স্বৈরাচারের আয়ু বৃদ্ধি করবে। সরকারের বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ আন্দোলনের বিকল্প নাই

সরকারের উদ্দেশ্যে কৃষক শ্রমিক জনতা লীগের সভাপতি বঙ্গবীর কাদের সিদ্দিকী বলেন, সবাইকে দূরে না ঠেলে সমগ্র দেশকে বুকে আগলিয়ে ধরার চেষ্টা করুন। না হলে সামনে সমূহ বিপদ, সেই বিপদ থেকে এ সরকার মুক্তি পাবে না।

আলোচনা সভায় দলের মহাসচিব হাবিবুর রহমান খোকা ও সাংগঠনিক সম্পাদক ইকবাল সিদ্দিকীর পরিচালনায় আলোচনা সভায় সাবেক পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী আবুল হাসান চৌধুরী, কাদের সিদ্দিকীর স্ত্রী বেগম নাসরিন সিদ্দিকী, কৃষক শ্রমিক জনতা লীগের শফিকুল ইসলাম দেলোয়ার, হাবিব উন নবী সোহেল, রেহান মুস্তাফিজ প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।

এমআই