রংপুর মেডিকেলে একসাথে ৪ সন্তানের জন্ম

রংপুর মেডিকেলে একসাথে ৪ সন্তানের জন্ম

রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে একসাথে চার সন্তানের জন্ম দিয়েছেন এক মা। এর মধ্যে তিনটি ছেলেশিশু এবং একটি মেয়েশিশু। এই মায়ের বাড়ি কুড়িগ্রামের নাগেশ্বরীতে। বর্তমানে চারজনই ভালো থাকলেও মায়ের রক্তক্ষরণ হয়েছে বেশি। উৎসুক রোগী এবং অভিভাবকরা বাচ্চাদের দেখতে ভিড় জমিয়েছেন শিশু ওয়ার্ডে। তারা সবাই মা ও শিশুদের সঠিক চিকিৎসার দাবি জানিয়েছেন।

বিয়ের আট বছর পর প্রথম সন্তান ইস্যু। তাও একসাথে চারজন। কুড়িগ্রাম সদর উপজেলার মনিরুজ্জামান বাঁধন এবং আশা বেগম দম্পতি আগে থেকেই জানতেন বিষয়টি। সাহস নিয়ে চার সন্তানকে জন্ম দিতে মাসখানেক আগে রংপুরে একটি বাসা ভাড়া নিয়ে চিকিৎসা করাতে থাকেন। মঙ্গলবার রাত ৯টা ৪০ মিনিটে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের গাইনি বিভাগে সিজারের মাধ্যমে সম্পূর্ণ সুস্থ চার সন্তানকে জন্ম দেন মা আশা বেগম। তিন ছেলে ও এক মেয়ে সন্তান ভালো থাকলেও রক্তক্ষরণ বেশি হওয়ায় মাকে পোস্ট অপারেটিভ ওয়ার্ডে রাখা হয়েছে।

রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে শিশু ওয়ার্ডের নার্স অনিকা ইয়াসমিন জানান, সন্তান চারজনই ভালো আছে। আমরা সব ধরনের সেবা নিশ্চিত করার জন্য কাজ করছি।

হাসপাতালটির কর্তব্যরত ইমার্জেন্সি মেডিকেল অফিসার তাহসিনা বিনতে আবেদ জানান, মা আশা বেগমের অতিরিক্ত রক্তক্ষরণ হয়েছে। কারণে তাকে পোস্ট অপারেটিভ ওয়ার্ডে অবজারভেশনে রাখা হয়েছ হয়েছে ২৪ ঘন্টা পর তার শরীরের অবস্থা সম্পর্কে বলা যাবে। বাচ্চারা ভালো আছে। আশা করি মা ভালো থাকবেন। তিনি বলেন, একসাথে চার সন্তানের সিজারের বিষয়টিও চ্যালেঞ্জ ছিল আমাদের। চিকিৎসকরা সেটি সুন্দরভাবে করতে পেরেছেন।

শিশু বিভাগে নার্সদের পাশাপাশি চার সন্তানের সন্তানের দেখাশোনা করছেন বাবা এবং দাদি। একসাথে চার সন্তানকে পেয়ে ভীষণ খুশি তারা। মা এবং সন্তান ভালোভাবে সুস্থ থেকে বেড়ে উঠুক এই প্রত্যাশা তাদের।

একসাথে হওয়া চার সন্তানের বাবা মোহাম্মদ মনিরুজ্জামান বাঁধন জানান, আমরা আল্ট্রাসনোগ্রামের মাধ্যমে জানতে পারি আমার স্ত্রী আশা বেগমের গর্ভে একসাথে চার সন্তান রয়েছে। রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ডাক্তার ফৌজিয়া ম্যাডামের অধীনে চিকিৎসা গ্রহণ করি। সন্তান ডেলিভারি দিন এগিয়ে আসায় এক মাস আগে আমি আমার স্ত্রীকে নিয়ে রংপুরে বাড়ি ভাড়া নেই এবং চিকিৎসকের নিবিড় তত্ত্বাবধানে থাকি। তাদের পরামর্শে মঙ্গলবার হাসপাতালে ভর্তি করি এবং রাত ৯টা ৪০ মিনিটে আমার স্ত্রী একসাথে তিন পুত্র এবং এক কন্যার জন্ম দেন। আমার সন্তানদের এবং ওদের মায়ের জন্য দোয়া করবেন। পাশাপাশি সুচিকিৎসা নিশ্চিত করারও দাবি জানান তিনি।

শিশুদের দাদি মমতাজ বেগম জানান, আমিসহ আমাদের পুরো পরিবার সবাই খুশি। যখন আমরা জানতে পারি বিষয়টি তখন থেকেই আল্লাহর কাছে দোয়া করে এসেছি- যেন আল্লাহ সুস্থভাবে চারজনকেই পৃথিবীতে আনেন। আল্লাহ এনেছেন। এখন সবার দোয়া চাই।

একসাথে হওয়া চার সন্তানের পিতা মনিরুজ্জামান ঠাকুরগাঁও পল্লী বিদ্যুৎ অফিসে চাকরি করেন। চার সন্তানকে দেখতে শিশু ওয়ার্ডে ভিড় জমিয়েছেন হাসপাতালের বিভিন্ন ওয়ার্ডের রোগী এবং অভিভাবকরা। তাদের প্রত্যাশা সুস্থ ও সুন্দরভাবে বেড়ে উঠুক চারজন। এজন্য সঠিক চিকিৎসা সেবা দেয়ার দাবিও তাদের। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, এর আগে একসাথে তিনজনের জন্মগ্রহণের রেকর্ড আছে।