সীতাকুণ্ডে বিস্ফোরণ: নিরাপত্তা ঘাটতি সমাধানে জোর আইএলও’র

সীতাকুণ্ডে বিস্ফোরণ: নিরাপত্তা ঘাটতি সমাধানে জোর আইএলও’র

চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডে বিএম কন্টেইনার ডিপোতে ভয়াবহ বিস্ফোরণে কমপক্ষে ৪৯ জনের প্রাণহানীতে গভীর শোক প্রকাশ করেছে আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থা আইএলও।

সোমবার নিজস্ব ওয়েবসাইটে দেয়া এক বিবৃতিতে তারা বলেছে, হতাহতদের পরিবারবর্গের প্রতি আমরা আন্তরিক সহমর্মিতা জানাই। রাসায়নিক পদার্থ যথাযথভাবে হ্যান্ডেলিং এবং গুদামজাত করা কতটা প্রয়োজন তা ফুটিয়ে তুলেছে এই দুর্ঘটনা। একই সঙ্গে সংরক্ষণাগারের স্টাফদের কতটা যথাযথ সচেতনতা ও অপারেশনাল পর্যায়ে স্টোরেজের কর্মীদের প্রশিক্ষণ প্রয়োজন তা ফুটিয়ে তুলেছে। উপরন্তু এই ঘটনা একটি কার্যকর শিল্প এবং উদ্যোক্তা পর্যায়ে নিরাপত্তা কাঠামো (ইন্ট্রাসিয়াল অ্যান্ড এন্টারপ্রাইজ সেফটি ফ্রেমওয়ার্ক) এবং প্রয়োগ ও প্রশিক্ষণ সিস্টেমের প্রয়োজনীয়তাকে জোরালোভাবে তুলে ধরেছে। যাতে, সব ধরনের বিপদ প্রশমন, প্রস্তুতি, প্রতিক্রিয়া ও পুনরুদ্ধারের জন্য একটি কাঠামোগত পদ্ধতি নিশ্চিত করা যায়। এর জন্য প্রয়োজন উন্নত সহযোগিতা এবং সরকারের বিভিন্ন বিভাগ, নিয়োগকর্তা, শ্রমিক প্রতিনিধি এবং নাগরিক সমাজের মধ্যে অংশীদারিত্ব।

আইএলও তার বিবৃতিতে আরও বলেছে, এ সমস্যা সমাধানে বিভিন্ন ক্ষেত্রে পদক্ষেপ গ্রহণ প্রয়োজন। এর মধ্যে আছে লজিস্টিক সেক্টরে এবং পরিবহন খাতে বিধিবিধান এবং তার প্রয়োগের পর্যালোচনা। পর্যাপ্ত ক্ষতিপূরণ দেয়া। কর্মসংক্রান্ত দুর্ঘটনায় যেসব মানুষ প্রাণ হারিয়েছেন তাদের পরিবারকে, আহত ও পঙ্গু শ্রমিকদের আয়ের ক্ষেত্রে সাপোর্ট দেয়া এবং নিরাপত্তামূলক প্রচারণা।যা টার্গেট করে পরিবহন বা লজিস্টিক সার্ভিস প্রদানকারীদের, একই সঙ্গে জরুরি সার্ভিস সংক্রান্ত ব্যক্তিদের।

সম্প্রতি তৈরি পোশাক খাতে সরকার, নিয়োগকর্তা এবং শ্রমিক প্রতিনিধিরা বাংলাদেশে একটি আধুনিক ও ব্যাপক বিস্তৃত ‘এমপ্লয়মেন্ট ইনজুরি স্কিমে’ রাজি হয়েছে। এই প্রক্রিয়া শুরু হচ্ছে তৈরি পোশাক খাতে। তা অন্য সেক্টরগুলোতে বিস্তৃত হওয়ার সম্ভাবনা আছে। এমন সব সিস্টেমের মধ্যে আছে, দুর্ঘটনা প্রতিরোধ, তাৎক্ষণিক ও দীর্ঘ মেয়াদে ক্ষতিপূরণ এবং কাজে ফেরার জন্য পুনর্বাসন।

বাংলাদেশ সরকার, নিয়োগকর্তা, শ্রমিক সংগঠন এবং উন্নয়ন অংশীদারদের সঙ্গে সব শিল্প প্রতিষ্ঠানে কর্মপরিবেশ উন্নত করতে ঘনিষ্ঠভাবে অব্যাহত কাজ করছে আইএলও। এক্ষেত্রে ২০১৩ সালের এপ্রিলে রানা প্লাজা ট্রাজেডির পর থেকে তৈরি পোশাক শিল্প থেকে শিক্ষাকে বিস্তৃত করা হচ্ছে।

শিল্প কারখানাতে সরকারের যথাযথ মনিটরিং করা হলে তাতে এটা নিশ্চিত করে যে, শিল্প এবং দুর্ঘটনার ঝুঁকি যথাযথভাবে অনুধাবন করা হচ্ছে, সমস্যার সমাধান করা হচ্ছে এবং প্রতিরোধ করা হচ্ছে। এটা বাংলাদেশে কর্মক্ষেত্রে নিরাপত্তার উন্নয়নে অত্যাবশ্যক।

আইএলও এবং বাংলাদেশে জাতিসংঘ সিস্টেম আশা করে যে, সারাদেশে কর্মক্ষেত্রে নিরাপত্তায় যে ঘাটতি আছে তা সমাধানে নতুন করে জোর উদ্যোগ গ্রহণ করবে সংশ্লিষ্ট সব পক্ষ। আমরা সবার জন্য একটি নিরাপদ বাংলাদেশ গড়ে তুলতে অব্যাহত সহযোগিতা দিতে চাই।